লেবুখালী ফেরিঘাটে গাড়ি ও যাত্রী পারাপারে দুর্ভোগ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের লেবুখালী ফেরিঘাটে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রী এবং যানবাহন চালকরা। ঘাটের দুই প্রান্তের সড়কে লাগাতার বৃষ্টির কারণে কাদা জমছে। ফলে হেঁটে যাত্রীরা ফেরিঘাটে যেতে পারেন না। হালকা ও ভারি যানবাহন চালাকরাও ফেরিতে ওঠা-নামা করতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। ফেরিঘাটটির দক্ষিণ প্রান্ত পটুয়াখালী এবং উত্তর প্রান্ত বরিশাল সড়ক বিভাগের আওতাধীন। বর্ষা শুরুর পর থেকে গুরুত্বপূর্ণ এ ঘাটটির অবস্থা বেহাল হলেও টেকসই কোনো সংস্কার কাজ করছে না সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে সড়ক বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, পায়রা নদীর ওপর লেবুখালী সেতুর নির্মাণ কাজের কারণে ফেরিঘাট সংলগ্ন সড়কে বৃষ্টি হলেই কাদা জমে যায়।

বৃহস্পতিবার লেবুখালী ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, উত্তর প্রান্তে পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার অংশে এবং দক্ষিণ প্রান্তে বরিশালের বাকেরগঞ্জ অংশে ফেরিতে ওঠা-নামার জন্য প্রায় ৬০০ মিটার সংযোগ সড়ক কাদায় একাকার। উভয় প্রান্তে সেতুর নির্মাণ কাজ চলছে। সেতুর পাইলিং কাজের জন্য মাটি খুঁড়ে রাখা হয়েছে সংযোগ সড়কের পাশে। লাগাতার বৃষ্টিতে ওই মাটি গিয়ে জমছে সংযোগ সড়কে। ফলে প্রতিদিন যাত্রী ও যানবাহন চালকরা ভোগান্তিতে পড়ছেন।

ঘাটের লেবুখালী প্রান্তের ব্যবসায়ী জলিল ফরাজি বলেন, যাত্রীরা ঘাটে নামতে না পারায় দুই প্রান্তের ব্যবসায়ীদের বেচাকেনায় ভাটা পড়েছে। খাবার হোটেল মালিকরা খুবই দুরবস্থার মধ্যে পড়েছেন। তিনি বলেন, সেতুর নির্মাণ কাজের জন্য মাটি খোঁড়াখুঁড়ির কারণে ঘাটের এমন দুরবস্থা। সড়ক ও জনপথ বিভাগ অথবা ঘাটের ইজারাদার এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার যাত্রী ঝালকাঠির রেজাউল করিম বলেন, প্রতিদিন লেবুখালী ফেরি পার হয়ে কুয়াকাটা যান কয়েক হাজার যাত্রী। দুই শতাধিক বাস ও মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন এ ফেরি পার হয়। কিন্তু সংযোগ সড়কে কাদা জমার কারণে যাত্রীদের কষ্ট হচ্ছে। যানবাহন চালকরাও ঝুঁকির মধ্যে গাড়ি নিয়ে ফেরি থেকে ওঠা-নামা করছেন।বাসচালক ইউনুস আলী জানান, শুধু সংযোগ সড়কে কাদার দুর্ভোগই নয়, নদীতে পানি বাড়লে ঘাটের উভয় প্রান্তের গ্যাংওয়ে ডুবে যায়। ঘাটের উভয় প্রান্তে এ কারণে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে।

লেবুখালী প্রান্তে সাকুরা পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার আলমগীর হোসেন বলেন, বর্ষার আগে সড়ক বিভাগ কিংবা ইজারাদার সংযোগ সড়কের দুই পাশে বালুর বস্তা ফেলে রাখলে ঘাটের এমন বেহল দশা হতো না।

ফেরিঘাটের ইজারাদার প্রতিষ্ঠান প্রাইম এনার্জির ঘাট সুপারভাইজার আব্দুল কুদ্দুস বলেন, পায়রা সেতুর গার্ডারপাইল করতে গিয়ে সংযোগ সড়কের পাশে রাখা মাটির স্তূপ থেকে এমন কাদার সৃষ্টি হয়েছে। সেতুর স্বার্থে সবাই সাময়িক এ অসুবিধা মেনে নিচ্ছেন। বৃষ্টি কমলে ঘাটের এ অবস্থা থাকবে না।

পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ মো. শামস মোকাদ্দেস ও বরিশাল সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পঙ্কজ ভৌমিক বলেন, বর্ষা শুরুর পর থেকে প্রতিদিনই লেবুখালী ফেরিঘাটের সংযোগ সড়ক ও গ্যাংওয়েতে কমবেশি সংস্কারের কাজ হচ্ছে। সেতুর কাজের জন্য অতিরিক্ত বোঝাই ট্রাক চলাচল করছে। আবার সংযোগ সড়কের পাশে রাখা মাটিও বৃষ্টিতে ধুয়ে নামছে। এ কারণে সংযোগ সড়ক ও গ্যাংওয়ে ভালো রাখা যাচ্ছে না। তবে এ সমস্যা দীর্ঘদিন স্থায়ী হবে না।