সব প্রতিষ্ঠানে ‘ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার’ স্থাপনের বিষয়ে হাইকোর্টের রুল

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

দেশের সব কর্মক্ষেত্র, এয়ারপোর্ট, বাস স্টেশন, রেলওয়ে স্টেশনে, শপিং মলে ‘ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার’ ও ‘বেবি কেয়ার কর্নার’ স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়াও পাবলিক প্লেস ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনে নীতিমালা তৈরি করতে নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রবিবার (২৭ অক্টোবর) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব রুল জারি করেন।

চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রণালয়,স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়,সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদেরকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মো.আব্দুল হালিম। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট রাশিদুল হাসান ও জামিউল হক ফয়সাল।

এর আগে গত ২২ অক্টোবর নিরাপদ পরিবেশে ও স্বাচ্ছন্দ্যে মায়ের বুকের দুধ পান করাতে ৯ মাসের শিশু উমাইর বিন সাদিকের পক্ষে তার মা ইশরাত হাসান এই রিট দায়ের করেন।

রিটে কর্মক্ষেত্র, শপিং মল, এয়ারপোর্ট, বাস স্টেশন, রেলওয়ে স্টেশনে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের নির্দেশনা চাওয়া হয়। রিটে বলা হয়— এমন পরিবেশে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপন করতে হবে, যেখানে কোনও মা সন্তানকে বুকের দুধ পান করাতে কোনও অস্বস্তি বোধ করবেন না, বা যৌন হয়রানির শিকার হবের না।

রিটকারী ইশরাত হাসান বলেন, ‘অনেক কর্মস্থলে বা বাস, ট্রেন স্টেশনে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার না থাকায় মায়েদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। নিরাপদ পরিবেশের অভাবে ও যৌন হয়রানির ভয়ে মায়েরা শিশুদের বুকের দুধ পান করাতে পারেন না। অথচ একজন শিশুর মানসিক ও শারীরিক বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মায়ের বুকের দুধ। আমার মতো হাজার হাজার মা এই সমস্যার মুখোমুখি হন।’

রিটে এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়— সুন্দর, সুস্থ ও সবলভাবে শিশুকে বেড়ে তুলতে এবং নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতে সরকারি বেসকারি প্রতিটি কর্মস্থলে ডে কেয়ার সেন্টার ও মাতৃদুগ্ধ দান কক্ষ স্থাপন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এরপর ৯ বছর অতিবাহিত হলেও এক্ষেত্রে দৃশ্যমান কোনও উন্নতি লক্ষ্য করা যায়নি। বেশিরভাগ কর্মক্ষেত্রে কর্মজীবী মায়েদের জন্য নেই ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার।

‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় উল্লেখ— কর্মক্ষেত্রে শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়াতে যেন একজন কর্মজীবী মা সমর্থ হন, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিমা-ব্যাংক, শপিং মল, কল-কারখানা, পেশাজীবী সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন ও মানবাধিকার সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু নির্দেশনা অনুযায়ী, সরকারি হাসপাতালসহ অফিস, ব্যাংক-বিমা প্রতিষ্ঠান এবং শপিং মলে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপন করা হয়নি। ফলে এদিকে যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে মাতৃদুগ্ধ পান কর্মসূচি। অন্যদিকে শিশু স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে। ফলে শিশু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে।’