শাস্তি দানই আল্লাহর প্রতিশোধ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

মহান আল্লাহর একটি গুণবাচক নাম ‘জুনতিকাম’ (যার প্রতিশোধ গ্রহণের বিষয়টি প্রমাণিত)। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াত দ্বারা আল্লাহর এই গুণ প্রমাণিত। ইরশাদ হয়েছে, ‘কেউ তা পুনরায় করলে আল্লাহ তার থেকে প্রতিশোধ নেবেন (শাস্তি দেবেন) এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী। ’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৯৫)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘সুতরাং আমি তাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেছি এবং তাদের অতল সমুদ্রে নিমজ্জিত করেছি।

কেননা তারা আমার নিদর্শন অস্বীকার করত এবং এ বিষয়ে তারা ছিল উদাসীন। ’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১৩৬)
উল্লিখিত আয়াতদ্বয় থেকে বোঝা যায় আল্লাহ পাপিষ্ঠদের থেকেই প্রতিশোধ নেন। নিম্নোক্ত আয়াতে যা আরো স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি তাঁর প্রতিপালকের নিদর্শনাবলি দ্বারা উপদিষ্ট হয়ে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার চেয়ে অধিক অবিচারকারী আর কে? আমি অবশ্যই অপরাধীদের শাস্তি দিয়ে থাকি। ’ (সুরা সাজদা, আয়াত : ২২)

তবে প্রতিশোধ গ্রহণ বা শাস্তিদানের আগে অপরাধীদের আল্লাহ সংশোধনের সুযোগ দেন এবং তাদের সামনে সত্য উন্মোচিত করেন। আল্লাহ বলেন, ‘আমরা কোনো জাতিকে শাস্তি দান করি না যতক্ষণ না রাসুল প্রেরণ করি। ’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১৫)

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) কুরাইশদের সম্পর্কে বলেন, ‘আল্লাহ তাদের সংশয় দূর করে দেন। তার পরও তারা ইসলামের সঙ্গে শত্রুতায় লিপ্ত হয়। ফলে আল্লাহ বদরের দিন তাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করেন। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪৮২২)

তবে আল্লাহর গুণবাচক নাম হিসেবে ‘জুনতিকাম’ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। কেননা প্রতিশোধ গ্রহণ করা যদিও কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রশংসনীয়, তবু এর ভেতর এক ধরনের কঠোরতা প্রকাশ পায়। সম্ভবত এ কারণেই আল্লাহ কোরআনে সরাসরি ‘মুন্তাকিম’ (প্রতিশোধ গ্রহণকারী) শব্দ ব্যবহার করেননি এবং কোরআনের অনুবাদকরা ‘প্রতিশোধ’ শব্দের পরিবর্তে ‘শাস্তি’ শব্দ দ্বারা তা ভাষান্তর করেছেন। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে প্রমাণিত আল্লাহর গুণাবলিতে সরাসরি ‘মুন্তাকিম’ (প্রতিশোধ গ্রহণকারী) শব্দটি নেই। কোরআনে তা ব্যবহার করা হয়েছে শর্তযুক্ত অবস্থায় যেমন বলা হয়েছে, তিনি অপরাধীদের থেকে প্রতিশোধ নেন অথবা তা ব্যবহার করা হয়েছে ‘জু’-এর সংযোগে (জুনতিকাম) অর্থাৎ যার ভেতর প্রতিশোধ গ্রহণের বিষয়টি প্রমাণিত। (মাজউল ফাতাওয়া : ১৭/৯৫)

আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া

 

সুত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন