শিবগঞ্জে অফিসকক্ষে সাবরেজিস্ট্রারের ওপর হামলা: আধা ঘন্টা আগে শাসিয়ে এসেছিলেন ইউএনও

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

তবে বিষয়টি নিয়ে শিবগঞ্জের ইউএনও আবুল হায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পেনসনের বিষয় নিয়ে কথা বলতে গেছিলাম। তাকে শাসানোর বিষয়টি সঠিক নয়। তার অফিসে গিয়ে কথা বলেছি মাত্র। এসময় কথাকাটাকাটি হয়েছে মাত্র। সাবরেজিস্ট্রারই উল্টো হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাকে মারপিট করতে যান। সাবরেজিস্ট্রারই আমাদের উল্টো হুমকি দিয়েছিনে। তার পরেও পরিস্থিতি শান্ত করে চলে এসেছি।

ইউএনও বলেন, ‘সাবরেজিষ্ট্রারের ব্যবহারের কারণে তিনি মার খেয়েছেন। এর আগেও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। তার দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে মাসিক আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভাতেও এস উঠেছে। তবে তার সঙ্গে যে আচরণ হয়েছে, সেটি ঠিক করা হয়নি। তার ওপর হামলার সঙ্গে আমি কোনোভাবেই জড়িত নয়।

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী জুবায়ের আহম্মদ রাত আটটার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সেখানে দলিল লেখক, নকলনবিশ ও জমিসংক্রান্ত কাজে আসা সাধারণ মানুষ ছিলেন। কে বা কারা তাঁর ওপর হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে হামলা করেছেন, সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে ঘটনাটি সম্পর্কে ধারণা পাবেন বলে জানান ওসি। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা রেজস্ট্রিার আপসানা বেগম অভিযোগ করে সিল্কসিটিনিউজে বলেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে ইউএনও আবুল হায়াত জড়িত। তার ইন্ধনেই সাবরেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীর ওপরে হামলা হয়েছে। অফিস চলাকালীন সময়ে কার্যালয়ে কর্মরত অবস্থায় একজন সরকারি কর্মচারীর ওপর এই ধরনের হামলা ন্যাক্কারজনক। আমরা এ নিয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। ঘটনার বিচারের দাবিতে আমরা কর্মবিরতী পালন করছি।’

আফসানা বেগম বলেন, ‘ঘটনার আধা ঘন্টা আগে ইউএনও দলবল নিয়ে গিয়ে সাবরেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীকে শাসিয়ে এসেছিলেন। তাকে মারপিটের হুমকি দিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি ইউসুফ আলী আমাকে তাৎক্ষণাৎ ফোনে জানিয়েছিলেন। শাসিয়ে আসার সময় ইউএনও ইউসুফ আলীর ফোনটিও ছিনিয়ে নিয়ে এসেছেন। ওই ফোনটি এখনো ইউএনও তার কাছে রেখেছেন। এসব ঘটনা আমি জেলা প্রশাসক স্যারকে জানিয়েছিলাম। জেলা প্রশাসক স্যার বিষয়টি দেখবেন বলেছিলেন। কিন্তু তার পর পরই সাবরেজিস্ট্রারের ওপরে ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা করা হয়েছে।’

জেলা রেজিস্ট্রার আফসানা বেগম আরও জানান, ইউসুফ আলীকে মারপিট করা হয়েছে শিবগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রার অফিসের সাবেক প্রয়াত এক কর্মচারীর পেনসনের ফাইল পাশ করার ঘটনা নিয়ে। ওই কর্মচারী ২০১৪ সালে অবসর নেন। এরপর ২০১৮ সালে তিনি মারা যান। এখন তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বোন এসে পেনসন দাবি করছেন। কিন্তু ওই স্ত্রীর কোনো কাবিন নামা দেখাতে পারেননি তারা। এ নিয়ে মূলত ফাইলটি ছাড়তে পারছিলেন না সাবরেজিস্ট্রার ইউসুফ আলী। আর ওই ফাইল ছাড়ার জন্য ইউএনও মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে ইউসুফ আলীর খাস কামারায় গিয়ে তাকে শাসিয়ে আসেন। এসময় ইউসুফের এক কর্মচারীকেও সার্টের কলার ধরে ইউএনও মারপিটের হুমকি দিয়েছিলেন। তার আধা ঘন্টা পরই ঘটে হামলার ঘটনা। কাজেই এর সঙ্গে অন্য কোনো ঘটনার সম্পৃক্ততা নাই। ইউএনও এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলেও দাবি করেন আফসানা বেগম।

তিনি বলেন, এই ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা কাজে যোগদান করবো না।

 

স/আর