লোকসানের কবলে পত্নীতলার মৎস্য চাষীরা

কাজী কামাল হোসেন:
আদিকাল থেকে শুনে আসছি যে, আমরা মাছে ভাতে বাঙ্গালী, আর এই মাছ ই আমাদের আমিষের চাহিদা মেটাতে ব্যপক ভূমিকা রাখে। বর্তমান সময়ে দেশিয় জাতের মাছ বাজারে খুবই কম দেখা যায়, তাই চাষকরা মাছের উপরই নির্ভর করছে মানুষের প্রটিন চাহিদা।

টেংরা,শিং,আইড়, বোয়াল,পাবদা,পাতাশি সব মাছ এখন চাষ হচ্ছে। আর পাঙ্গাস হচ্ছে অল্প আয়ের মানুষের একটি প্রিয় মাছ, দাম কম হওয়াই তাদের উপার্জনের সাথে সঙ্গতি রেখে কিনতে পারে। অপর দিকে চাষীরাও অল্প সময়ে বেশী লাভ করতে পারে এ মাছ চাষ করে।

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার মৎস্য চাষীরা পাঙ্গাস চাষ করে এবার গুনতে হবে লাভের বদলে লোকসান। কিছু দিন আগে টানা শৈত্যপ্রবাহ ও হিমেল হাওয়ার কারনে পুকুরে পাঙ্গাস মাছে দেখা দিয়েছে ভাইরাস জনিত রোগ, মরে যাচ্ছে হাজার হাজার পাঙ্গাস, উপজেলার পাঙ্গাস চাষীরা এখন চরম বিপাকে।

সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার নাদৌড় গ্রামে মৎস্যচাষী সাগর হোসেন (২৫) পিতা-মহাতাব আলী এর পুকুরে পাঙ্গাস মাছ মরার দৃশ্য, মাছগুলোর গায়ে শেওলা জমে আছে, চোখ ও মুখ ফোলা এবং ঘাঁ ফুটেছে, পানির উপরি ভাগে ভেসে উঠে,চিত হয়ে যাচ্ছে এর পর একটু নরা চড়া করে নিস্তেজ হয়ে পড়ছে।

সাগর হোসেন জানান তার এই পুকুরের আয়তন এক একর হবে সেখানে সে অধিক লাভের আসায় এবার পঙ্গাস চাষ করছেন, শীতের কারনে হঠাৎ করে এ অবস্থার শীকার হন। ৭০০০ পাঙ্গাস চাষ করে এই পুকুরে বর্তমানে মাছ গুলো প্রত্যেকটি ৫০০-১০০০গ্রাম ওজন হয়েছে। ৭০০০ মাছের মধ্যে প্রায় ৪০০০মাছই মারা গেছে গত তিন দিনে।

সাগর হোসেন জানান আমার নিজের পুজি খুব অল্প তাই বিভিন্ন এন জি ও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহন করে আমি পাঙ্গাস চাষ করে ছি বেশী লাভের আশায় এখন পাওনাদারের ঋণ ও ফিডের দোকানের বাকি কিভাবে পরিশোধ করবো তার কোন কূল কিনারা পাচ্ছি না।

উপজেলার এক মৎস্য চাষী ও মাছ আাড়ৎদার আবু বক্কর জানান, তার মোট চাষকৃত ৯টি পুকুরের মধ্যে ৪টি পুকুরে প্রায় ৪০ হাজার পাঙ্গাস মারা গেছে। এছাড়াও নূধনীর আকবর, বাগমারের জুয়েল সহ উপজেলার অনেক মৎস্যচাষীর পুকুরেই পাঙ্গাস মরে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চাষীরা আমাকে জানায়নি। তারা জানালে আমরা পরিদর্শন করে পরামর্শ দিবো। প্রচন্ড শীতের কারনে এমনটা হতে পারে বলে তিনি জানান।
স/শ