শোয়েবের চেয়েও দ্রুতগতির বল করতেন পাকিস্তানের এই পেসার!

সব ধরনের ক্রিকেট মিলিয়ে স্বীকৃত সবচেয়ে দ্রুত গতির বোলারের নাম শোয়েব আখতার। যিনি ২০০৩ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিক নাইটকে ঘণ্টায় ১৬১.৩ কিলোমিটার গতিতে (১০০.২ মাইল) বল করেছিলেন। তবে শোয়েবের দেশ পাকিস্তানেই আরেকজন ক্রিকেটার আছেন, যিনি নিজেকে সবচেয়ে দ্রুতগতির বলে দাবি করেছেন। সেই ফারুখ হামিদকে নাকি স্যার ডন ব্র্যাডম্যানও বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির বোলার হিসেবে মনে করতেন। সেইসঙ্গে শুনিয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেটের নোংরা রাজনীতির গল্প।

পাকিস্তানের হয়ে ক্যারিয়ার লম্বা হয়নি লাহোরে জন্ম নেওয়া ডানহাতি পেসার ফারুখের। ৪৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেললেও দেশের হয়ে খেলেছেন মাত্র ১ টেস্ট। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘ডন’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ৭৫ বছর বয়সী সাবেক এই পেসার বলেছেন, ‘অনেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব- স্যার ডন ব্র্যাডম্যান থেকে আমাদের ইমতিয়াজ আহমেদ, জহির আব্বাসসহ আরও অনেকেই মনে করতেন আমি সবচেয়ে দ্রুতগতির বোলার, এমনকি ওয়েস্ট ইন্ডিজের চার্লি গ্রিফিথের চেয়েও দ্রুততম।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক বড় বড় ক্রিকেটারই আমার বাউন্সারে ভয় পেত। তবে সাবেক টেস্ট ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ ইলিয়াস আমার বাউন্সার ভালো কৌশল নিয়ে খেলেছে। সে গ্রিফিথের বাউন্সারেও ভালো হুক করত। গ্রিফিথ ১৯৬৩ সালে কমনওয়েলথ দলের হয়ে পাকিস্তান সফরে এসেছিল। সে সফরেই রোহান কানহাইয়ের মতো কিংবদন্তি আমার বাউন্সারে ভূপাতিত হয়েছিল। ধারাভাষ্যকাররা বলেছিলেন আমি গ্রিফিথের চেয়েও জোরে বল করি। অবশ্যই ঘণ্টায় ১১০-১১৫ মাইল গতিতে বল করছিলাম বলে মনে করি।’

ফারুখ তার ক্যারিয়ারের একমাত্র টেস্টটি খেলেছিলেন ১৯৬৪ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে। মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত সেই টেস্টে তিনি অভিষিক্ত ইয়ান চ্যাপেলের উইকেট পেয়েছিলেন। সেবারই তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল ব্যাটিং কিংবদন্তি স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের। সেই স্মৃতি স্মরণ করে ফারুখ বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া সফরে ব্র্যাডম্যানের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর ফাস্ট বোলার হিসেবে তিনি আমার প্রশংসা করেছিলেন। অ্যাডিলেডে সেঞ্চুরির জন্য ইলিয়াসেরও প্রশংসা করেছিলেন।’

এখন প্রশ্ন এসে যায় যে, এমন দারুন একজন বোলারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার কেন লম্বা হলো না? জবাবে ফারুখ বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়েলিংটনে এক ম্যাচে ১৬ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলাম। মাত্র ১০ ওভারে ৫৩ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল তারা। সে সিরিজে বাকি দুই ম্যাচেও আমাকে দলে নেওয়া হয়নি। ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান ঈগলেটসের হয়ে ইংল্যান্ড সফরে ৩ ওভারে ৫ উইকেট নেই। ওই ম্যাচে অধিনায়ক ওয়াজির মোহাম্মদ আমাকে আর বল করতে দেননি! এসব কারণে আমি ক্রিকেটের ওপর থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলি এবং ২৫ বছর বয়সে ক্রিকেট ছাড়ি। এখনও সেই একই রাজনীতি পাকিস্তান ক্রিকেটের ক্ষতি করে চলছে।’

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ