শিবগঞ্জে সড়ক সংস্কারে ধীরগতি: চলাচলে জনদুর্ভোগ

কামাল হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:


চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ বাজারের মনাকষা মোড় থেকে খাসেরহাট পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার কাজ চলছে ধীর গতিতে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন জনগণ। যাতায়াতে ব্যয় হচ্ছে দ্বিগুণ সময়। এ রাস্তায় রোগীদের যাতায়াতও কঠিন হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি যানবাহন চালকরা পড়েছেন বিপাকে।



এছাড়াও রাস্তার সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কাজ ভাল করতে হলে জনগণের কিছু সমস্যা হবেই। এ সমস্যা বেশি দিন স্থায়ী হবে না। নির্ধারিত সময়ে রাস্তার সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা হবে।

সরেজমিনে ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবগঞ্জ বাজারের মনাকষা মোড় থেকে মনাকষা ঈদগাহ মোড়, সাহাপাড়া বাজার ও মনাকষা ঈদগাহ মোড় থেকে খাসেরহাট পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার সড়কে সংস্কার কাজ চলছে। দীর্ঘ সড়ক সংস্কারে অল্প কয়েকজন শ্রমিক কাজ করছেন। রাস্তার উপরে বালি ও ইটের খোয়া ফেলে রাখা হয়েছে। কয়েকটি স্থানে কিছু কিশোর ও তরুণরা হাতে লাঠি নিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে দেখা গেছে। ওই কিশোররা কারো কারো সাথে দুর্ব্যবহারও করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যাত্রীদের মাঝে মাঝে হেঁটে যেতে হচ্ছে। রোগী নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে অনেককে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিবগঞ্জ বাজারের এক দোকানদার বলেন, আমার জীবনে রাস্তা মেরামতে এতো সময় ব্যয় করতে দেখিনি। রাস্তায় মানুষের চলাচল বন্ধ করে রাস্তায় নিম্নমানের খোয়া ও বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। রাস্তায় পানি ছিটানোর নিয়ম থাকলেও পানি না ছিটানোয় রাস্তা ধুলায় অন্ধকার হয়ে থাকছে। রায়হান নামে এক অটোচালক বলেন, রাস্তা মেরামতের অজুহাতে যানবাহনের মালিকদের এতো হয়রানী আর কোনদিন দেখিনি। রাস্তায় যে সব ছেলেরা যানবাহনে আঘাত, অশ্লীল ভাষা ব্যবহার ও দুর্ব্যবহার করছে। যারা আমাদের ছেলের বয়সের হবে। প্রতিবাদ করলেই মোটেই যানবাহন চলাচল করতে দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিচ্ছে।

আরেক অটোচালক বলেন, সবার অটোতে বাধা দিলেও আমিসহ কয়েকজনের অটোতে কোন বাধা দেবে না। আমরা সেভাবে ম্যানেজ করে চলছি। এ বিষয়ে ঠিকাদার ময়েন খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রাস্তার কাজ সঠিক নিয়মে চলছে। কোন অনিয়ম হয়নি। যানবাহনে বাধা, জনগণের ভোগান্তির কথা অস্বীকার করলেও কিছু কিশোর ও তরুণের দুর্ব্যবহার সম্পর্কে বলেন, যে যেমন ব্যবহার করবে; তার সঙ্গে সেরকম ব্যবহার করেই উত্তর দিতে হবে। চলতি রাস্তায় যাত্রীদের চাপ অতিরিক্ত হওয়ায় আমরা ঠিকমতো কাজ করতে পারছি না। তাই যাত্রীদের কষ্ট হলেও কিছুটা কঠোর হতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দুটি প্যাকেজে প্রায় ১৮ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ বলেন, বড় কাজ তাই কিছুটা দেরি হতে পারে।

তিনি বলেন, সরু রাস্তার একপাশ দিয়ে কাজ করলে রাস্তা মেরামত ভাল হবে না। তবে যাত্রী বা জনগণকে বুঝিয়ে বলতে হবে। তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করা যাবে না। অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান উপজেলা প্রকৌশলী।