সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :
তিনি আরো বলেছেন, ‘ছোট দ্বীপগুলো জলবায়ু পরিবর্তনে অবদান রাখে না, তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যা ঘটে, তা এখানে বহুগুণ।’
ফোরামে একটি বক্তৃতায় তিনি সতর্ক করে জানান, কিন্তু অবশেষে ‘উড়ন্ত সমুদ্র’ আমাদের সকলের দিকে ধেয়ে আসছে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জলবায়ু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলটি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং অম্লীকরণ- এই তিন আঘাতের মুখোমুখি হয়েছে।
জোসেফ সিকুলু বিবিসিকে বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া ও আওটেরিয়ার নেতাদের এখানে এখানে আসা এবং নিজেরাই এসব ঘটনা প্রত্যক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু আমাদের জনগণেরও অভিযোজনতার সাক্ষী হওয়া প্রয়োজন।’
জাতিসংঘের ক্লাইমেট অ্যাকশন টিম ‘উষ্ণ বিশ্বে উপদ্রুত সমুদ্র’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, তিন হাজার বছরের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা নজিরবিহীন হারে বাড়ছে। প্রতিবেদন অনুসারে, গত ৩০ বছরে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা বেড়েছে ৯.৪ সেন্টিমিটার (৩.৭ ইঞ্চি), কিন্তু ক্রান্তীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এই সংখ্যা ১৫ সেন্টিমিটার।
গুতেরেস বিবিসিকে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব কমানোর প্রশ্নে আমরা সবজায়গায় বড় বড় প্রুতিশ্রুতি দেখতে পাচ্ছি। তবে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ আরেকটি বড় অবিচারের শিকার হয়েছে। সংকটে থাকা দেশগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তার যেসব আন্তর্জাতিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে প্রশান্ত অঞ্চলের দেশগুলোকে মাথায় রাখা হয়নি।’
গুতেরেস বলেন, উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা গেলেই গ্রিনল্যান্ড ও পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকার বরফ গলার বিপর্যয় ঠেকানো সম্ভব হবে। এর অর্থ, ২০১৯ সালের তুলনায় বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ ২০৩০ সালে ৪৩ শতাংশ এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে ৬০ শতাংশ কমানো দরকার। তবে গত বছর বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের হার বেড়েছে ১ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, ৮০ শতাংশ কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী দেশগুলোর জোট জি-২০ এর কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য বাধ্যবাধকতা আছে। ছোট, উন্নয়নশীল দ্বীপ রাষ্ট্রের জন্য আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে গুতেরেস বলেন, ‘অভিযোজনের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অর্থায়ন বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি রয়েছে। তবে বাস্তবতা হল, এসব দেশের অস্তিত্ব রক্ষায় যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তার তুলনায় প্রতিশ্রুত অর্থ অনেক কম।’
এ বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যানটনি অ্যালবানিজ বলেছেন, তার দেশ ২০৫০ সাল পর্যন্ত গ্যাস উত্তোলন ও ব্যবহার বাড়াবে। অস্ট্রেলিয়ার মত কার্বন নিঃসরণকারীদের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবের বার্তা কী?
এমন প্রশ্নের উত্তরে গুতেরেস বিবিসিকে বলেন, ‘বড় দূষণকারীদের একটি অপরিহার্য দায়িত্ব রয়েছে।’
এভাবে চলতে থাকলে ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার লক্ষ্য পূরণ হবে না। প্রাক-শিল্পায়ন সময়ের তুলনায় শতাব্দী শেষে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি যাতে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, সেই লক্ষ্য রেখেই চুক্তিটি হয়েছিল। বলা হয়েছিল, তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
সূত্র: কালের কণ্ঠ