শাকিব খান-সেলিম খান, সম্পর্ক ভেঙে খান খান

সেলিম খান ও শাকিব খান- দুই খানের সম্পর্ক ভেঙে খান খান। শাকিব খানকে নিয়েই যাত্রা শুরু করেছিল প্রযোজনাপ্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়া। একের পর এক ছবির ঘোষণা দিয়ে চমকে দিচ্ছিলেন প্রযোজক সেলিম খান। একটা সময় সেলিম খান ও শাকিব খানের মধ্যে গড়ে ওঠে নিবিড় সখ্য। শাকিব খান ছাড়া কিছু বুঝতেন না সেলিম খান। সেই শাকিব খানকে এখন ‘দেখতে পারেন না’ সেলিম খান। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বলেও দিলেন- শাকিব খান সুপারস্টার না, সুপারস্টার হলো সিয়াম ও শুভ।

সেলিম খান শাকিবকে বারবার তোপ দাগলেও ঢাকাই এই শীর্ষ চিত্রনায়ক একেবারেই চুপচাপ রয়েছেন। তিনি প্রতিবাদও করেন না, কোনো বক্তব্য সচরাচর দেন না। শাকিব খানের নেই কোনো অভিযোগ। তিনি নিজের মতো, নিজের কাজটাই করে যান।

যদিও এই ইন্ডাস্ট্রিতে সুপারস্টার শব্দের ব্যবহার নিয়েও বিতর্ক রয়েছে- চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা এই শব্দ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। যা হোক, সে ভিন্ন প্রসঙ্গ। মূল প্রসঙ্গ হচ্ছে, ওয়েস্টিনের বলরুমে জমকালো আয়োজনে শাকিবকে ধরে ছাড়তেই মন চাচ্ছিল না যে সেলিম খানের; সে অনুষ্ঠানে শাকিবের সঙ্গে বেশ অন্তরঙ্গ সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায় সেলিম খান ও শাকিব খানের। ইন্ডাস্ট্রি বুঝে যায়, দুই খানের সমন্বয়ে ইন্ডাস্ট্রি হয়তো বেশ কিছু ভালো সিনেমা পেতে যাচ্ছে। এর আগেই সেলিম-শাকিবের সমন্বয়ে ২০১৮ সালে মুক্তি পায় ‘আমি নেতা হবো’।

ওয়েস্টিনে শাকিব খান মঞ্চে বক্তব্য দিতে যাবেন, আর সেলিম খান শাকিবের বাহু ধরে ছাড়ছিলেনই না। দুজনের সে ‘মাখো’ সম্পর্ক দেখে চিত্রনায়িকা বুবলীও না হেসে পারেননি। ভক্ত কিংবা সিনেমাপ্রেমীরা বার্তা পেয়েছিল- শাকিব খান ও সেলিম খানের যে বন্ধুত্ব সে বন্ধুত্বে সহজে চিড় ধরবে না। অন্তত সেলিম খান শাকিবকে এতটাই পছন্দ করেন যে চিড় ধরার বিষয়টি মাথায়ই আসবে না কারো- অন্তত সংশ্লিষ্টদের অভিমত এমনটাই।

পৃথিবীর হিসাব, কিংবা চলচ্চিত্রের হিসাবটাই বুঝি একটু বেশি গোলমেলো। ‘মাননীয় সরকার একটু প্রেম দরকার’ সিনেমার মহরত অনুষ্ঠানে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও কুশলীরা দুজনের মধ্যে যে সম্পর্ক দেখেছিলেন, সেই সম্পর্কের অবনতি ঘটল মাত্র বছরখানেক পরেই। খবরে এলো- “সময়মতো সিনেমার কাজ শেষ না করায় শাকিব খানের কাছে নোটিশ পাঠিয়েছে চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়া। গত বছর এই প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে শাহিন সুমনের পরিচালনায় ‘একটু প্রেম দরকার’ নামের একটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন শাকিব।”

শাপলার কর্ণধার সেলিম খান সে সময় জানান, শাকিব খানকে পাঠানো এই নোটিশের অনুলিপি তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদসহ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি, পরিচালক সমিতি ও শিল্পী সমিতির কাছেও পাঠানো হয়েছে। শাকিবের অনিয়মের জন্য ছবিটিতে অতিরিক্ত ১ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৯ সালে এই তিক্ততার শুরু।

চাঁদপুরে সেলিম খান শাকিবকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের সুপারস্টার শাকিব খান বলেছিলেন, ১০০ সিনেমা বানানোর দরকার নেই। ভালো সিনেমা একটাই যথেষ্ট। ভদ্রলোকের কাছে আমার প্রশ্ন- উনি তো ভালো সিনেমা করেন। কিন্তু বর্তমানে যে সিনেমাটির শুটিং তিনি করছেন টাঙ্গাইল না পূবাইলে মাত্র ৬০ লাখ টাকা বাজেটে। উনি যদি সুপারস্টারই হন তাহলে ৬০ লাখ টাকা বাজেটের সিনেমা উনি কেন করছেন? উনি তো সুপারস্টার, সরকারি অনুদানের সিনেমা করছেন কেন? তাহলে উনি কিসের সুপারস্টার?’

‘আমি নেতা হবো’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ করে প্রথম আলোচনায় আসে প্রযোজনা সংস্থা শাপলা মিডিয়া। এরপর শাকিবকে নায়ক করে ‘চিটাগাইঙ্গা পোয়া নোয়াখাইল্যা মাইয়া’, ‘ক্যাপ্টেন খান’ ও ‘শাহেনশাহ’ সিনেমা নির্মাণ করে বাংলাদেশে একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করেছিল প্রযোজনা সংস্থাটি। কিন্তু শাকিব নিজের প্রযোজনা সংস্থা থেকে নিয়মিত সিনেমা করার পর শাপলা মিডিয়া ও শাকিবের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সেই অবনমনের পরিবর্তন এখনো খুব একটা হয়নি।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ