প্রাইভেট কারের ধাক্কা পূর্ব পরিকল্পিত’

সড়ক দুর্ঘটনায় রাজশাহী জেলা কৃষকলীগের দপ্তর সম্পাদক নিহত, গুরুতর আহত সভাপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

সড়ক দুর্ঘটনায় রাজশাহী জেলা কৃষক লীগের দপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলাম নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় কৃষক লীগের জেলার সভাপতি অধ্যক্ষ তাজবুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার (২০ মে) দুপুরে নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা ফোরলেন সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

এদিকে পিছন থেকে প্রাইভেট কার ধাক্কা দিয়ে এমন দুর্ঘটনা ঘটনা এটিকে নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে মনে করছেন করছেন না গুরুতর আহত জেলা কৃষক লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মো. তাজবুল ইসলাম। তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘জেলার দপ্তর সম্পাদক নজরুলকে সঙ্গে নিয়ে আমি শনিবার দুপুরে সিটি নির্বাচনে লিটন ভাইয়ের প্রচারণা চালানোর উদ্দেশ্যে রিকশাযোগে কাশিয়াডাঙ্গা ঢালুর মোড়ের দিকে যাচ্ছিলাম। আমাদের বহনকারী রিকশাটি কাশিয়াডাঙ্গা ফোরলেন সড়কের বাম পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো।

আমাদের রিকশা অভারটেক করার মত যথেষ্ট স্পেস ডানপাশে ছিলো। কিন্তু পিছন থেকে খয়েরি কালামের একটি প্রাইভেট কার আমাদের রিকশাকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে রিকশাচালকসহ আমরা দুইজনই রিকশা থেকে পড়ে যাই। আমরা ওই প্রাইভেট কারের নিচে পড়েছিলাম নাকি অন্য কোনো যানবাহন আমাদের ওপর দিয়ে চলে গেছে সেটি বলতে পারবো না। কেননা, পড়ে দুর্ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে আমার জ্ঞান ছিল না। কিছুক্ষণ পরে দেখি, খয়েরি রঙ্গের প্রাইভেট কারে থাকা যাত্রীদের সাদা রঙ্গের একটি পাইভেট কার নিতে এসেছে। তারা ওই সাদা রঙ্গের প্রাইভেট কারে দ্রুত পালিয়ে চলে যায়। যেই প্রাইভেট কারের ধাক্কায় কৃষক লীগের জেলার দপ্তর সম্পাদক নিহত হলেন সেই প্রাইভেট কারে থাকা ড্রাইভার ও যাত্রীরা অন্য প্রাইভেট কারযোগে দ্রুত পালিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করলো। এতে আমার সন্দেহ হয়েছে।’

কৃষক লীগের এই সভাপতি আরো বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে, আমাদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যেই ওই প্রাইভেট কারটি আমাদের বহনকারী রিকশায় ধাক্কা দিয়ে অন্য প্রাইভেট কারযোগে পালিয়ে গেছে। এটি অবশ্যই পূর্ব পরিকল্পিত। বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে খতিয়ে দেখে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি জানান তিনি।

জানা গেছে, জেলা কৃষক লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ মো. তাজবুল ইসলাম রাজশাহী-০১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মনোনয়নপ্রত্যাশী। দীর্ঘদিন থেকে তানোর-গোদাগাড়ী এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করে আসছে। এত ঈর্ষান্বিত হয়ে তার বিপক্ষের লোকজন এমন ঘটনা ঘটাতে পারে বলে তিনিসহ রাজনৈতিক অনেক ব্যক্তিই মনে করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুর্ঘটনায় আহতের পর রিকশাচালকসহ জেলা কৃষকলীগের এই নেতাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেলার দপ্তর সম্পাদক শনিবার সন্ধ্যায় মারা যান। পরে রাতেই জেলার পুঠিয়ায় তার জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে। আর অধ্যক্ষ তাজবুল ইসলাম হাসপাতালের ৭ নং কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার অবস্থা বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন। এদিকে দুর্ঘটনায় আহত কৃষক লীগ সভাপতিতে দেখতে শনিবার রাতেই হাসপাতালে ছুটে যান রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এসময় তার চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন।

কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  অফিসার মুনিরুজ্জামান বলেন, ‘ঘাতক প্রাইভেট কারটি জব্দ করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর চালকসহ অন্যরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদেরকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আমরা বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখছি। তদন্ত করে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার চেষ্ট অব্যাহত রয়েছে।’