সংগঠনের স্বাধীনতা, শ্রম অধিকারে এখনো ঘাটতি

বাংলাদেশে শ্রমিকদের সংগঠন করার স্বাধীনতা ও শ্রম অধিকার আইনে এখনো ঘাটতি দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল মঙ্গলবার রাতে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) দপ্তর প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে ইউএসটিআরের পর্যবেক্ষণ স্থান পেয়েছে। ওই প্রতিবেদনে চলতি ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বাণিজ্য নীতির বিভিন্ন এজেন্ডাও তুলে ধরা হয়েছে।

ইউএসটিআরের বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং শ্রমিকদের অধিকারের ঘাটতি পর্যালোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র ২০১৩ সালে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা বাতিল করে।

২০২০ সালের মার্চে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সহযোগিতা ও সহজীকরণ চুক্তির (টিকফা) আওতায় কাউন্সিলের বৈঠক এবং এ খাতে বেশ কিছু সম্পৃক্ততার পরও সংগঠনের স্বাধীনতা এবং শ্রমিক অধিকার আইনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। ’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের আগস্টে নতুন শিল্প নেতৃত্বাধীন উদ্যোগের সফল আলোচনাসহ বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো শ্রমিকদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতি করেছে। তবে প্রচেষ্টাগুলো বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের বাধার শিকার হচ্ছে।

গত বছর শ্রম খাত নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইলেকট্রনিক পণ্যের বাণিজ্যে প্রযুক্তিগত বাধা, ডিজিটাল বাণিজ্যকে প্রভাবিত করে এমন নীতিগত উন্নয়ন, ডিজিটাল কন্টেন্ট, ক্লাউড পরিষেবার বিধান, কৃষি ও অকৃষি খাতের জন্য বাজারে প্রবেশাধিকার সুবিধাসহ মেধাসত্ব (আইপি) সুরক্ষা এবং প্রয়োগসহ গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র পুরোপুরি সম্পৃক্ত ছিল।

শ্রমিকদের অধিকারের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নেওয়ার বিষয়টি চলতি বছর বাইডেন প্রশাসনের বাণিজ্যনীতির অগ্রাধিকারের তালিকায় শীর্ষে আছে। এ ছাড়া কার্বন নিঃসরণ কমানো ত্বরান্বিত করা এবং টেকসই পরিবেশগত অনুশীলনের প্রচার, যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিকে সহায়তা করা, সরবরাহ শৃঙ্খলা, স্থিতিস্থাপকতা জোরদার, কভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলা, যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য সম্পর্ককে আবারো নতুন করে সাজানো, মূল বাণিজ্যিক অংশীদার এবং বহুপক্ষীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, আস্থা সৃষ্টি, অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই বাণিজ্য নীতি এবং ন্যায্যতার সুবিধার্থে অংশীদারদের সঙ্গে বড় পরিসরে সম্পৃক্ততার কথাও বাইডেনের বাণিজ্যনীতির অগ্রাধিকারে স্থান পেয়েছে।

চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্ক নতুন করে সাজানো প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সারা বিশ্বে প্রভাব ফলে। বাইডেন প্রশাসন স্বীকার করে, এই সম্পর্ক জটিল এবং প্রতিযোগিতামূলক। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন অংশীদার এবং প্রতিযোগী উভয়ই হতে পারে। তবে যেকোনো প্রতিযোগিতা অবশ্যই ন্যায্য হতে হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন অযথা কিছু পণ্যের উত্পাদনকে কেন্দ্রীভূত করার মাধ্যমে সরবরাহ ব্যবস্থার স্থিতিস্থাপকতাকে ক্ষুণ্ন করে। এটি দীর্ঘমেয়াদে ভোক্তাদের ক্ষতি করে। ভোক্তারা ন্যায্য প্রতিযোগিতার উদ্ভাবন এবং পছন্দ থেকে বঞ্চিত হয়।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ