শনিবার , ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ২৮শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

সংক্রমণ বাড়লে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের মানসিক প্রস্তুতিও রাখতে হবে

Paris
সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১ ৭:১৬ অপরাহ্ণ

 

দেশে করোনার প্রকোপ কমে এসেছে। বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৪৮ জন। আর চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনেই কেবল আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই হাজার ৮৯৯ জন। দেশে এবারে ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। আর  এ অবস্থায় আগামীকাল ( ১২ সেপ্টেম্বর) দীর্ঘ ৫৪৩ দিন পর দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলছে।

করোনার ও ডেঙ্গুর প্রকোপের এ সময়ে শিশুদের স্বাস্থ্যবিধি মানানো, সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা নিয়ে কথা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহর সঙ্গে।

‘করোনার প্রকোপ কমছে এটা স্বস্তির বিষয়, কিন্তু বাড়ছে ডেঙ্গু, এটা শঙ্কার’— জানিয়ে তিনি বলেন, করোনার সংক্রমণ কমতির দিকে। কিন্তু ডেঙ্গু বেড়েই চলছে। আর করোনা ছিল অদৃশ্য শত্রু কিন্তু ডেঙ্গু দৃশ্যমান। দুটোতেই প্রতিকার-প্রতিরোধ জরুরি। তবে ডেঙ্গু বেড়ে যাচ্ছে ভয়ঙ্করভাবে। ডেঙ্গু চার রকমের ভাইরাস, ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ এবং ডেন-৪। এবারের ডেঙ্গু হচ্ছে ডেন-৩ দিয়ে, এটা অনেক জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে এবং খুবই সিরিয়াস এটা।

বাচ্চাদেরই এটা আক্রান্ত করে বেশি জানিয়ে অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, এবারের ডেঙ্গুতে যে লক্ষ্মণ উপসর্গ রয়েছে-সেগুলো দেখা যাচ্ছে না প্রায়ই। যে কারণে হঠাৎ করেই রোগীর অবস্থা খারাপ হচ্ছে। যেহেতু এবারের স্ট্রেইন অন্যরকম এবং সিরিয়াস তাই আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।

তিনি বলেন, অনেকেই একইসঙ্গে করোনা ও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন, সেজন্য বিশেষ করে শিশুদের বেলায় জ্বর, কাশি বা গলাব্যথা হলে যেন অবহেলা না করা হয়।  শুরু থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

তার মতে, এবারে ডেঙ্গু বুঝতে না পারার কারণ বা চিকিৎসকের কাছে যেতে অনীহার কারণে অথবা শিশুরা বলতে না পারার কারণে হঠাৎ করেই অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তখন দেখা যায়, ডেঙ্গু হেমোরেজিক হয়ে ব্লিডিং হচ্ছে, কেউ আবার খুব দ্রুত শকে চলে যাচ্ছে। তাই সবার কাছে অনুরোধ, কারও জ্বর হলে করোনা এবং ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে হবে।  আর শিশুসহ সবারই ডাব, ওরস্যালাইন, গ্লুকোজসহ তরল পানীয় পান করতে হবে।

খুব ছোট শিশুরা কিছু বোঝাতে পারে না, তাদের দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বলে অধ্যাপক আব্দুল্লাহ বলেন, একটা চঞ্চল শিশু যদি হঠাৎ করেই সবকিছু বন্ধ করে দেয়, যদি নেতিয়ে পড়ে, সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে—এটা খুবই জরুরি।

সিটি করপোরেশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, কেবল ডেঙ্গু এলেই মশা মারার তোড়জোড়-সারা বছর খবর নাই, এটা করা যাবে না। বছরব্যাপী মশক নিধনের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। আর করোনা থেকে বাঁচার রাস্তা দুটো। মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। আর সবাইকে টিকার আওতায় আনতে হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার উদ্যোগ ঠিকই আছে মন্তব্য করে অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন,  বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এগুলো আগে খুললে ভালো ছিল। অবস্থার উন্নতি হলে পর্যায়ক্রমে সাধারণ কলেজ, হাই স্কুল, প্রাইমারির খুলে দেওয়া যেত। কারণ, বড়রা যতটা বুঝবে, ছোটরা ততটা বুঝবে না। তবে যেহেতু সরকার সব খুলেই দিল, এখন শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধির ওপর নজর দিতে হবে। বিশেষ করে অভিভাবকদের এক্ষেত্রে দায়িত্ব অনেক। আর স্কুল কর্তৃপক্ষ দেখবে, তারা মাস্ক পড়লো কিনা, হাত ধোয়ার জন্য স্কুলের চারপাশে ব্যবস্থা করতে হবে , চেষ্টা করতে হবে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য।

অধ্যাপক আব্দুল্লাহ বলেন, এখানে স্কুল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। ছোটদের স্বাস্থ্যবিধি মানানোর বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে খেয়াল রাখতে হবে, সচেতন হতে হবে এবং কঠোর হতে হবে।  সেইসঙ্গে স্কুলে জ্বর মাপার জন্য ব্যবস্থা রাখতে হবে, আইসোলেশন কক্ষ রাখতে হবে। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর যদি সংক্রমণের হার বেড়ে যায়, তাহলে স্কুল-কলেজ সব বন্ধ করে দিতে হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে মন্তব্য করে অধ্যাপক আব্দুল্লাহ বলেন, কেউ গ্যারান্টি দিতে পারে না। অনেক দেশেই স্কুল খুলেছে, কিন্তু পরে তারা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে-আমাদেরও সে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।

সর্বশেষ - জাতীয়