লালপুরে বিধবা ছখিনাকে মৃত দেখিয়ে বয়স্ক ভাতা বন্ধের অভিযোগ

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি:

নাটোরের লালপুরে ছখিনা বেগম (৮৪) নামে এক বিধবা নারীকে মৃত দেখিয়ে বয়স্কভাতা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি উপজেলার ঈশ্বরদী ইউনিয়নের নুরুল্লাপুর গ্রামের দনি প্রামানিকের মেয়ে। একই গ্রামের মৃত আ. সাত্তারের স্ত্রী।

রোববার (১৩ নভেম্বর) ছখিনা বেগম বলেন, হঠাৎ আগস্ট মাস থেকে তাঁর মুঠোফোনে টাকা আসা বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাটি জানতে আমি সমাজসেবা অফিসে খবর নিতে গেলে তারা জানায় ‘আমি মরে গেছি’। তাই ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে।

ঈশ্বরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ রঞ্জু স্বাক্ষরিত মৃত্যু সনদে দেখা যায়, উপজেলার নূরুল্লাপুর গ্রামের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দনি প্রামানিকের মেয়ে ছখিনা বেগম বার্ধক্য জনিত কারণে ৮ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মৃত্যু দেখিয়ে বয়স্কভাতা বন্ধের জন্য উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে মৃত্যুর সনদ জমা দেওয়া হয়েছে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়,

ওই নারীকে মৃত দেখিয়ে তার বয়স্ক ভাতা বন্ধ করে টাকার বিনিময়ে অন্য একজনের নামে ভাতা করে দেওয়ার জন্য সমাজসেবা অফিসে আবেদন করা হয়। অথচ বিধবা ওই নারী সরকারের সামাজিক নিরাপত্তার কর্মসূচির আওতায় বয়স্ক ভাতা সুবিধা পেয়ে আসছিলেন। চেয়ারম্যান কতৃক মৃত্যু সনদ দেওয়ার কারণে তার ভাতা সুবিধা বন্ধ হয়ে যায়।
ভুক্তভোগীর নাতি শিমুল হোসেন বলেন, হঠাৎ আগস্ট মাস থেকে তাঁর নানীর মুঠোফোনে টাকা আসা বন্ধ হয়ে গেলে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে যান। ভাতা বন্ধের কারণ জানানো হয়, ঈশ্বরদী ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ মৃত উল্লেখ করে দরখাস্ত দিয়ে ভাতা বন্ধ করে দিয়েছেন। কর্মকর্তারা বলেন, চেয়ারম্যান নতুন করে আবার জীবিত দেখিয়ে দরখাস্ত দিলে সমস্যার সমাধান হতে পারে।

ঈশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ রঞ্জু বলেন, ভুলবশত এটা হয়ে গেছে। ওই নারীর ভাতা পুনর্বহালের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মোত্তালেব সরকার বলেন, ভাতা সুবিধাভোগীর মৃত্যুতে তার কার্ড বাতিল করা হয়। ঈশ্বরদী ইউপি চেয়ারম্যান ছখিনা বেগমের মৃত্যুর সনদ জমা দেওয়ায় ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা সুলতানা বলেন, এ ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভাতা বরাদ্দ কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ইসাহাক আলী বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এস/আই