লেনদেন আবারও হাজার কোটিতে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: 

ভোটের পর নতুন বছরে শেয়ারবাজারে সূচক ও লেনদেনের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে গতকাল রোববার দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই সূচকের বড় ধরনের উত্থান হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল দিন শেষে ৯৭ পয়েন্ট বা পৌনে ২ শতাংশ বেড়েছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকটি ২৬১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেড়েছে।

এ নিয়ে গত দুই দিন পরপর দুই বাজারেই সূচকের বড় ধরনের উত্থান ঘটেছে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গত দুই কার্যদিবসে ১৯১ পয়েন্ট এবং সিএসইর সার্বিক সূচকটি ৫৯১ পয়েন্ট বেড়েছে। দুই বাজারে গতকাল সূচকের বড় ধরনের উত্থান হলেও লেনদেনে ছিল ভিন্ন ভিন্ন অবস্থা।

ঢাকার বাজারে গতকাল দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২৭ কোটি টাকা, যা আগের কার্যদিবসের চেয়ে ১০২ কোটি টাকা বেশি। শুধু তা-ই নয়, গত ১৩ সেপ্টেম্বরের পর গতকালই ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়। ভোটের পর সূচক ও লেনদেনে যে ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়, তারই ধারাবাহিকতায় নতুন বছরে প্রথমবারের মতো লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। চট্টগ্রামের বাজারে গতকাল দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৫৩ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ১৭ কোটি টাকা কম।

মার্চেন্ট ব্যাংক আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকালের বাজারে সূচকের বড় উত্থানের পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল ব্যাংক, ওষুধ ও খাদ্য খাতের কোম্পানিগুলোর। আর একক কোম্পানি হিসেবে সূচকে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ছিল অলিম্পিক, স্কয়ার ফার্মা ও গ্রামীণফোনের। আইডিএলসির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে গতকাল লেনদেন হওয়া আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলোর প্রতিটির শেয়ারের দাম গড়ে ২ দশমিক ৪ শতাংশ, লেনদেন হওয়া প্রতিটি ব্যাংকের শেয়ারের দাম গড়ে ২ দশমিক ২ শতাংশ, টেলিকম খাতের প্রতিটি কোম্পানির শেয়ারের দাম গড়ে ২ দশমিক ১ শতাংশ করে বেড়েছে।

কয়েক দিনের টানা উত্থানের ফলে গতকাল দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬৮৭ পয়েন্টে। নতুন বছরে সূচকটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ৫ হাজার ৩৮৬ পয়েন্টের অবস্থান থেকে। চট্টগ্রামের বাজারের সার্বিক সূচকটি গতকাল দিন শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৪৫৫ পয়েন্টে।

আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাজারে অনেক বিনিয়োগকারী নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছিলেন। দেশজুড়ে বড় ধরনের কোনো সহিংসতা ছাড়া নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ায় নিষ্ক্রিয় বিনিয়োগকারীরা আবারও সক্রিয় হতে শুরু করেছেন। যার প্রভাব সূচক ও লেনদেনে দেখা যাচ্ছে। গতকাল দিন শেষে ঢাকার বাজারে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ হাজার কোটি টাকা, যা বাজারের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। তবে গত কয়েক দিনের টানা উত্থানে বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বেড়েছে। তাতে অনেকেরই ভালো মুনাফা হয়েছে। এই মুনাফা তুলে নেওয়ার প্রবণতা বাড়লে তাতে বাজারে কিছুটা মূল্য সংশোধন হতে পারে। যেটি খুবই স্বাভাবিক প্রবণতা।

ঢাকার বাজারে গতকাল ৩০টি ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়। তার মধ্যে ২৮টিরই দাম বেড়েছে, কমেছে একটির আর অপরিবর্তিত ছিল একটির দাম। ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতের লেনদেন হওয়া ২৩টির মধ্যে ২০টির, ওষুধ খাতের লেনদেন হওয়া ৩১ কোম্পানির মধ্যে ২৩টির এবং খাদ্য খাতের লেনদেন হওয়া ১৭টির মধ্যে ১০টির দাম বেড়েছে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল বিমা খাত। ডিএসইতে গতকাল মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে প্রথম দুটিই ছিল বিমা খাতের জনতা ইনস্যুরেন্স ও ইউনাইটেড ইনস্যুরেন্স। দুই কোম্পানিরই শেয়ারের দাম এদিন ১০ শতাংশ করে বেড়েছে। এর মধ্যে জনতার শেয়ারের দাম দেড় টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১৬ টাকায়। আর ইউনাইটেড ইনস্যুরেন্সের শেয়ারের দাম ৩ টাকা ১০ পয়সা বেড়ে উঠেছে ৩৪ টাকা ১০ পয়সায়। গত ২৭ ডিসেম্বর থেকে ইউনাইটেড ইনস্যুরেন্সের শেয়ারের দাম টানা বাড়ছে।