ধর্ম ডেস্ক :
আল্লাহ তায়ালা ও নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর ঈমান আনার কারণে ইসলামের সূচনা লগ্ন থেকেই মুসলমানদের বিভিন্ন দুঃখ-দুর্দশা, নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।
মুসলমানদের ওপর কাফেরদের নির্যাতনের মাত্রা এতোটাই অসহনীয় ছিল যে, শেষ পর্যন্ত মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করতে বাধ্য হন মুসলমানেরা।
ইসলামের জন্য নিজস্ব ভূমির মায়া ত্যাগ করে মদিনায় গেলেও তাদের পৃথিবী থেকে উৎখাত করতে সদা তৎপর ছিল কাফেররা। মুসলামনাদের নির্মূল করতে মদিনাতেও কয়েক দফা যুদ্ধ করেছে মক্কার কাফেরেরা।
মদিনার জীবনের প্রথম ছয় বছর মদিনা রাষ্ট্রের ভিত্তি শক্তিশালী করতে বিভিন্ন যুদ্ধে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে মুসলমানদের।
দ্বিতীয় হিজরীতে বদর, তৃতীয় হিজরীতে উহুদ, চতুর্থ হিজরীতে বদরে সুগরা (ছোট বদর), পঞ্চম হিজরীতে খন্দক (একে গযওয়ায়ে আহযাবও বলা হয়) ও একই বছর বনী মুস্তালিকের যুদ্ধসহ (যাকে মুরাইসী যুদ্ধও বলা হয়) আরও বেশ কিছু যুদ্ধে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে মুসলমানদের।
এই যুদ্ধগুলো এবং যাত্রাপথের নিরাপত্তা না থাকার কারণে মুসলমানেরা বহির্বিশ্বে বিভিন্ন দেশের শাসক ও সম্রাটনের কাছে ইসলামের আহ্বান পৌঁছানোর কোনো সুযোগ পাননি।
৬ষ্ঠ হিজরিতে কুরাইশদের সঙ্গে মুসলমানদের হোদায়বিয়ার সন্ধিচুক্তি হয়। এর ফলে অবাধে চলাফেরা করার সুযোগ পান মুসলমানেরা। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাসূল সা. রোম, পারস্য, হাবশা, সিরিয়া ও ইয়ামানের সম্রাটদেরকে ইসলামের দাওয়াত-সম্বলিত পত্র লিখে পাঠিয়েছিলেন।
বিখ্যাত সাহাবী দাহইয়ায়ে কালবী রা.-এর মাধ্যমে তৎকালীন বিশ্বের পরাশক্তি রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াসের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। চিঠিটিতে তিনি লিখেছিলেন—
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ. مِنْ مُحَمَّدٍ عَبْدِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى هِرَقْلَ عَظِيمِ الرُّومِ. سَلاَمٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى، أَمَّا بَعْدُ فَإِنِّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الإِسْلاَمِ، أَسْلِمْ تَسْلَمْ، يُؤْتِكَ اللَّهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ، فَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الأَرِيسِيِّينَ وَ(يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَنْ لاَ نَعْبُدَ إِلاَّ اللَّهَ وَلاَ نُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَلاَ يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُولُوا اشْهَدُوا بِأَنَّا مُسْلِمُونَ)
বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম (দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে)। আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসুল মুহাম্মাদএর পক্ষ থেকে রোম সম্রাট হিরাকল এর প্রতি। ––শান্তি (বর্ষিত হোক) তার প্রতি, যে হিদায়াতের অনুসরণ করে। তারপর আমি আপনাকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ করুন, নিরাপদে থাকবেন। আল্লাহ্ আপনাকে দ্বিগুণ পুরষ্কার দান করবেন। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে সব প্রজার পাপই আপনার উপর বর্তাবে। হে আহলে কিতাব! এস সে কথার দিকে, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই; যেন আমরা আল্লাহ্ ব্যতীত আর কারো ইবাদত না করি, কোন কিছুকেই তাঁর শরীক না করি এবং আমাদের কেউ কাউকে আল্লাহ্ ব্যতীত রব রূপে গ্রহণ না করি। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে বলো, তোমরা সাক্ষী থাক, আমরা মুসলিম (সূরা আলে ইমরান