লবিস্ট নিয়োগ ইস্যুতে সংসদে উত্তাপ

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:  বিদেশে সরকারবিরোধী প্রচারণার জন্য বিএনপি -জামায়াত লবিস্ট নিয়োগ করেছে দাবি করে সে লবিস্ট নিয়োগের ব্যয়ের হিসাব তদন্তের দাবি জানিয়েছেন সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রেসিডেন্টের ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাকালে এসব কথা বলা হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে সংসদের চলতি অধিবেশনে ভাষণ দেয়ার জন্য প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে।

চলতি অধিবেশনের প্রথম দিন গত ১৬ জানুয়ারি একাদশ সংসদের ষোড়শ অধিবেশনের শুরুর দিন সংবিধানের বিধান অনুযায়ী ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্টের ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব সমর্থন করেন সরকারি দলের সদস্য মো. শামসুল হক টুকু। প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং সরকারি দলের সদস্য নাজিম উদ্দিন আহমেদ, অসীম কুমার উকিল, আনোয়ারুল আবেদীন খান, আমিরুল আলম মিলন, বেগম উম্মে কুলসুম স্মৃতি ও খালেদা খানম।

আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বিএনপি-জামায়াত গত ৫ বছরে যতগুলো লবিস্ট ফার্মের নিয়োগ করেছে, প্রতিটির কন্ট্রাক আছে। প্রতিটির টাকা পয়সার হিসাব আছে, কে দিয়েছেন, কোন অ্যাকাউন্টে নিয়েছেন সবকিছু আছে। এটার তদন্ত দাবি করতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপির এই টাকার খেলা বন্ধ করতে হবে। চিরতরে বন্ধ করতে হবে।

বিএনপি দলের সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের বক্তব্যের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিনি (হারুন) বলেছেন, জানা সত্ত্বেও মিথ্যাকে গোপন করিও না। তিনিই তার রাজনৈতিক জীবনে সেটা প্রতিপালন করছেন? তিনি মুসলমান হিসেবে যদি দাবি করে থাকেন, তাহলে সেই মিথ্যাগুলো যেন তারা গোপন না করেন। এই অধিবেশনে যেন তার দলের কু-কর্মগুলো ও তার নেতাদের মিথ্যাচারগুলো প্রকাশ করেন।

শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা তো জানি, বিএনপি স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জন করেছে। তাহলে তিনি (হারুন) তার প্রার্থী, আমার প্রার্থী বলেন কি করে? তিনি কি দল পাল্টেছেন? রাজশাহীর প্রতিটি উপজেলাতে বিএনপি‘র প্রার্থী ছিল। তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জে একটি অভূতপূর্ব নির্বাচন হয়েছে। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট হলে দ্রুততার ফলাফল প্রকাশ করা যায়। ইভিএম‘র মাধ্যমে স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে যে নির্বচান করা সম্ভব সেটি মাহবুব তালুকদারের মতো নির্বাচন কমিনারও বলেছে।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ে’র নেতৃত্বে গত সাড়ে ১৩ বছরে তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের ভাষণে গত সাড়ে ১৩ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে একটি প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মর্যাদার সাথে মাথা উচুঁ করে দাঁড়িয়েছে, তা সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এ উত্তরণ বিশ্বের অনেক দেশের কাছে অনুকরণীয় হচ্ছে। নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার দিকে দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে চলেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

করোনা মহামারি সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা ও শিক্ষার্থীদের জন্য টিকার ব্যবস্থা করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তিনি বলেন, দেশের ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬৪ ভাগকে করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সর্বত্র স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে টিকা দেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, শিক্ষাখাতে গুণগত পরিবর্তনের বিষয়টি প্রেসিডেন্টের ভাষণে উঠে এসেছে। অথচ বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে একজন প্রতিমন্ত্রী নকল প্রতিরোধের নামে হেলিকপ্টারে সারাদেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন। আরেকজন উপমন্ত্রী গ্রেনেড হামলায় জড়িত ও জঙ্গিবাদের সম্পৃক্ত ছিলেন। ফলে শিক্ষা ব্যবস্থায় বিপর্যয় নেমে আসে। এখন বঙ্গবন্ধুর দর্শনকে সামনে রেখে দেশে বিশেষায়িত শিক্ষা এগিয়ে চলেছে।

সুত্র : দৈনিক ইনকিলাব