শিশু নির্যাতন, ৪০ হাজার টাকায় আপস!

নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘তারা আমার ছেলেকে ঝুলিয়ে মেরেছিল। আমি তার পরে বাঘা থানায় গিয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম। তারা তখন থেকেই আমাকে নানা ভাবে বলে তোমরা আপস করে নাও। কয়েকদিন আগে এলাকার বড় বড় লোকেরা এসে আমাকে বলে তোমার ছেলে তো আর মারা যায়নি। একটা ভুল হয়ে গেছে আর কি করার। চলো রাজশাহী কোর্টে, মামলা তুলতে।’

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে মুঠোফনে রাজশাহীর বাঘার শিশু মনিরুল ইসলামের মা আবেদা নির্যাতনের আপসের কথা সিল্কসিটিনিউজকে বলেন ।

তিনি সিল্কসিটিনিউজকে বলেন, ‘আসামিরা ও এলাকার মানুষরা বলে আপস করে নেও। এ ভাবে মামলা থাকলে তোমরাও হয়রানি হবা আর তারাও হয়রানি হবে। তাই আমি আমি গত ১৬ (নভেম্বার) রাজশাহী কোর্টে গিয়ে মামলা তুলে নিয়েছি। তারা এর বিনিয়ময়ে আমাকে ৪০ হাজার টাকা দিয়েছে।’

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী মাহমুদ সিল্কসিটিনিউজকে বলেন, এই ঘটনার বর্তমানে কি অবস্থা তার আমার জানা নাই। তবে তারা আপস করেছে কিনা তা আমার জানা নেই।

এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্টের (এসিডি) নির্বাহী পরিচালক সালীমা সারোয়ার সিল্কসিটিনিউজকে বলেন, শিশু যত বড়ই অপরাধ করুক না কেনো, তাকে মারধর করা যাবে না। দেশে আইন কানুন আছে তাদের মাধ্যমে তার বিচার করতে হবে। আর সালিশে জরিমান করা তো জাবে না।

এর আগে গত ২৪ অক্টোবর বাঘায় মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে মনিরুল ইসলাম (১৩) নামের এক স্কুল ছাত্রকে পা বেঁধে একটি দোকান ঘরের কাঠের তীরের সাথে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হয় উপজেলার নারায়নপুর বাজারের মনিকা সিনেমা হলের সামনে। সে চকনারায়নপুর গ্রামের মিঠু প্রামানিকের ছেলে।

পরে বাজারের লোকজন ছাত্রকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। খবর পেয়ে বাঘা থানা পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত জিল্লুর রহমান নামের এক পুলিশ সদস্যকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

উপজেলার চকছাতারি গ্রামের সাবেক ইউনিয়ন মেম্বর হারান আলীর ছেলে ব্যবসায়ী মহিবুল আলম নারায়নপুর বাজারে মাছ বাজারে ঘোরাফেরা করছিল। এ সময় তার ব্যবহৃত একটি মোবাইল খোয়া যায়। সেখানে ছিল কয়েকজন যুবক।

পরে চকনারায়নপুর গ্রামের মিঠু প্রামানিকের সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে মনিরুল মোবাইল চোর সন্দেহ করে মহিবুল ইসলামসহ তার ভাই সেনা সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন, অপর ভাই পুলিশ সদস্য হাফিজুর রহমান জিল্লুর ওই ছাত্রকে মটোরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে নারায়নপুর বাজারে মনিকা সিনেমা হলের সামনে আসেন।

সেখানে ওই শিক্ষার্থীর দুই পাঁ বেঁধে দোকানের কাঠের তীরের সাথে উপরে পাঁ ঝুলিয়ে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এ দৃশ্য দেখে বাজারের নির্যাতনকারীদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। এরপর ওই ছাত্রকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে এই ঘটনা বাদি হয়ে তার মা থানয় একটি নির্যাতনের মামলা করে।

স/আ