সবুজের সাজে সেজেছে বাগমারায় কৃষকের মাঠ

শামীম রেজা, বাগমারা প্রতিনিধি:
কবি’র কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে বলতে হচ্ছে ধনো ধান্যে পুষ্পভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা। ঠিক তেমনি চিত্র ফুঁটে উঠেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা জুড়ে। যে দিকে দু’চোখের দৃষ্টি পড়ে সে দিকে সোভা পাচ্ছে কৃষকের জমিতে থাকা বোরো ধান। মাঠ ভরে গেছে সবুজ সেই ধান ক্ষেতে। সবুজ সেই ধানের পাতায় সকালে চোখে পড়ে শিশির বিন্দু। সকালে সূর্যের আলো পড়লে দেখতে মুক্তার মতো চকচক করে শিশির বিন্দুগুলো।

 
গতবারের চেয়ে এবার কম জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে বলে জানা গেছে। বিগত কয়েক বছর ধরে ধানের বাজার মূল্য কম থাকায় মুখ থুবড়ে পড়েছে ধান চাষ। এর কারনে মৎস্য চাষে মননিবেশ করেছে বোরো চাষিরা।

 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় ১৭ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা  হলেও চাষ হয়েছে ১৭ হাজার ৯ শত ১০ হেক্টর জমিতে। এই উপজেলায় গতবার বোরো ধানের চাষ করা হয়েছিল ১৮ হাজার ৬ শত ১০ হেক্টর জমিতে। ধানের আবাদ কম হওয়ার পেছনে যে কারন তা হলো উপজেলা জুড়ে কৃষি জমিতে অধিক হারে পুকুর খনন। কৃষি জমিতে পুকুর খননের কারনেই কমেছে বোরো ধানের চাষ ধারনা কৃষকের।

 
আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে থাকায় ধানের কোন ক্ষতি হয়নি। যদি এ রকম আবহাওয়া থাকে তাহলে বোরো ধানের ফলন অনেক বৃদ্ধি পাবে। মাঝে মধ্যে যে ভাবে বিদ্যুতের লোডশিডিং হচ্ছে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে কৃষক। উপজেলার মাধাইমুড়ি গ্রামের কৃষক সামসুদ্দীন মন্ডল, মচমইল গ্রামের কৃষক আবু জাফর, রঘুপাড়া গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেনসহ অনেকে জানান এবার সঠিক সময়ে সার, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সকল ধানের বীজের সরবরাহ ঠিক থাকায় সঠিক সময়ে বোরো ধানের চাষ করেছে তারা।

 

এছাড়াও উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার বোরো ধান চাষের নানা রোগ বালাই সম্পর্কে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে চলেছেন। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় মহুর্তে বৃষ্টি হলে ধানের ফলন অনেক বেড়ে যাবে বলে কৃষকরা জানান। কৃষকরা আরো জানায় ধানের বাজার মূল্য যদি বেশি থাকে তাহলে এবার আর লোকসান গুনতে হবেনা।

 
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাজিবুর রহমান সিল্কসিটি নিউজকে জানান, এবার উপজেলায় বোরো ধানের চাষ তেমন কম হয়নি। গতবারের চেয়ে সামান্য পরিমান জমিতে ধানের আবাদ কম হয়েছে। এর পেছনে যে কারন তা হলো বোরো চাষে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। এতে করে ভূ-গর্ভস্ত পানির স্তর ক্রমেই নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে ধান পাকার সময় ধান ক্ষেতে পানির সমস্যা দেখা দেয়। তাই সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বোরো চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহ আর আউস ধান চাষে উৎসাহ প্রদান করতে হবে কৃষদের। কারন আউস মৌওসুমে ধানের জমিতে তেমন বেশি সেচ প্রদান করতে হয় না। আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে এবার বোরো ধানের অধিক ফলন হবে বলেও জানান তিনি।
স/শ