শেষ দিনেও ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয়

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ঈদুল আজহার ঠিক একদিন আগে ঈদযাত্রার শেষ দিনেও শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে ট্রেন। রাজধানীর কমলাপুর থেকে প্রায় প্রতিটি ট্রেনকেই নির্ধারিত সময়ের পরে স্টেশন ছেড়ে যেতে দেখা যায়। সবচেয়ে বেশি শিডিউল হেরফের হতে দেখা যায় উত্তরাঞ্চলের ট্রেনগুলোতে।

রোববার (১১ আগস্ট) সকাল থেকেই এমন চিত্র চোখে পড়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে।

স্টেশনে ট্রেনের শিডিউল তুলে ধরা ডিজিটাল মনিটর থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, ঢাকা থেকে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৬টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি এখনো কমলাপুরেই আসেনি। প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা দেরিতে ট্রেনটি খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করে ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটে। এই প্রতিবেদন লেখার সময়ে ট্রেনটির অবস্থান পাবনার চাটমহরে। আর বিলম্ব না হলে ঢাকা থেকে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে সুন্দরবনের।

প্রায় একই অবস্থা ঢাকা-রাজশাহী রুটের ধূমকেতু এক্সপ্রেসের। সকাল ৬টায় কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এখনো রাজশাহী থেকেই যাত্রা করেনি ট্রেনটি। জিপিএস ট্র্যাকিং বলছে, প্রায় ১০ ঘণ্টা দেরিতে আজ রাত ১১টা ২০ মিনিটে রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে ট্রেনটি। সেক্ষেত্রে সোমবার (১২ আগস্ট) ঈদের নামাজ থেকেও বাদ যেতে পারেন ট্রেনের যাত্রীরা।

ঢাকা থেকে রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ৯টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ৩ ঘণ্টা দেরিতে দুপুর ১২টায় সেটির ছেড়ে যাওয়ার নতুন সময় দেখানো হচ্ছে।

অন্যদিকে ঢাকা থেকে চিলাহাটির উদ্দেশ্যে নীলসাগর এক্সপ্রেস কখন ছেড়ে যাবে তা এখনো জানে না স্টেশন কর্তৃপক্ষ। আর ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী ১০টার একতা এক্সপ্রেস এক ঘণ্টা দেরিতে ১১টায় কমলাপুর ছেড়ে যাবে বলে।

তবে কিছু ট্রেন পূর্ব নির্ধারিত সময়ের স্বল্প বিলম্বে কমলাপুর থেকে ছেড়ে যায়।  সকাল পৌনে ৭টায় প্রায় আধা ঘণ্টা দেরিতে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় পারাবত এক্সপ্রেস। ৭টা ২ মিনিটে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় সোনারবাংলা এক্সপ্রেস। দেওয়ানগঞ্জগামী ভোর ৫টার ট্রেন ৫টা ৪৪ মিনিটে ছেড়ে যায় কমলাপুর থেকে।
ট্রেনের অপেক্ষায় যাত্রীরাঈদের আগের দিনও ট্রেনের এমন শিডিউল বিপর্যয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ যাত্রীদের। ভোরের ট্রেন ধরতে স্টেশনে আসা যাত্রীদের অপেক্ষা যেন শেষই হচ্ছে না। নারী, শিশু দুর্ভোগ থেকে বাদ যাচ্ছেন না কেউই। ঈদের নামাজের জামাত আর কোরবানির মুহূর্তটিতে প্রিয়জনদের পাশে থাকতে পারবেন কিনা সেই আশঙ্কাও আছে অনেকের; বিশেষ করে রাজশাহীর ট্রেন ধূমকেতুর যাত্রীদের।

রাজধানীর একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, আমার ট্রেন (ধূমকেতু) ছিল আজ সকাল ৬টায়। ট্রেন ধরার জন্য পৌনে ৫টায় চলে এসেছি স্টেশনে। এখন পর্যন্ত ট্রেন আসেনি। স্টেশনের লোকেরাও কিছু বলতে পারে না। জিপিএস ট্র্যাকিংয়ে দেখলাম, আজ রাত ১১টা ২০ মিনিটে রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করবে ট্রেনটি। তাহলে আসবে কখন আর এসে আমাদের নিয়ে রাজশাহী যাবে কখন?

ঈদের নামাজ নিয়ে চিন্তিত হাবিবকে শোনা যায় পাশে বসা এক ব্যক্তিকে প্রশ্ন করতে, ঈদের নামাজ ট্রেনে পড়ার কোনো ব্যবস্থা কি রাখা হয়?

ট্রেনগুলোর এমন শিডিউল বিপর্যয় সম্পর্কে জানতে চাইলে কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার আমিনুল হক বলেন, বেশিরভাগ ট্রেনই শিডিউল মত ছেড়েছে। দুই একটি দেরি করছে। আসলে গত শুক্রবার বেশ কিছুক্ষণ বঙ্গবন্ধু সেতুতে একটি ট্রেনের দুর্ঘটনার জন্য ঐ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। যার প্রভাব মোটামুটি সব ট্রেনেই পড়েছে। এছাড়াও ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রী উঠছেন। তাদের ওঠা ও নামায় অতিরিক্ত সময় প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে ট্রেনগুলোকে। তাই শিডিউলের এই সমস্যা।