শহিদুল আলমকে ডিভিশন দিতে বলা হাইকোর্টের আদেশ বহাল

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলমকে কারাবিধি অনুযায়ী প্রথম শ্রেণির ডিভিশন দেওয়া নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত না করে নট টু ডে (আজ আদেশ নয়) আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত। এর ফলে শহিদুল আলমকে ডিভিশন দিতে বলা হাইকোর্টের আদেশ আপাতত বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

শহিদুল আলমকে ডিভিশন দেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) চেম্বার বিচারপতি ইমান আলী এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অন্যদিকে, শহিদুল আলমের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন,  জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ।

এর আগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেফতার আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলমকে কারাবিধি অনুযায়ী প্রথম শ্রেণির ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। শহিদুল আলমের স্ত্রী  রেহনুমা আহমেদের দায়ের করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ সেপ্টেম্বর বিচারপতি বোরহানউদ্দীন ও বিচারপতি মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ ওই আদেশ দেন।

আদালতে সেই রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

তবে এরও আগে গত ২৭ আগস্ট ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরো আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে সে আদেশটি প্রতিপালন না হওয়ায় এ রিট দায়ের করা হয় বলে জানান তার আইনজীবীরা।

পরে সারা হোসেন জানিয়েছিলেন, আমাদের কারাবিধি অনুযায়ী বিচারাধীন কারাবন্দিদের দুই ধরনের শ্রেণিতে রাখা হয়। প্রথম শ্রেণি ও দ্বিতীয় শ্রেণি। সেখানে বলা আছে, কারও সামাজিক বা শিক্ষগত যোগ্যতার কারণে তাকে প্রথম শ্রেণির কারাবন্দি হিসেবে গণ্য করা যায়। ড. শহিদুল আলমের পক্ষে গত ২৭ আগস্ট আমরা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তাকে প্রথম শ্রেণির ডিভিশন চেয়ে একটি আবেদন করেছিলাম। আদালত তখন ডিভিশনের আদেশ দিলেও তা প্রতিপালন হয়নি। তাই আমরা তার ডিভিশন চেয়ে হাইকোর্টে একটি আবেদন জানাই। সিই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট শহিদুল আলমকে ডিভিশন দিতে নির্দেশ দেন। তাৎক্ষণিকভাবেই তাকে এই ডিভিশন সুবিধা দিতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা ড. শহিদুল আলম নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলন নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন। ওই ঘটনায় রমনা থানার তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। গত ৬ আগস্ট ডিবি (উত্তর) পরিদর্শক মেহেদী হাসান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

পরে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের (পরিদর্শক) আরমান আলী। শহিদুলের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন ও জোতির্ময় বড়ুয়া রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়। পরে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক শহিদুল আলমকে সাত দিনের রিমান্ডে রাখার আদেশ দেন। এরপর গত ২৮ আগস্ট হাইকোর্টে শহিদুল আলমের জামিন বিষয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। কিন্তু হাইকোর্ট সে জামিন আবেদন শুনতে বিব্রত প্রকাশ করেন। ফলে নিয়ম অনুসারে আবেদনটির শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি নতুন বেঞ্চ গঠন করে দেন। এরপর নতুন বেঞ্চে আবেদনটির শুনানি শেষে শহিদুল আলমকে প্রথম শ্রেণির ডিভিশন প্রদানের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সেই আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ।