লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ কোটি, আদায় হয়েছে ৯৫ কোটি

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিলি দিয়ে চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় তিন গুণ রাজস্ব আদায় হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্তৃক নির্ধারিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৪ কোটি টাকা। কিন্তু এই সময়ে হিলি বন্দরে রাজস্ব আয় হয়েছে ৯৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। এ বন্দর দিয়ে পাথর ও চালের আমদানি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকার কারণেই রাজস্ব আয় বেশি হয়েছে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, রফতানির ক্ষেত্র সব প্রতিবন্ধকতা দূর করা গেলে  রাজস্ব আরও বাড়বে।

হিলি স্থলবন্দর শুল্কস্টেশন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগের কয়েকটি অর্থবছরে এনবিআরের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় চলতি অর্থবছরে এই স্থলবন্দরের জন্য রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ৪৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অথচ এই বছরে এসে প্রথম আট মাসেই গোটা বছরের জন্য নির্ধারণ করে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বিগুণ রাজস্ব আহরিত হয়েছে।

জানা গেছে, এই অর্থবছরের প্রতি মাসেই নির্ধারিত রাজস্বের তুলনায় বেশি অর্জিত হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য অক্টোবর মাস। এ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। অর্জিত হয়েছে ৯ কোটি ৯৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ডিসেম্বরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অর্জিত হয়েছে ১১ কোটি ৪৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। জানুয়ারিতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অর্জিত হয়েছে ২৬ কোটি ৪৫ লাখ ২৭ হাজার টাকা। ফেব্রুয়ারিতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ কোটি টাকা। অর্জিত হয়েছে ২১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে প্রথম আট মাসে ৩৪ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে দেশে বেশিরভাগই খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পণ্য, পেঁয়াজ, চাল, গম, ভুট্টা, খৈল, ভুষি, কাঁচামরিচ আমদানি হয়ে থাকে। সম্প্রতি দেশে পদ্মাসেতু, রুপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে পাথরের চাহিদা বেড়েছে বলে ভারত থেকে পাথরও আমদানি হচ্ছে। এছাড়া, দেশে চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার কারণে চালের আমদানিও বেড়েছে। এসব কারণে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও বেড়েছে।’

হারুন উর রশীদ আরও বলেন, ‘হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সব প্রতিবন্ধকতা দূর করা গেলে এ বন্দরে আমদানি আরও বাড়বে এবং তাতে আরও বেশি রাজস্ব আহরণ হবে।’

হিলি স্থল শুল্কস্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর থেকে এনবিআরের নির্ধারণ করে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় তিনগুণ রাজস্ব আয় হয়েছে। বর্তমানে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমাণে পাথর আসছে। রাজস্ব আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এটি ইতিবাচক প্রভাব রেখেছে। পাশাপাশি সম্প্রতি ভারত থেকে চালের আমদানির পরিমাণ বাড়ার কারণেও রাজস্ব অনেকটাই বেড়েছে।’

 

সূত্র: বাংলাট্রিবিউন