সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তরে যা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী

নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ পরিষদের অংশগ্রহণ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে একগুচ্ছ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী তার বাসভবন গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।  এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠের পর বিভিন্ন ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নে উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী।

‘বিমান যেন টরেন্টো-নিউইয়র্কে যেতে পারে’

বাংলাদেশ বিমানের এয়ারক্রাফট ব্যবহার করে সফর নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার আমি যে বিমানে গেছি, সেটি ড্রিমলাইনার; সবচেয়ে আধুনিক যাত্রীবাহী বিমান। বেশ অল্প টাকায় আমরা কিনতে পেরেছি। এটার নামও আমি দিয়েছি; অচিন পাখি। এই বিমানে যাওয়ার উদ্দেশ্য হলো- সরকারে আসার পর বহু চেষ্টার পর অনেকগুলো বিমান একসঙ্গে করেছি।

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য করোনার কারণে অনেক যায়গায় বিমানের যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। বিমানগুলোকে পড়ে/বসে থাকতে হয়। বসে থাকলেও মেইন্টেইনেন্স খরচ আছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, অন্যটাকে টাকা দিয়ে লাভ কি? নিজেদেরটাই নিয়ে যাই। সেই সঙ্গে সঙ্গে এটার বোয়িং আমেরিকান কোম্পানির, জেএফকেতে নামবে, এটাও আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়। রিফুয়েলিংয়ের জন্য ফিনল্যান্ডে অবতরণ করি।

তিনি আরও বলেন, জেএফকেতে আমাদের একটা স্লট ছিল অবতরণের। আপনারা জানেন, বিএনপির আমলে দুর্নীতি ও নানা অপকর্মের কারণে বিমান ধ্বংসপ্রাপ্ত ছিল। জরাজীর্ণ হয়ে গেছিল। আমি এসে যখন নতুন বিমান কিনলাম। আমাদের একটা প্রচেষ্টা ছিল, ওই অবতরণের স্লটটাকে ধরে রাখা। তাছাড়া আন্তর্জাতিক কতগুলো নিয়ম আছে, সেগুলো ফলো করে আমরা কতগুলো আইনও করেছি। বোস্টনে গতকাল একটা সভাও হয়েছে। টরেন্টো, নিউইয়র্কসহ আরও কয়েকটি যায়গায় যাতে যেতে পারে, আমরা সে ব্যবস্থা করছি। এই বিমানটা ঢাকা থেকে সরাসরি ১৪ ঘণ্টায় নিউইয়র্ক পৌঁছাতে পারে। এর পরিচালন ক্ষমতায় ১৭ ঘণ্টার উপরে।

সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে অনেক কথা বলে, বলতে পারে, সেটা তাদের মুখেই থাকবে। আমার চেষ্টা, আমার দেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরা। আন্তর্জাতিক মর্যাদায় যেনো দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান চলতে পারে, সে কাজটাই করছি।

টিউলিপের গাড়িভাংচুর ‘জঘন্য কাজ’

এক প্রশ্নের জবাবে ব্রিটিশ এমপি ও বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ হামলার বিষয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সেতো শুধু বঙ্গবন্ধুর নাতনি নয়, ব্রিটিশ এমপি। যেহেতু ঘটনা সেখানকার তারাই (ব্রিটিশ সরকার) দেখবে। এ ধরনের ঘটনা যারা ঘটায় তাদের ব্যপারে মানুষই বলুক, তারা কী ধরনের মানুষ! ইংল্যান্ডের মতো সভ্য দেশে এ রকম অসভ্য ঘটনা, এটা ব্যাপারে কী বলবো? ওখানে তো কিছু লোক আছে সারাক্ষণ বিরুদ্ধে লেগে থাকার জন্য। এগুলো দুঃখজনক। গাড়ি ভাংচুর অত্যন্ত জঘন্য কাজ। আমি কাউকে দোষারোপ করতে চাই না।

মেয়র জাহাঙ্গীরকে নিয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটূক্তির জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু এটা নিয়ে কথা ওঠেছে। ডিজিটাল যুগে কথা তো নানাভাবে কীভাবে কে প্রচার করেছে, কীভাবে কী হয়েছে? এটা জানার জন্য পার্টি থেকে তাকে শোকজ করা হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর পার্টি বসবে। পার্টি সিদ্ধান্ত নেবে।

‘রিফিউজি সবকিছুতেই যেনো একটি ব্যবসা’

লিখিত বক্তব্যের পর রোহিঙ্গা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে একটি গোষ্ঠীর অসন্তোষের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সব কিছুই যেন একটি ব্যবসা। কেউ কেউ মনে হয় সুবিধা পাচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থার জন্য এটা এক ধরনের ব্যবসা। এরা (রোহিঙ্গারা) না থাকলে তাদের চাকরি যাবে।

তিনি বলেন, আমরা আরও এক বিশাল রিফিউজি লালন-পালন করে আসছি। সেটা হলো- পাকিস্তানের রিফিউজি। তাদের নেয়নি, নেবেও না। আমার মনে হয়, রিফিউজি পালা যেনো অনেকের ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রিফিউজি না থাকলে মনে হয়, তাদের চাকরিই থাকবে না। এটা কোনো সংস্থার জন্য।

‘জেতার সম্ভাবনা বলেই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কাজে লিপ্ত’

নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, অনেকগুলো নির্বাচন হচ্ছে। এই করোনার মধ্যেও ভোটার উপস্থিতিতে সমস্যা হয়নি। গত কয়েকদিন আগেও নির্বাচন হয়ে গেলো, যেখানে ভোটারদের স্বতঃফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, অনেক চেষ্টা করা হয়েছে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে। বিএনপিসহ যেসব রাজনৈতিক দল নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তাদের জন্ম কীভাবে? এ দলটি কি নির্বাচিত প্রতিনিধি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত? বা এমন কোনো নেতৃত্ব, যে নেতৃত্ব বাংলাদেশের জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে? তাও তো না।

তিনি বলেন, সুবিধাবাদী, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাতেগড়া সংগঠন। ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে তো তাদের কোনো অভিযোগ নেই। তখন তারা জিততে পারেনি কোনো? তখন প্রশ্ন তোলেনি কেনো? এরপর যত নির্বাচন হয়েছে, মানুষ তো ভোট দিয়েছে। এজেন্সির সহযোগিতায় সরকারে এসেছে, এখন সেটা পায় না বলে হয়ত তাদের ক্ষোভ- মন্তব্য প্রধানমন্ত্রীর।

তিনি আরও বলেন, একটা দল কীভাবে জিতবে? একজন এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী (চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া)। আরেক নেতা সাজাপ্রাপ্ত আসামি (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান)। জনগণ কীসের আশায়, কোন ভরসায় তাদের ভোট দেবে? তাদের তো জেতার সম্ভাবনা নাই। সেজন্য নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কাজে লিপ্ত।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে বিএনপির দুই মেয়াদের শাসনামলের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এরপরও কারা, কেন, কোন সুখে বিএনপিকে ভোট দেবে? কী কারণে অন্যদের ভোট দেবে?’ নির্বাচনে জেতার আত্মবিশ্বাসও বিএনপির মধ্যে নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। মোবাইল দিয়েছি। ইন্টারনেট দিয়েছি। আমরা এগিয়ে যাচ্ছিলাম। করোনার কারণে কিছুটা থমকে গেছি। তবে থেমে যাইনি। জরুরি সবকিছু যতটা সম্ভব চালু রাখার ব্যবস্থা করেছি। এরপরও কেন অন্যদের ভোট দেবে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সামরিক বাহিনীর প্রায় দুই হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। এগুলোর তদন্ত হওয়া উচিত। শুধু তাই নয়, এজন্য প্রয়োজন জনমত তৈরির।

তিনি বলেন, আপনারা জাতির পিতার শাসনামল, আমার শাসনামল এবং বিএনপিসহ অন্যদের শাসনামলের তুলনা করেন। তাহলেই তো প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন।

‘বেশি কাজ করি বলেই গালি দেয়’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত সুবিধা পেয়ে গালিটা আমর ওপর দিয়ে যায়। আমরা বাঙালির চরিত্র এমনই, ভালো করলে মুখটা ঘুরিয়ে বসে থাকে। আমরা পারলাম কেনো তাই তো? বেশি কাজ করি বলে গালিটা আমার ওপর আসে, আওয়ামী লীগের ওপর আসে। এটাই তো বাঙালির চরিত্র।

‘দেশে এখন স্ট্রবেরি-টিউলিপসহ সবই হয়’

দেশে কৃষিখাতে গবেষণা চলছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্যের নিরাপত্তায় গবেষণা দরকার। গবেষণা ছাড়া পণ্য উৎপাদন করা যায় না। আমি দেশে এসে দেখলাম গবেষণার জন্য ফান্ড নেই, টাকা নেই। আমরা প্রথমেই ধান উৎপাদন শুরু করলাম। সেই সঙ্গে সবজিও উৎপাদন করলাম। গবেষণা করেই কিন্তু এসব করা হচ্ছে।

দেশে এখন স্ট্রবেরি-টিউলিপ হয়, এসব গবেষণার ফল বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আজকে আপনি সব কিছুই পাচ্ছেন। ছোট মাছ থেকে সব কিছুই। এগুলো গবেষণার ফল। ডিজিটাল ডিভাইস ও কৃষিপণ্য রপ্তানি করা হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা চেম্বার করছি। যেখানে কোন টেম্পারেচারে ফসল থাকবে তা নির্ধারিত থাকবে। যেমন টমেটোর জন্য একটা, ধানের জন্য একটা এ রকম।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিশেষ করে কৃষিজাত পণ্য রপ্তানির দিকে নজর দিচ্ছি। তার জন্য প্রথমেই দরকার ফসল ক্ষেত থেকে তোলার পর তা সংরক্ষণ এবং কার্গোতে তুলে দেওয়া। তার জন্য কার্গো ভিলেজ করতে হবে। যেখানে বিভিন্ন চেম্বার থাকবে। কোন ফসল-কোন তরকারিটা হবে, কোনটা কত ডিগ্রি।

তাপমাত্রায় ভালো থাকে—এগুলোর কিন্তু আন্তর্জাতিক গবেষণার ফল আছে। আর আমি নিজে নেদারল্যান্ডসে দেখেছি, আমাদের দেশেও এটা করবো। বাংলাদেশের মানুষ আন্তরিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার আমাদের কৃষক সময় মতো ধান কাটতে পারেনি। সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রলীগ নেমে গেল। এমনকি মেয়রাও। তারা ধান কেটে দিল।

‘সার্চ কমিটির মাধ্যমেই নির্বাচন কমিশন’

নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতি একটা সার্চ কমিটি গঠন করবেন এবং তার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। এভাবেই হয়েছে এবং হবে।

‘সাংবাদিকদের দৃষ্টি ই-কমার্সেও থাকা দরকার’

দেশে কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক প্রতারণার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাংবাদিকদের শ্যেন দৃষ্টি থাকে। যখন এসব ‘হায় হায় কোম্পানি’ তৈরি হয়, তখন আপনাদের সেই দৃষ্টি থাকলে এবং আপনারা (গণমাধ্যম) জনগণকে একটু সচেতন করলে মানুষ আর বিপদে পড়ে না।

সরকারপ্রধান বলেন, মানুষের দুঃসময়ে কিছু প্রতারক তাদের টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে। যখন এসব ‘হায় হায় কোম্পানি’ তৈরি হয়, আপনারা (গণমাধ্যম) একটু সচেতন করলে মানুষ আর বিপদে পড়ে না। আমরা চেষ্টা করবো তাদের (প্রতারিতদের) টাকা হাতে পৌঁছে দিতে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

‘সাংবাদিকতায়ও গবেষণার আহ্বান’

মানুষের কল্যাণে সাংবাদিকতাকে কাজে লাগাতে এ পেশার কর্মীদের গবেষণার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে এই গবেষণার জন্য অর্থ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারাও গবেষণা করেন। কীভাবে সাংবাদিকতাটা মানুষের কল্যাণে কাজে লাগানো যায়, মানুষ আরও বেশি উপকৃত হতে পারে, তার গবেষণা করুন। এসময় প্রধানমন্ত্রী তার তহবিল থেকে এই গবেষণার জন্য অর্থ দেওয়া হবে বলে জানান।

সাংবাদিকদের টাকা কল্যাণ ট্রাস্টে চলে গেছে, ট্রাস্ট যার প্রয়োজন তাকে দেবে বলেও এক প্রশ্নের জবাবে জানান প্রধানমন্ত্রী।

‘যেকোনো অবস্থা মোকাবিলা করার সক্ষমতা আছে’

আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা দখলের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তালেবানকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। যে কোনো ধরনের ঘটনা মোকাবিলার সামর্থ্য বাংলাদেশের রয়েছে। ভয় পেলে ভয়, না পেলে কিছু নয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আমি আফগানিস্তান-প্যালেস্টাইন নিয়ে কথা বলেছি। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ সমাধান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশ থেকে সেখানে (আফগানিস্তান) গিয়ে ট্রেনিং নিয়ে আসে অনেকে। আমরা এরকম অনেক ঘটনা সঙ্গে সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে এনেছি। যেমন- হলি আর্টিসানের ঘটনা।

জঙ্গি-সন্ত্রাসের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা যে দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে না, এটা যে দেশের জন্য ক্ষতিকর-এ বিষয় মানুষকে বোঝাতে হবে। আমরা শান্তি চাই। মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে সাংবাদিকদের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

‘ভাঙা ঘর দেখলেন, কে ভাঙল দেখলেন না?’

মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়হীনদের জন্য সরকার যে ঘর উপহার দিয়েছে, সে সবের কিছু ধসে পড়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পে নয়টি জায়গায় দুর্নীতি পেয়েছি। এতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। তবে দেড় লাখ ঘর দেওয়া হলো। এগুলোর সবগুলোই কি ভেঙে পড়েছে নাকি কেউ ভেঙেছে?

তিনি বলেন, আপনারা ভাঙা ঘর দেখলেন, ভাঙল কীভাবে, দেখেননি? আমি কি সেই উত্তর পাবো কোনো দিন? যারা দারিদ্র্য দেখিয়ে পয়সা এনে খায়, এই ঘর দেওয়ায় তাদের আঁতে ঘা লেগেছে। আওয়ামী লীগ এত ঘর দিয়েছে, এই অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে হবে!

সরকারপ্রধান বলেন, দেড় লাখ ঘর (উপহার) দেওয়া হলো। এগুলোর সবগুলোই কি ভেঙে পড়েছে নাকি কেউ ভেঙেছে। আমরা নয়টি জায়গায় দুর্নীতি পেয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছি। কিন্তু বাকিগুলোতে কোনো দুর্নীতি ছিল না।

প্রোজেক্টরে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু ঘরের ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, এগুলো হাতুড়ি-শাবল দিয়ে ভেঙেছে। আপনারা বিষয়টি একটু ভালো করে দেখেন, খোঁজ নেন। আপনারা এটা খুঁজে বের করলেন না, কারা এটা ভাঙলো। করোনাকালে ঘরগুলো তৈরির ফলে এতো মানুষের কাজের সুযোগ হলো, সেটাও দেখলেন না। আমি কি জানতে পারি কেন আপনারা এটা দেখেননি?

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এক সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘৩০০টা ঘর কিছু মানুষ নিজে থেকে গিয়ে হাতুড়ি-শাবল দিয়ে ভেঙে তারপরে মিডিয়ায় সেগুলোর ছবি তুলে ফেলছে। যারা ভেঙেছে, তদন্তে তাদের সবার নাম বের করা হয়েছে।’

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ