রোহিঙ্গা সংকট: মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ চায় বাংলাদেশ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীএ কে আব্দুল মোমেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলেছেন তারা যেন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতের সাথে এক বৈঠকে মি. মোমেন এ’কথা বলেন।

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর দ্বিতীয় প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবার সাত দিন পরেই এই বৈঠক করা হয়।

কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের নেতারা বলছেন, তারা মিয়ানমারের নাগরিকত্ব এবং তাদের জান-মালের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত দেশে ফিরে যেতে চান না।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতদের বলেন, মিয়ানমার যাতে রোহিঙ্গাদের আশ্বস্ত করে, সে লক্ষ্যে অং সান সু চির সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা প্রয়োজন।

”রোহিঙ্গাদের নিশ্চয়তা দেবার দায়িত্ব মিয়ানমারের, বাংলাদেশের নয়,” মি. মোমেন বলেন।

”মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের আস্থা অর্জন করতে হবে,” বৈঠক শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন।

এদিকে সংবাদ সম্মেলন শেষে, বৈঠকে অংশ নেয়া কোন রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের কোন প্রতিক্রিয়া জানাননি। বৈঠকে মিয়ানমার এবং চীনের কোন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। তবে চীনের রাষ্ট্রদূত পরে আব্দুল মোমেনর সাথে আলাদাভাবে সাক্ষাৎ করেন।

মি. মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন যে ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের যারা নেতৃত্ব দেন, যারা ‘মাঝি’ নামে পরিচিত, তাদের ৫০-১০০জনেক মিয়ানমারে নিয়ে দেখানো হোক সেখানে পুনর্বাসন এবং নিরাপত্তার কী ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তাঁর প্রস্তাবের জবাবে বিদেশী রাষ্ট্রদূতরা কী জবাব দিয়েছেন, সেটা জানা যায়নি।

মিয়ানমারের রাখাইন (আরাকান) প্রদেশ থেকে মূলত মুসলিম রোহিঙ্গারা প্রথম বাংলাদেশে উদ্বাস্তু হয়ে আসে ১৯৭৮-৭৯ সালে। এরপর ১৯৯২-৯৩ সালে আরেক দফা শরণার্থী সংকট দেখা দেয়। এ’দুবারই বেশির ভাগ শরণার্থীকেই মিয়ানমার ফিরিয়ে নিয়েছিল।

কিন্তু ২০১৭ সালের ২৫শে অগাস্ট রাখাইনে নতুন সংকট সৃষ্টি হয় এবং কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় নয় লক্ষ শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

কক্সবাজারের দুইটি উপজেলা, টেকনাফ এবং উখিয়ায় মূলত তাদের জন্য শিবির গড়ে তোলা হয়েছে।

দু’বছরেও এই নতুন সংকটের কোন সমাধান না হওয়ায় বাংলাদেশের ভেতরে উদ্বেগ ক্রমশ: বাড়ছে।

অন্যদিকে, মিয়ানমার এখনো পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেবার কোন প্রতিশ্রুতি না দেয়ায় শরণার্থীদের কেউ ফিরে যেতে সম্মত হচ্ছে না।