শিক্ষক-সভাপতির বিরুদ্ধে স্কুল মাঠে দোকান তৈরির অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি:

নওগাঁর মান্দা উপজেলার সতিহাট বাজারে অবস্থিত শ্রীরামপুর-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালযের প্রধান শিক্ষক শ্রীমতী শ্যামলী রাণী সরকার ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রভাবশালী ফরহাদ চকদারের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের মাঠে ভাড়া দেয়ার জন্য আধা পাকা ঘর তৈরির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পূর্ব পার্শ্বে সীমানা প্রাচীরের ভেতরে টিনের ছাওনি দেয়া আধা-পাকা চারটি দোকান ঘর তৈরির কাজ পুরোদমে চলছে। এরমধ্যে ৩টি দোকান ঘরের জন্য ও ১টি গোডাউনের জন্য ব্যবহারের উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে একটি ঘরের টিনের তৈরি ঝাপ লাগানো হলেও অন্যান্য গুলোর ঝাপ এখনো লাগানো হয়নি। এছাড়াও দীর্ঘ দিন থেকে প্রতিষ্ঠানে মাঠে টিনের ঢোকের (অস্থায়ী) ঘরে বিভিন্ন ধরণের দোকান চলছে। এতে নষ্ট হচ্ছে বিদ্যালয়ের পরিবেশ ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মন-মানসিকতা। তারা পাচ্ছেনা খেলার মাঠ।

এব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক শ্রীমতি শ্যামলী রাণী সরকার ঘর তৈরির কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার লিখিত অনুমতি সাপেক্ষে দোকান ঘর তৈরির কাজ চলছে। এ দোকান ঘরের ভাড়ার টাকা দিয়ে আদালতের (কোর্টের) চলমান মামলা পরিচালনা করা হবে। স্কুল মাঠে দোকান তৈরি করা ঠিক কিনা এমন প্রশ্নে তিনি কোনো কিছু জানাননি।

এবিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফরহাদ হোসেন জানান, তিনিসহ ১৬ জনের নামে ১২ টি মামলা চলমান। এ মধ্যে বিদ্যালয়ের মালিকানা শ্রীরামপুর মৌজার মাত্র তিন বিঘার কিছু বেশি জমি রয়েছে। এ জমির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা। এ জমির মালিকানা দাবি করে ২০ সালের প্রজাস্বত্ব দাবিদার গবির গংয়ের বর্তমান ওয়ারিশ রজব আলী ও রোজিনা গংরা মামলাগুলো করেছেন। এ মামলার জন্য প্রায় ৫ লাখ টাকা ঋণ হয়ে গেছে। ফৌজদারি সিভিল মামলা বর্তমানে জজকোর্টে চলছে। মামলার খরচ চালাতে দোকানঘর তৈরি করে ভাড়া দেয়া হবে। ভাড়ার টাকায় মামলা চালানোসহ ঋণ শোধ করা হবে। কেউ তো মামলার খরচ দিবেনা।

জমির মালিকানার ও দোকান ভাড়ার সভার কার্যবিবরণীর কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি বলেন, এখন বিদ্যালয় বন্ধ। ২ মার্চ এলে কাগজপত্র দেখানো যাবে।

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম বলেন, এব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। আমি নতুন করে ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব পেয়েছি। পূর্বে যিনি দায়িত্বে ছিলেন তিনিই ভালো বলতে পারবেন। তবে আমার জানা মতে আগে একটি ঘর ছিল। এখন নতুন করে ঘর তৈরির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এবিষয়টি আমি অবশ্যই তদন্ত করে দেখবো।

জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইউসুফ রেজা বলেন, বিদ্যালয়ের জমিতে কেউ কখনো কোন স্থাপনা তৈরি করতে পারেন না। যদি করে থাকেন, তাহলে সেটা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ কাজ হবে। এবিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জি/আর