সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :
সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করার ঘটনা তদন্তে কলেজে পৌঁছেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠিত তিন সদস্যের দলটি। অভিযুক্ত ডা. রায়হান শরীফ ওই কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক। ছাত্রকে গুলি করে আলোচনায় এসেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে কলেজে এসে পৌঁছায় তদন্ত দলটি। এরপর সেই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমিরুল হোসেন বলেন, বেলা ১১টার দিকে তদন্ত কমিটির তিনজন কলেজে এসে পৌঁছান। এরপর তারা যান কলেজ হোস্টেলে। সেখানে গিয়ে প্রথমে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন। এরপর কথা বলেন তাদের হোস্টেলের শিক্ষার্থী ও সহপাঠীদের সঙ্গে।
তিনি বলেন, তারা এখনো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন। এখন পর্যন্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেননি। ভুক্তভোগীসহ সবার সঙ্গে কথা বলে হয়তো ওখানে যাবেন।
এ সময় আহত শিক্ষার্থীকে দেখতে গিয়েছেন সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের সংসদ সদস্য ড. জান্নাত আরা হেনরি। তিনি অসুস্থ শিক্ষার্থীর সার্বিক খোঁজখবর নেন ও তদন্ত কমিটির সঙ্গেও কথা বলেন।
ড. জান্নাত আরা হেনরি বলেন, ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয় ও দুঃখজনক। এমন ঘটনা মোটেও কাম্য নয়। আমি ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গেই জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। আমরা যতোটা ভেবেছিলাম ছেলেটা ততোটা আহত হয়নি। সেই তুলনায় সে অনেকটা ভালো আছে। তবে সে ভীষণ ভয় পেয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে।
তিনি আরও বলেন, তারা অনেক দূরদূরান্ত থেকে পড়তে আসে। ওরা তো আমাদেরই সন্তান। তাদের দেখাশোনার দায়িত্ব আমাদের সবার। এই অন্যায়কে আমরা কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেব না। আমি বলেছি অপরাধী যেন আইনের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে যেতে না পারে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ওই শিক্ষকের শাস্তি চেয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। পরে তদন্ত কমিটি তাদের নিয়ে আলোচনায় বসেছেন বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করেন কলেজের শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সন্ধ্যায় তাকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। পরে রাতে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা।
এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কমিটিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।