সন্তানের জন্য চাকরি ছেড়ে মানসিক কষ্টে আছেন?

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

সন্তানকে কার কাছে রেখে যাব? আমার মতো করে কেউ কি খেয়াল রাখবে?
অন্য কারো কাছে রেখে যেতে পারবো না। এদিকে চাকরি না করলে আমি ভালো থাকবো না। কী করবো? কত প্রশ্ন!তবে যে সিদ্ধান্তই নিন নিজেকে কখনো ছোট মনে করবেন না। সবকিছু বিবেচনা করে নিতে হবে।

যেটা সবার জন্যই ভালো হবে।

এম পাওয়ার দ্যা সেন্টার মুম্বাইয়ের প্রধান ডা স্বপ্না বাঙ্গর জানিয়েছেন, এই ধরনের সংকট বেশিরভাগ নারীর জীবনেই আসতে পারে। সমস্যা সামলাতে না পেরে মানসিক অশান্তিতে ভুগতে শুরু করেন তারা। কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে সে ব্যাপারে আলোকপাত করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, অনেক নারীই মা হওয়ার পর ঘর ও চাকরি দুদিক বজায় রেখে চলতে পারেন না। চারদিকে তাকালে এমন অনেক নারী আছেন যারা খুব খুশি মনে সংসার ও সন্তান পালন করেন। সংসারের হাজার কাজের মাঝেই তারা নিজস্বতা খুঁজে পান। এবং আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী নন বলে কোনো দুঃখবোধ তাদের নেই। তবে সবাই তো আর একরকম নন। একজনের জন্য যেটা ঠিক, সেটা অন্যজনের জন্য ঠিক নাও হতে পারে। কাজেই চাকরি ছাড়তে হয়েছে বলে যদি মানসিক কষ্টে ভোগেন তাতে অন্যায় কিছু নেই। সবার কাছে চাকরি শুধু টাকার সঙ্গে সম্পর্কিত একটা ব্যাপার নয়। তার সাথে আত্মসম্মান, পরিচিতি, স্বাধীনতা, স্বাচ্ছন্দ্য, সব জড়িত থাকে। মানুষের নিজস্বতা ও আত্মবিশ্বাস ধরে রাখার অন্যতম উপায় হতে পারে তার পেশা বা স্বপ্নপূরণের হাতিয়ার। তবে কর্মরত মহিলার পক্ষে সন্তানের জন্য সব ছেড়ে ঘরে বসে যাওয়া অত সহজ নয়। জোর করলে মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে, যা তার নিজের জন্য তো বটেই, সংসার ও সন্তানের পক্ষেও ভালো নয়।

** সন্তানের সঙ্গে কতটা সময় কাটাচ্ছেন তার থেকেও গুরুত্বপূর্ন হল কত ভালোভাবে সময় কাটাচ্ছেন। ভালোভাবে সময় কাটাতে না পারলে সব যত্ন করার পরও অনেকটা ফাঁক থেকে যায়। যে মা মন খারাপ করে রোবটের মত সন্তানের  খেয়াল রাখেন আর যে মা সব কিছু নিখুঁতভাবে খেয়াল রাখতে না পারলেও যতটুকু সময় তার সঙ্গে কাটান আনন্দের সঙ্গে কাটান সেই মা সন্তানকে বেশি উজ্জীবিত করতে পারেন। তাই ভালোভাবে সন্তান মানুষ করতে গেলে অন্যরা কী বলছে না শুনে প্রথমে নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন।

** প্রথমে ভেবে দেখুন, সন্তানের আপনাকে দরকার  কিন্তু যে পরিস্থিতিতে আপনি আছেন, সেখানে কি সন্তানের প্রাপ্য চাহিদা মেটাতে পারবেন? আপনি তো নিজেই খুশি নন, তাহলে অন্যকে কী করে খুশি রাখবেন?

** চাকরি করতে পারলেই কি আপনি ভালো থাকতে পারবেন? সেক্ষেত্রে পরিবারের অন্যদের মধ্যে যদি ক্ষোভ জাগে সেটা কীভাবে সামলাবেন? পুরো সময়ের জন্য চাকরি করতে গেলে বাচ্চাকে কে দেখাশোনা করবে? তার হাতে রেখে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন তো?

** সন্তান একটু বড় হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না কি আপাতত কোনো পার্ট টাইম কাজের সঙ্গে যুক্ত হবেন? ঘরে বসে করা যায় এমন কোনো কাজ করবেন?
সবদিক ভেবে সিদ্ধান্ত নিন। সন্তান ও পরিবারের ব্যাপারটা সামলানো গেলে পুরো সময়ের কাজ খুঁজতে শুরু করুন।

** চাকরি বা কেরিয়ার করার কথা ভাবছেন বলে অপরাধবোধে ভুগবেন না।   নিজের দাবী জানান ও এগিয়ে যান। এত সন্তানেওর ভালো হবে।

 

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ