রোজার দিনে এসব কথা বলতে ইচ্ছা হয় না: ফখরুল

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

‘আজকে এই রোজার দিনে এসব কথা বলতে আমাদের ইচ্ছা হয় না। তারপরও বলতে হয়, আমরা যদি এই সরকারকে সরাতে না পারি, তাহলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে না।’

শনিবার (৯ এপ্রিল) এক ইফতার মাহফিলে নিজ দলের নেতাকর্মীদের গুম-খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

রাজধানীর ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল গুম-খুনের শিকার নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে গুমের শিকার নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কৃষক দল এই ইফতার পার্টির আয়োজন করেছে, সেজন্য কৃষক দলকে ধন্যবাদ জানাই। জাতিসংঘের যে চার্টার সেই চার্টারে এনফোর্স ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সকে বলা হয় চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধ। এই কাজটি আওয়ামী লীগ সরকার কয়েক বছর ধরে করেছে এবং এই মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তারা রাজনৈতিক নেতাকর্মী, গণতন্ত্রের জন্য যারা সংগ্রাম-লড়াই করছেন তাদের গুম করেছে, খুন করেছে, হত্যা করেছে।

তিনি বলেন, আজ আপনাদের সামনে বসে আছেন আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলীর স্ত্রী। ইলিয়াস আলী প্রায় ১০ বছর হলো আমাদের মাঝ থেকে নিখোঁজ হয়ে গেছেন। এখানে আরও অনেকে আছেন, ছোট ছোট বাচ্চা মেয়ে, তারা গত ৭/৮/১০ বছর তাদের বাবাকে খুঁজছে। এ রকম প্রায় ৬০০ পরিবার আছে যারা তাদের পুত্রকে, তাদের স্বামীকে অথবা তাদের পিতাকে খুঁজছে। কিন্তু তাদের পাচ্ছে না।

‘আজ এই রোজার দিনে এসব কথা বলতে আমাদের ইচ্ছা হয় না তারপরও বলতে হয়, আমরা যদি এই সরকারকে সরাতে না পারি, আওয়ামী লীগকে যদি সরাতে না পারি তাহলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে না’- যোগ করেন মির্জা ফখরুল।

রোজার দিনে এসব কথা বলতে ইচ্ছা হয় না: ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ সব অত্যাচার-নির্যাতন, হত্যা-গুম-খুন সবকিছু বন্ধ করতে হলে প্রথম যে বিষয়টি দরকার তা হচ্ছে, এই সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেটা দেশের মানুষকে আন্দোলন- গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে করতে হবে। আসুন আল্লাহর দরবারে দোয়া করি, এই যে শিশুরা তাদের পিতাকে খুঁজছে, এই যে স্ত্রীরা তাদের স্বামীকে খুঁজছেন, এই যে মায়েরা তাদের সন্তানকে খুঁজছেন, আল্লাহ তায়ালা যেন তাদের পরিবারের মাঝে ফিরিয়ে দেন। আর আল্লাহ যেন আমাদের শক্তি দেন, আমরা যেন এই সরকারকে সরিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি।

কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, নিতাই রায় চৌধুরী, আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, মশিউর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, রুহুল কুদ্দুস তালুদার দুলু, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ ২০ দলীয় জোট এবং কৃষক দল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গুম ও খুনের শিকার নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তাহসিনা রুশদির লুনা, আফরোজা ইসলাম আঁখি, মুনিয়া আখতার, সাফা, উম্মে হাবিবা মিম তাদের কষ্টের কথা তুলে ধরেন।

পরে কৃষক দলের পক্ষ থেকে গুম-খুনের শিকার ৫০ নেতাকর্মীর পরিবারের সদস্যদের ঈদ উপহার তুলে দেওয়া হয়।

 

সূত্রঃ জাগো নিউজ