শেয়ারবাজারে বিনা শর্তে কালো টাকা বিনিয়োগের দাবি

শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আগামী বাজেটে এখাতে বিনা শর্তে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ)। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রীর কাছে দেয়া বাজেট প্রস্তাবে এ দাবি করা হয়।

একই সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে আরও ৫টি দাবি করেছে সংগঠনটি।

করোনার কারণে সৃষ্টি হওয়া দুর্যোগ মোকাবেলায় মোট ৬ ধরনের প্রণোদনা দিয়েছে ডিবিএ। এরমধ্যে রয়েছে- আগামী বাজেটে পুঁজিবাজারে বিনা শর্তে অপ্রদর্শিত অর্থ (কালো টাকা) বিনিয়োগের সুযোগ, মার্জিন ঋণধারী (শেয়ার কেনায় ঋণ) বিনিয়োগকারীদের ৩ শতাংশ সুদে ঋণ সুবিধা এবং মার্জিন ঋণের সুদ এক বছরের জন্য স্থগিত করা, ব্রোকারদের এক বছরের অফিস ব্যয় মেটানোর জন্য সহজ শর্তে তহবিলের যোগান দেয়া।

অর্থমন্ত্রীকে দেয়া ডিবিএর চিঠিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে মন্দার কারণে পুঁজিবাজারের মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। ব্রোকারেজ হাউজসহ পুঁজিবাজারের বিভিন্ন অংশীজনরা ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছে না। এছাড়া করোনার কারণে দেশের অন্যান্য সব ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি পুঁজিবাজারেও এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এছাড়া চিঠিতে করোনাভাইরাসের কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা অব্যাহত রাখতে আর্থিক সহায়তার দাবি জানানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ব্রোকারদের অফিস পরিচালন ব্যয়ভার বিশেষ করে অফিস ভাড়া, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি মিটিয়ে সব কার্যক্রম সচল রাখতে আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। ডিবিএ শেয়ার কেনা-বেচার ওপর সরকারকে প্রদেয় আগাম করের হার দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ১৫ শতাংশ নির্ধারণেরও প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মানে বর্তমানে কোনো ব্রোকারেজ হাউজ ১ লাখ টাকা লেনদেন করলে তাকে সরকার ৫০ টাকা আগাম কর দিতে হয়। আগামী বাজেটে তা ১৫ টাকা করতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মার্জিন ঋণধারী বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়াতে তিন বছর মেয়াদে তিন শতাংশ সুদে ঋণ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, এই ঋণ পেলে বিনিয়োগকারীদের পুনরায় লেনদেন ফিরিয়ে এনে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তথা ফোর্স সেল বাধ্যতামূলক (শেয়ার বিক্রি) থেকে বিনিয়োগকারীকে সুরক্ষা দেয়া সম্ভব হবে। মার্জিন ঋণের বিপরীতে আরোপিত সুদ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হলে বিনিয়োগকারী তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সুযোগ পাবে এবং লেনদেনে অংশ নেয়ার মাধ্যমে পুঁজিবাজারকে সক্রিয় করে তুলবে।

এছাড়া চিঠিতে পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ সংক্রান্ত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত আয়ের অর্থ ১:১ ভিত্তিতে বন্ড মার্কেট ও সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করতে হবে। বন্ডে বিনিয়োগকৃত অর্থ তিন বছরের জন্য বন্ধক থাকবে এবং ওই বন্ড এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে লেনদেনযোগ্য হতে হবে।

এছাড়া প্রস্তাবে ব্রোকার কর্তৃক প্রদেয় সিডিবিএল ফি ও চার্জ, বিনিয়োগকারীদের বিও ফি ইত্যাদি থেকে পূর্ণ অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।