সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রী এলাকা থেকে ইমাম মেহেদী হাসান ওরফে আবু জিব্রিলকে (৩০) গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গ্রেফতার মেহেদী র্যাম্প মডেল থেকে জেএমবির ‘ব্রিগেড আদ-দার-ই কুতনি’র কমান্ডার হয়ে ওঠেন বলে জানিয়েছেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় কারওয়ানবাজারস্থ র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
এর আগে বুধবার দক্ষিণ বনশ্রী থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব।
মেহেদী বেসরকারি দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ সম্পন্ন করে কিছু দিন র্যাম্প মডেলিংয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, র্যাম্প মডেল হওয়ার ইচ্ছা ছিল ইমাম মেহেদী হাসান ওরফে আবু জিব্রিলের। বেশ কয়েকটি প্রতিযোগিতায় অংশও নেন তিনি। তবে ২০১৫ সালে সারোয়ার-তামিম গ্রুপের সংস্পর্শে পাল্টে যায় তার জীবন। র্যাম্প মডেল থেকে হয়ে ওঠেন জেএমবির ‘ব্রিগেড আদ-দার-ই কুতনি’র কমান্ডার।
তিনি বলেন, জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের দুটি অপারেশনাল ব্যাকআপ ব্রিগেডের খোঁজ পেয়েছে র্যাব। গ্রুপ দুইটি হলো- ‘বদর স্কোয়াড ব্রিগেড’ ও ‘ব্রিগেড আদ্-দার-ই-কুতনি’। এদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বদর স্কোয়াডের কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়লেও নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল ব্রিগেড আদ্-দার-ই-কুতনি।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত ইমাম মেহেদী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমাদের জানিয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের সঙ্গে সম্পৃক্ত। গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারী নিহত নিবরাসসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ জঙ্গির সঙ্গে তার সরাসরি যোগাযোগ ছিল।
তিনি বলেন, ইমাম মেহেদী হাসান মূলত জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের কর্মী সংগ্রহ, অর্থ সংগ্রহ, জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধকরণ ও হিজরতের পূর্ব প্রস্তুতিমূলক পর্ব সম্পন্ন করার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অব্যাহত অভিযানে জঙ্গিরা কোণঠাসা হয়ে পড়লে সে সারোয়ার-তামিম গ্রুপের রিজার্ভ হিসেবে রক্ষিত ‘ব্রিগেড আদ দার-ই-কুতনি’র কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং কর্মী সংগ্রহে নিয়োজিত হয়।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, কর্মী সংগ্রহের পর তাদের আনুগত্য পরীক্ষা করে ঢাকা, টাঙ্গাইল ও রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকজনকে শপথ (বাইয়াত) পড়িয়েছিল জঙ্গি মেহেদী। শপথ নেয়া সদস্যদের জঙ্গি কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ করে আবারও জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করছিল সে। শুধু তাই নয় বাইয়াতের ভিডিওচিত্র ধারণ করে বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে উগ্রবাদী চ্যানেলে প্রচার করে অন্যদেরও জঙ্গিবাদী কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করা হতো।
র্যাব জানায়, ইমাম মেহেদী হাসান পটুয়াখালীর বাউফল থানার রাজাপুরের মো. খোরশেদ আলমের ছেলে। তার কাছ থেকে ২টি ল্যাপটপ, ১টি মোবাইল, ১টি পাসপোর্ট ও উগ্রবাদী বই উদ্ধার করা হয়। মেহেদীর বিরুদ্ধে বনানী ও উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা রয়েছে। এছাড়া আরেও বেশ কয়েকটি থানায় এই জঙ্গি নেতার বিরুদ্ধে মামলা আছে। যুগান্তর