রাজশাহীতে শেষ সময়ে আতর টুপির দোকানে ক্রেতাদের ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঈদের আনন্দকে বাড়িয়ে তুলতে ইতোমধ্যেই প্রায় নতুন পোশাক কেনা শেষ। এখন সবাই ভিড় জমাচ্ছেন আতর, টুপি আর জায়নামাজের দোকানে। আতর, টুপি আর জায়নামাজের পাশাপাশি সুরমা এবং তসবিহও কিনছেন অনেকে। সব বয়সের ক্রেতার চাহিদাকে মাথায় রেখে নিজেদের সম্ভার সাজিয়েছেন দোকানিরা। বড় বিপণি বিতান থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানে দোকানে এখন আতর-টুপি কেনার ভিড়। নগরীর সাহেব বাজার, জিরোপয়েন্ট, নিউমার্কেট এর বিভিন্ন দোকনে পাওয়া যাচ্ছে ঈদের নামাজে ব্যবহৃত এসব উপকরণ।

 

রোববার নগরীর সাহেব বাজার এলাকার বিভিন্ন বিপণিবিতান আর ফুটপাত ঘুরে দেখা যায়, ঈদের নামাজের এই অনুসঙ্গগুরো কিনতে ভীড় করছেন ক্রেতারা। আর্কষণীয় নকশা আর নানা কারুকার্যে সুসজ্জিত টুপির প্রতি ক্রেতাদের আর্কষণ বেশি। দেশী পণ্যের পাশাপাশি চাহিদা বাড়ছে বিদেশী পণ্যেরও। বিশেষ করে বিদেশী আতরের প্রতি চাহিদা দেখা গেছে ক্রেতাদের।

 

দোকানিরা জানালেন, নকশা ও কারুকার্যের মান ভালো হওয়ায় এবার দেশি টুপির চেয়ে বিদেশি টুপি বেশি কিনছেন ক্রেতারা। সিকদার জরি হাউজ ও আতর হাউজের মালিক রকি সিকদার জানালেন, দেশি গোল টুপি ৫০ থেকে ৩৫০টাকাসহ বিভিন্ন মূল্যের টুপি বিক্রি হচ্ছে। বিদেশী গুলোর মধ্যে জর্ডানী টুপি ১৫০ টাকা, পাকিস্থানী টুপি ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা, নেপালী টুপি ২৫০ টাকা এবং গুজরাঠী টুপি পাওয়া যাচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে।

 

সাধারণত ঈদেই আতরের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। ঈদের দিন মন মাতানো ঘ্রান আর সুবাস ব্যবহার করতে আতরের বিকল্প নেই। তাই শুধু ঈদ নয় নিত্যদিনেও ব্যবহার করা জন্য আতর কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। ঈদকে সামনে রেখে সৌদি আরব, ফ্রান্স,দুবাই,পাকিস্তান জার্মানী এবং ভারত থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আতর এসেছে এবারের ঈদ বাজারে। বিদেশি আতরের পাশাপাশি দেশি আতরের চাহিদাও রয়েছে বেশ।

নগরীর জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন ন্যাশনাল ব্যাংক মার্কেটের রফিক আতর হাউজের মালিক রফিকুল্লাহ জানান, এবারে দেশি আতরের মধ্যে রয়েছে মদিনা এবং তিব্বত চন্দন, ফেরদৌস, হাবিব রাজ দরবার,শাহী দরবার পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকা থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া দুবাই এবং সৌদি আতর সিফাত, সাফিনা, লামহা, রওজ, ব্লুমুন, মুকাম্মাল, মারওয়া, জমজম, মুকাদ্দাস এবং আরফে জোহরা পাওয়া যাচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকায়।

 

ঈদের নামাজ পড়তে অনেকেই সঙ্গে করে নিয়ে যান জায়নামাজ। আর তাই ঈদকে সামনে রেখে জায়নামাজের বিক্রিও বৃদ্ধি পেয়েছে। এবারের ঈদে সুতি জায়নামাজের চাহিদা বেশি বলে জানা গেছে। এর পাশাপাশি ভেলভেট, সুতি, কার্পেটসহ বিভিন্ন কাপড়ের জায়নামাজ পাওয়া যাচ্ছে। দেশি এসব জায়নামাজ পাওয়া যাচ্ছে ১০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে। এছাড়া সৌদি আরব এবং চীন থেকে আমদানিকৃত জায়নামাজ পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে।

 

এসবের পাশাপাশি তসবিহও বেশ বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন অনেক দোকানি। এবারের ঈদ বাজারে বিভিন্ন দামি পাথরের তসবির চাহিদা বেশি। এর পাশাপাশি রয়েছে প্লাস্টিকের দানা ও সাধারণ পাথরের তসবিহ।এছাড়া চাইনা তসবিহ, ডিজিটাল তসবিহ এবং পাথরে খোদায় করা এসব তসবিহ পাওয়া যাচ্ছে ২০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে।

 


ঈদ বাজরের আরেক আকর্ষণ হলো পাঞ্জাবি। ছেলেদের শার্ট প্যান্ট না কিনলেও পাঞ্জাবি বাদ পড়েনা কারোও। আরডি এ মার্কেটের নূর গার্মেন্টেস এ্যান্ড টেইলার্সের মালিক আব্দুল জব্বার বলেন, আমারা ক্রেতাদের চাহিদানুযায়ী পাঞ্জাবী সরবরাহ করি। আমাদের কাছে ইন্ডিয়ান সুতি ও কাতান কাপড়ের পাঞ্জাবিগুলো বেশি। এগুলো ৪৫০ টাকা থেকে ১০০০০ টাকারে মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

 

তিনি আরো জানান, আমরা ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবি তৈরির অর্ডার নিয়ে থাকি। আর এইসবই তৈরি হয় আমাদের নিজস্ব টেইলার্সে। এবারে ধুপিয়ান কাপড়ের চাহিদাটা একটু কম। কাতান ও সুতি কাপড়ের পাঞ্জাবি বেশি বিক্রি হচ্ছে।

 

ক্রেতা আনোয়ার আলী বলেন, ঈদের দিনে জায়নামাজ,আতর,টুপি, সুরমা এগুলো অবিচ্ছেদ্য উপকরণ। জায়নামাজ তো বাসায় আছে এখন বাচ্চার জন্য টুপি কিনে নিয়ে যাচ্ছি।

 

আজ চাঁদ দেখা মানেই কাল ঈদ। এক মাস সিয়াম সাধনা করে সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর জন্য প্রার্থনা করা হবে ঈদের জামাতে। নতুন পাঞ্জাবি,পাজামা, টুপি আর সুগন্ধি ব্যবহার করে পবিত্র ঈদের সালাত আদায় করে কুশল বিনিময় করবে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা। তাই শেষ সময়ের কেনাকাটায় আতর টুপি কিনতে দোকানগুলোতে ভীড় জমাচ্ছেন নগরবাসি।

স/শ