শুক্রবার , ১১ আগস্ট ২০১৭ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

লেখাপড়া করে যে, আত্মহত্যা করে সে

নিউজ ডেস্ক
আগস্ট ১১, ২০১৭ ২:৫৭ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: বুকশেলফে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নৌকাডুবি’ যেমন রয়েছে, তেমন রয়েছে অদ্বৈত মল্লবর্মনের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। বুধবার সন্ধ্যায় ওই ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছিল শ্রাবন্তী মিত্রের দেহ। দমদমের পশ্চিম রবীন্দ্রনগরের বধূটির বয়স মাত্র ২৫!

বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুরের হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে মৃতার মা সুপ্রীতি বসু বলেন, ‘‘মেয়ে আমার পড়তে চেয়েছিল। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ করার পরে গবেষণার ইচ্ছে ছিল। শ্বশুরবাড়ির লোকেদের মত ছিল না। বিয়ের পর থেকে আমার মেয়ের ওপরে নানা কারণে অত্যাচার চালাত।’’ পরিবারের দাবি, নানা টালবাহানায় এমএ’র মার্কশিট আনতে যেতে চায়নি স্বামী। তাই এদিন একাই মার্কশিট আনতে যাওয়ার কথা ছিল বাংলার ছাত্রী শ্রাবন্তীর।

মৃতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামী বিশ্বদেব মিত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিন তাঁকে আদালতে তোলা হলে সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (জোন টু) ধ্রুবজ্যোতি দে বলেন, ‘‘অভিযোগপত্রে স্বামী ছাড়া আরও দু’জনের নাম রয়েছে। পণের জন্য হত্যার ধারা দেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’

গত ফেব্রুয়ারি মাসে মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা শ্রাবন্তীর সঙ্গে বিয়ে হয় বিশ্বদেবের। মৃতার মা তাঁর ছোট কন্যার উপরে অত্যাচারের যে অভিযোগ করেছেন, সেখানে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ বড় জা’য়ের বিরুদ্ধে। সুপ্রীতির কথায়, ‘‘দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে জামাই এবং বড় জা মিলে নার্সিংহোমে গর্ভপাত করিয়েছে। আমাদের কিছু জানায়নি। ডাক্তার বলেছিলেন, তিন মাস পর আবার মা হতে পারবে বান্টি। এ মাসে তিন মাস পূর্ণ হচ্ছিল। তার আগেই আমার মেয়েটাকে শেষ করে দিল।’’

পরিবারের দাবি, গত দু’মাস ধরে শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচারের কথা বাড়িতে জানাচ্ছিলেন শ্রাবন্তী। সম্প্রতি দিদিকে একটি ছবি পাঠিয়েছিলেন তিনি। মৃতার বাবা হরিপদ ঘোষ বলেন, ‘‘বড় জা যে চাকু ছুড়ে মেরেছে, সেই ছবি পাঠিয়েছিল মেয়ে।’’ ওই ছবি পাওয়ার পরে বুধবার বিকেলে পশ্চিম রবীন্দ্রনগরে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি যান শ্রাবন্তীর মা এবং ঘোষ পরিবারের বড় জামাই।

সুপ্রীতি জানান, শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁদের ঘিরে ধরে কথা শোনাচ্ছিলেন। সেই ফাঁকে কখন মেয়ে উঠে গিয়েছে, তা খেয়াল করেননি তাঁরা। সুপ্রীতির কথায়, ‘‘শ্বশুরবাড়ির লোকেরা যখন মেয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছিল, বান্টি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়েছিল। একসময় আমার বড় জামাই বলল, বান্টি বাড়ি চল। কিন্তু ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল বান্টি নেই। দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে ওপরের ঘরে ওঠে জামাই সকলকে ডাকল।’’ এরপর দরজা ভেঙে ওড়নার ফাঁস লাগানো শ্রাবন্তীর দেহ উদ্ধার করা হয়।

পরিবারের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মৃতার শ্বশুর প্রদীপ মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘মারধরের অভিযোগ মিথ্যা। বৌমা পড়তেও চায়নি। ফলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার প্রশ্ন ওঠে না।’’ উল্টে তাঁর দাবি, ‘‘প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার উত্তেজিত হয়ে পড়ত শ্রাবন্তী।

গত মঙ্গলবারও গভীর রাত পর্যন্ত জেগেছিল। গায়ে ওড়না থাকা সত্ত্বেও আরেকটা ওড়না বার করছে দেখে আমার ছেলে জিজ্ঞেস করে, ওড়না দিয়ে কী করবে? বৌমা বলেছিল, সকালে কাচব। সে জন্য বার করছি। অত রাতে একাজ! ভাবুন!’’ অসুস্থ অবস্থায় পড়ে গিয়ে শ্রাবন্তীর গর্ভপাত হয়েছিল বলেও দাবি প্রদীপের। সূত্র: এবেলা

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর