শিবগঞ্জে স্কুল ছাত্রী হত্যার মামলায় আসামির ১০ দিনের রিমাণ্ড আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের রশিকনগর শিরোটোলা গ্রামে শ্যামলী খাতুন (১৬) হত্যার ঘটনার তিনদিনের ব্যবধানে ৪ জনকে জনতা আটক করে পুলিশে সোর্পদ করে। আটকের পর আসামি টুটুলকে হত্যার ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ ‘খ’ আমলী আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন চেয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক (অপারেশ) কবির হোসেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন- টুটুলকে রিমণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে শ্যামলী হত্যার ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটন হতে পারে।

এছাড়া ওইদিনের ঘটনায় মামলার বাদি আলিয়ারা বেগম ও তার দুই মেয়ের গলায় থাকা দুই ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও পাঁচ ভরি ওজনের রূপার নূপুরসহ চুরি হয়ে যাওয়া দুটি স্যামসাং টাচ্ মোবাইল ফোন উদ্ধার করা সম্ভব হবে।

শ্যামলী হত্যার মামলার অগ্রগতির বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চুরি হয়ে যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধারের জোর চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে এ হত্যাকা-ের জড়িতদের আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অন্যদিকে নিহতের পিতা কবির হোসেন দুবাই থেকে ফিরে এসে কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে পড়েছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে পিতা কবির হোসেন জানান, মেয়ের হত্যার সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রকৃত খুনিদের বের করার জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। এছাড়াও নিহতের পিতা কবির হোসেনসহ এলাকাবাসী জানিয়েছেন- আটককৃতদের আত্মীয়রা বাদিকে প্রতিনিয়ত হুমকি ধামকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।

সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, শ্যামলী হত্যার পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- মামলার দ্রুত তদন্ত করে হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা পুলিশ সুপারের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।

অন্যদিকে শ্যামলী হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে গেল বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কের বহলাবাড়ি মোড়ের ছাইতন তলায় সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী। কর্মসূচিতে রশিকনগর গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের পাচঁ শতাধিক নারী-পুরুষেরা অংশ নেয়।

প্রসঙ্গত, গত রোববার দিবাগত গভীর রাতে একদল সন্ত্রাসী কবির হোসেনের বাড়িতে প্রবেশ করে। প্রথমে কবির হোসেনের স্ত্রী আলিয়ারা বেগম, বড় মেয়ে চাম্পা খাতুন ও শ্যামলী খাতুনের ঘরে প্রবেশ করেই আলিয়ারা বেগম ও চাম্পার মুখে রুমাল দিয়ে অজ্ঞান করে। এরপর তাদের গলায় থাকা তিনটি চেইন ও দুটি টাচ্ মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। যাবার সময় শ্যামলী খাতুন সন্ত্রাসীদের চিনে ফেলায় সন্ত্রাসীরা শ্যামলীকে জোর করে পাশের রুমে নিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার করে যাবার সময় বাড়ির প্রধান ফটকে শিকল আটকিয়ে পালিয়ে যায়।

নিহত শ্যামলী খাতুন ওই এলাকার কবির হোসেনের কনিষ্ঠ কন্যা ও পারঘোড়াপাখিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। ঘটনার পরদিন নিহতের মা আলিয়ারা বেগম বাড়ি হয়ে শিবগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
স/শ