বুধবার , ১৫ জানুয়ারি ২০২০ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

শতভাগ বিদ্যুৎ-গ্রাহক প্রি-পেইড মিটার পাচ্ছেন কবে?

নিউজ ডেস্ক
জানুয়ারি ১৫, ২০২০ ৯:৫৮ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

দেশের বিদ্যুৎ গ্রাহকের সংখ্যা তিন কোটি ৬০ লাখ। এরমধ্যে প্রিপেইড মিটারে বিদ্যুৎসেবা নিচ্ছেন মাত্র ৩১ লাখ গ্রাহক। আর ৩ কোটি ৩০ লাখ গ্রাহক এখনও প্রি-পেইড মিটারের বাইরেই রয়ে গেছেন। সরকারের পরিকল্পনা বলছে, ২০২৫ সালের মধ্যে সব গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটারে বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু মাত্র পাঁচ বছরে ৩ কোটি ৩০ লাখ গ্রাহকের ঘরে প্রি-পেইড মিটার পৌঁছানো সম্ভব কিনা, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরাই।

উৎপাদিত বিদ্যুতের সদ্ব্যবহার ও অপচয় রোধে  স্বয়ংক্রিয় বিলিং সুবিধা সৃষ্টি করার জন্য ২০১১ সালে প্রি-পেইড মিটার চালু করা হয়। বর্তমানে প্রি-পেইড মিটার আরও আধুনিকায়ন করে অন-লাইন স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।

বিতরণ কোম্পানিগুলো  প্রি-পেইড মিটার সংযোগের পাঁচ বছরে ৩০ লাখ মিটার সংযোগ দিতে পেরেছে। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে অনেকটা দ্রুত গতিতে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। সেই হিসাবে পাঁচ বছর পেরিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে মাত্র ৩১ লাখ গ্রাহক পেয়েছেন প্রি-পেইড মিটার। পরন্তু প্রতিমাসে ৩ লাখ নতুন গ্রাহক যোগ হচ্ছেন। ৬টি বিতরণ কোম্পানি আর তিন কোটি ৩০ লাখ গ্রাহক ধরে বাকি সময় হিসাব করলে প্রতিটি কোম্পানির বছরে মিটার লাগাতে হয় ১১ লাখ। কিন্তু কোনও কোম্পানিই পাঁচ লাখের বেশি মিটার লাগানোর পরিকল্পনা করছে না। অর্থাৎ এই হারে কাজ করলে গ্রাহকের ঘরে প্রি-পেইড মিটার দিতে আরও পাঁচ বছর অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হবে।

বিতরণ কোম্পানিতে সাধারণ মিটার ও প্রি-পেইড মিটার—দুই ধরনের মিটারেই বিদ্যুৎসেবা দেওয়া হচ্ছে। ফলে সেবার তারতম্যের পাশাপাশি প্রি-পেইড মিটার ব্যবহারকারীরা বিদ্যুৎ ব্যবহারের পর আর অন্য গ্রাহক বিদ্যুৎ ব্যবহারের পর বিল দিচ্ছে। এর ফলে গ্রাহকের মধ্যেও অসন্তোষ রয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগ-সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা বা কোম্পানির  এই পর্যন্ত ৩১ লাখ ৫ হাজার ৪১০টি প্রি-পেইড মিটার বসিয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) করে ১১ লাখ ৪৫ হাজারটি, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (পবিবো) ১০ লাখ ১০ হাজার ৫১৮টি, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) ৪ লাখ ৪১ হাজার ৫১৯, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) ২ লাখ ৯৩ হাজার ৮৩৮টি, ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) ১ লাখ ৯৫ হাজার ৫৯১টি, নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) ১৮ হাজার ৮৯৪টি।

বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকার ২০২০ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে চায়। এজন্য সরকার বিদ্যুৎ খাতে অগ্রাধিকার দিতে এ খাতের উন্নয়নে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। পাশাপাশি এসব কর্মসূচি তদারকির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি সরকার বিদ্যুতের সাশ্রয়ী, দক্ষ, নিরাপদ ও টেকসই ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করছে।’ তিনি বলেন, ‘গ্রাহকসেবার মান বাড়াতে এই খাতকে আধুনিকীকরণ, ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর ও গ্রাহকবান্ধব করার পদক্ষেপ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমানো, রাজস্ব আয় বাড়ানো, ত্রুটিপূর্ণ বিলিং ব্যবস্থা বাদ দেওয়ার মাধ্যমে গ্রাহকসেবার মান বাড়াতে চায় সরকার। এজন্য দেশব্যাপী প্রি-পেইড মিটার অথবা স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, এই প্রি-পেইড মিটার বসানোর জন্য কারিগরি স্পেকিফিকেশন প্রণয়ন, বাংলাদেশ ট্যারিফ কাঠামোর উপযোগী সফটওয়ার উন্নয়ন, প্রি-পেইড মিটারিং কার্যক্রম বাস্তবায়ন, পরিচালন ও ডাটা সংরক্ষণের জন্য সংস্থাভিত্তিক মাস্টার ইনফরমেশন সেন্টার এবং কেন্দ্রীয়ভাবে সেন্ট্রাল ডাটা সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘দ্রুত গতিতে কাজ করতে চাইলে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে মিটার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। তবে, সেক্ষেত্রে মান নিয়ন্ত্রণসহ সব ধরনের তদারকি থাকতে হবে সরকারের হাতেই। এজন্য দরকার হলে আলাদা একটি স্বাধীন সংস্থাও গঠন করতে পারে সরকার।’ তিনি বলেন, ‘একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আমাদের সংযোগ দেওয়া অব্যাহত থাকবে। শতভাগ বিদ্যুতায়নের পর ২ বা ৩ শতাংশ হারে প্রতিবছর বিদ্যুৎ সংযোগ বাড়বে।’ এই সময়টায় প্রি-পেইড মিটারের ওপর আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন তিনি।

 

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর