শীতে কাঁপছে রাজশাহী: হাসপাতালে বেড়েছে রোগী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কনকনে শীতে রাজশাহী অঞ্চলে বেড়েছে শিশুদের রোগ-বালাই। পাশাপাশি ঠান্ডাজনিত নানা অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরাও। এর ফলে উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ।

রামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১০, ২৪, ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে শিশু রোগীদের ভর্তি করা হয়। এই চার ওয়ার্ডে ১২০টির মতো শয্যা আছে। তবে এখন শিশু রোগী ভর্তি আছে চারশোরও বেশি।  প্রতিদিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০জন শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের রোগীরা ভর্তি হচ্ছে চিকিৎসার জন্য।

জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সগুলোতেও শিশু রোগীর চাপ বেড়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় সেখানে রোগ সারানোর চেষ্টা চলছে। সম্ভব না হলে রোগিদের রামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে। বাইরের অন্য কয়েকটি জেলা থেকেও রামেক হাসপাতালে রোগি আসছে। বহু সংখ্যক শিশু রোগি ভর্তি আছে নগরীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে। আজ দুপুরে রামেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি ওয়ার্ড বেশ শিশু রোগি।

কুষ্টিয়া সদরের কুমারগাড়া থেকে দুই মাস বয়সি শিশু আলিফ হোসেনের চিকিৎসা করাতে হাসপাতালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে এসেছেন বাবা মনির খান শিমু। তিনি জানান, ১০ দিন হলো নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে আলিফ। চিকিৎসা করেও রোগ সারছে না। এখন দেখা দিয়েছে খিঁচুনি।

হাসপাতালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসক ডাক্তার সিমুল সিল্কিসিটিনিউজকে জানায়, শীতে ঠান্ডা লেগে শিশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ব্রঙ্কিউলাইটিস রোগে। নিউমোনিয়ার প্রকোপ শিশুদের মাঝে সারা বছর কমবেশি দেখা গেলেও ব্রঙ্কিউলাইটিসের প্রকোপ তেমন থাকেনা। কিন্তু শীতে রেসপিরেটরি সিনসেটিয়াল ভাইরাস (আরএসবি) ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে সংক্রমণজনিত এই রোগটির প্রকোপ হঠাৎ করে বেড়ে গেছে।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সূত্র মতে, গত ২ জানুয়ারি থেকে হিমেল হাওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। পাশাপাশি কমছে তাপমাত্রা। মাঝে শুধু শনিবার বাদে প্রতিদিনই তাপমাত্রা নিচের দিকে নামছে। গত বুধবার চলতি শীত মৌসুমের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেটি গত বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টায় গিয়ে রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে করে কনকনে শীতে কাবু হয়ে পড়ে জনজীবন। শুক্রবার সেটি গিয়ে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তবে পরের দিন শুক্রবার একটু বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। কিন্তু গতকাল শনিবার আবার কমে আসে ব্যাপক হারে। এক ধাপে নেমে আসে ৬ ডিগ্রির নিচে। গতকাল রেকর্ড করা হয় ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ রবিবার সেটি গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশকি ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

স/আ