শিশুকে গাছে বেঁধে আদিম কায়দায় নির্যাতন, আটক ২

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: এবার কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় মোবাইল চুরির অপবাদে আমগাছের সাথে বেঁধে দুই শিশুকে অমানসিকভাবে পিটিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। বুধবার বিকেলের দিকে কুমারখালীর ছেউড়িয়ায় এ নির্মম ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দুই শিশুর পরিবারসূত্র জানায়, কয়েকদিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেউড়িয়ার চরমণ্ডলপাড়া এলাকার রূপালী নামে এক নারীর মোবাইল খোয়া যায়। ওই ঘটনায় তারা একই এলাকার ৭ বছরের এতিম শিশু জুয়েল ও আসিফকে সন্দেহ করে।

বুধবার বিকেলের দিকে একই এলাকার প্রভাবশালী তানজিল ও মীর আক্কাস ওরফে মিরু বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে তানজিলের শ্বশুরবাড়ির সামনে আমগাছের সাথে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায়। সন্ধ্যায় ওই শিশুকে গুরুতর আহতাবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এই নির্যাতনের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সাত বছরের জুয়েলের হাত দুটো দড়ি দিয়ে বেঁধে তাকে ঝোলানো হয়েছে আমগাছের ডালে। তার সামনে গাছের ডাল হাতে এক যুবক। শিশুটি কেঁদেই যাচ্ছে। আর বলছে, ও কাকা, আমি জানি না। কিচ্ছু জানি না।

ও আল্লাহ, আমারে বাঁচাও।

জুয়েলকে ঘিরে নারী-পুরুষ-শিশুসহ আরও বেশ কিছু মানুষের জটলা। সবার সামনে জুয়েলের শরীরে সপাসপ ডালের আঘাত পড়ে। তার আর্তচিৎকার চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তাকে রক্ষা করতে কেউ এগিয়ে আসে না। শিশুটিকে মারধর করতে করতে যুবক বলতে থাকেন, সত্যি করি ক, মোবাইল কনে?

শিশুটি যতবার জানি না বলে, ততবার তার শরীরে জোরে জোরে ডালের বাড়ি পড়ে। মারধরের সময় আশপাশের লোকজন দাঁড়িয়ে ছিল। কেউ কিছু বলেনি। মারধরে তানজিলের সঙ্গে মিরু ও এক নারী যোগ দেন। শিশুটি পরে বলে, ‘আমাকে অনেকক্ষণ ধরি মারিছে। আমি কিছু জানি না বললেও তারা থামেনি। ‘

জুয়েল জানায়, মারধরের সময় আশপাশের লোকজন দাঁড়িয়ে ছিল। কেউ কিছু বলেনি। মারধরে তানজিলের সঙ্গে মিরু ও এক নারী যোগ দেন। এ ঘটনায় শিশুটির ভাই রব্বেল খান বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে কুমারখালী থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তানজিল ও তার শাশুড়ি রোকেয়াকে আটক করেছে।

কুমারখালী থানার ওসি আব্দুল খালেক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় তানজিল ও তার শাশুড়ি রোকেয়াকে আটক করা হয়েছে। মীর আক্কাস ওরফে মিরুকে আটকের চেষ্টা চলছে। এদিকে এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছে এলাকাবাসী। সূত্র: কালের কণ্ঠ