বুধবার , ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ | ২০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া সাড়ে ১১ লাখ টাকা ফিরিয়ে দিলেন তিনি

Paris
ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯ ৮:২১ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

রাস্তায় পড়ে থাকা একটি শপিং ব্যাগ কুড়িয়ে পান এক ব্যক্তি। ব্যাগ খুলে দেখেন সেখানে কাড়িকাড়ি টাকা। নির্লোভী ও মহৎ হৃদয়ের অধিকারী এই ব্যক্তি সঙ্গেসঙ্গে টাকা ভর্তি ব্যাগ নিয়ে গেলেন নিউমার্কেট থানায় ওসির কাছে।

ওসি সেই ব্যাগে গচ্ছিত টাকা গুণে দেখেন সেখানে ৫০০ টাকার ২৩টি বান্ডিলে মোট সাড়ে ১১ লাখ টাকা রয়েছে!

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে এমন ঘটনাই ঘটেছে।

আর সেই নির্লোভী ও সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখানো মানুষটির নাম সেন্টু হোসেন।

নিউমার্কেট থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রায়েরবাজার হাইস্কুলের সামনে সন্ধ্যা ৭টার দিকে টাকা ভর্তি ব্যাগটি কুড়িয়ে পান সেন্টু। তিনি ভেতরে অনেকগুলো ৫০০ টাকার নোট দেখে দ্রুত নিউমার্কেট থানায় নিয়ে আসেন ও পুলিশদের অনুরোধ করেন যার টাকা তার কাছে দ্রুত পৌঁছে দিতে।

প্রথমে অবাক হলেও পরে নিউমার্কেট থানার ওসি এসএম কাইয়ুম টাকার প্রকৃত মালিকের সন্ধানে ডিএমপির সকল থানায় বেতার বার্তা দেন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন লোকজনদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেন।

পরে তারা তথ্য পান, একই দিনে হাজারীবাগ থানায় হারুন অর রশিদ নামে এক ব্যবসায়ী ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা হারিয়ে গেছে মর্মে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর সেই জিডি সূত্রে প্রমাণ সাপেক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রকৃত মালিক হারুন অর রশিদকে টাকাগুলো ফিরিয়ে দেয়া নিউমার্কেট থানা পুলিশ।

এতোগুলো টাকা কিভাবে রাস্তায় ফেলে গেলেন প্রশ্নে ব্যবসায়ী হারুন আর রশিদ জানিয়েছেন, ‘দোকান বন্ধ করে ওই দিনের লেনদেনের সাড়ে ১১ লাখ টাকা ব্যাগে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাৎ ব্যাগটি ছিড়ে রাস্তায় পড়ে যায়। বাড়ি গিয়ে দেখি মোটরসাইকেলে ব্যাগটি নেই। রাস্তায় অনেক খোঁজাখুজি করেছি। কিন্তু কোথাও খুঁজে পাইনি। ’

তিনি আরও বলেন, টাকাগুলো এভাবে ফিরে পাব ভাবিনি। আজ সেন্টুর মতো মানুষ আছে বলেই পুলিশের মাধ্যমে আমি ফিরে পেয়েছি। আমি হৃদয় থেকে সেন্টু হোসেন ও নিউমার্কেট থানা পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই।

সেন্টু হোসেনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নিউমার্কেট থানা পুলিশের সদস্যরাসহ ঢাকার বিভিন্ন থানার আরো অনেক পুলিশ।

এ ব্যাপারে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান বলেন, পুলিশ তো নিজেদের ডিউটি করেছে। কিন্তু সেন্টু হোসেন যা করেছে তা তার নৈতিকতা থেকে, বিবেকের বোধ থেকে। তার সততায় আমরা মুগ্ধ। তার মহানুভবতার পুরস্কার আর্থিক মুল্যমানে না হলেও আল্লাহর কাছে বড় কিছু পাবেন তিনি ।

নিউমার্কেট থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, প্রথমে আমরা অবাক হয়েছিলাম। পরে ভাবলাম চোর-ডাকাত ধরতে ধরতে আমরা ভুলেই গেছি যে, দেশে ভালো মানুষ অনেক আছেন। সেন্টু হোসেন তাদের একজন। তাদের জন্যই দেশ টিকে আছে।

অন্য আরেক কর্মকর্তা বলেন, সেন্টু হোসেন বিশেষ ধন্যবাদ যে তিনি প্রথম আস্থাটা পুলিশের ওপর দেখিয়েছেন।

এ কর্মকর্তা বলেন, ‘এখনো পুলিশে ভালো মানুষ আছে, সেটা এখানে প্রমাণিত হয়েছে। মানুষ যেন আমাদের পুলিশের ওপর আস্থা রাখেন।

এদিকে সততা ও লোভহীনতারা দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী সেন্টু হোসেন ধন্যবাদ তিনি প্রাপ্য নন বলে জানান।

তিনি বলেন, যে টাকার মালিক আমি নই তা আমার জন্য হালাল নয়। এটা আমি হজম করলে আখিরাতে আগুন হজম করতে হবে। জাহান্নামে যাওয়ার চেয়ে এ টাকা প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেয়াই অনেক শ্রেয়। আর এটা ছিল আমার নৈতিক দায়িত্ব। ওসি আমার পূর্ব পরিচিত হওয়ায় টাকাটা তার কাছে জমা দিয়েছি ও প্রকৃত মালিককে খোঁজ করে দিতে অনুরোধ জানাই। পুলিশ সেই কাজটি দ্রুতই করেছে। এজন্য ধন্যবাদ পুলিশেরই প্রাপ্য।

সর্বশেষ - জাতীয়