রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা জন কেরির

মিয়ানমার থেকে দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি।

মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ভিন্ন পথে হাঁটছে বলেও মন্তব্য করে জন কেরি বলেছেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে যে মানবিকতার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে- তা প্রশংসনীয়। এই সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় কাজ করে যাবে বলেও আশ্বস্ত করেন বাইডেন প্রশাসনের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।

শুক্রবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মো‌মে‌নের স‌ঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জন কে‌রি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাতেই আমার আজকের এ ঢাকা সফর। বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে বাইডেন প্রশাসন এরইমধ্যে জলবায়ুবিষয়ক প্যারিস চুক্তিতে আবার যোগদান করেছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের একটি বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য জলবায়ু বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। এ বিষয়ে সবাইকে কার্যকরভাবে কাজ করতে হবে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনামলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী জন কেরি বলেন, বাইডেন প্রশাসন জলবায়ু বিষয়ে যে সম্মেলনের আহ্বান করেছে তার মূল উদ্দেশ্য হলো, সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করে সবুজ পৃথিবী প্রতিষ্ঠা করা। বাংলাদেশ জলবায়ুজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত একটি দেশ। জলবায়ুজনিত ক্ষতি মোকাবিলায় নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে কাজ করছে বাংলাদেশ, এ জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। আসন্ন সম্মেলনে বাংলাদেশ যোগ দেওয়ার উৎসাহ প্রকাশ করায় আমরা আনন্দিত। আমরা বিশ্বাস করি, সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করে বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিত করা যাবে।

শুক্রবার সকালে ভারতের দিল্লি থেকে মার্কিন বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ উড়োজাহাজে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। এ সময় তাকে অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ও তার স্ত্রী সেলিমা মোমেন। কয়েক ঘণ্টার সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাইডেন জলবায়ু বিষয়ে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আমন্ত্রণপত্র তুলে দেবেন।

২২ ও ২৩ এপ্রিল জলবায়ুবিষয়ক এ সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশ্বের ৪০ দেশের রাষ্ট্র কিংবা সরকারপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে ট্রাম্পের সরে আসার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সমস্যাকে কার্যত অস্বীকার করেছিল। বাইডেন ক্ষমতায় যাওয়ার পর প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশে ফের জলবায়ু চুক্তিতে যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তারপর এই ইস্যুতে মহামারির মধ্যে সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছেন বাইডেন।

বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অন্যতম। বাংলাদেশ ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সভাপতি। প্রধানমন্ত্রী পদাধিকার বলে এই দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান পার্টনার হলো ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ চীন।

সূত্র: যুগান্তর