রাষ্ট্রীয় শোকে পতাকা তুলেনি খানসামার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান

মো. আজিজার রহমান, খানসামা প্রতিনিধি:

গাজাসহ ফিলিস্তিনের অন্যান্য স্থানে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর সাম্প্রতিক বর্বরোচিত হামলায় ফিলিস্তিনি নাগরিকদের নিহতদের জন্য গত শুক্রবার (২০ অক্টোবর) জুমার নামাজ শেষে বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয় এবং শনিবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে রাষ্ট্রপতির আদেশে একটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়,
বাংলাদেশের সকল সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। কিন্তু তা মানেনি দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

শনিবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত খানসামা উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বাসুলী উচ্চ বিদ্যালয়, কুমড়িয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, খামার বিষ্ণুগঞ্জ আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, বিষ্ণুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকেরহাট এল.এস.ডি খাদ্য গুদামসহ পাকেরহাট-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পতাকা তুলেনি।

এছাড়াও অনেক প্রতিষ্ঠান পতাকা তুললেও তা অর্ধনমিত রাখেনি। সেসব প্রতিষ্ঠান হল- কালির বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডাঙ্গাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উত্তর গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

জাতীয় পতাকা উত্তোলন বিষয়ে খামার বিষ্ণুগঞ্জ আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক নিতাই চন্দ্র সরকার মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি হিন্দু মানুষ পূজা নিয়ে একটু ব্যস্ত আছি। আমি আমার পিয়নকে বলেছি পতাকা টাঙানোর জন্য। সে তুলে নাই।’

এ বিষয়ে উত্তর গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারজানা শেলী বলেন, আমি সময়মতো অর্ধনমিত পতাকা উত্তোলন করেছি। হয়তবা বাচ্চারা পুরো পতাকা উত্তোলন করেছে। এতে আমি কি করব বলেন?

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এরশাদুল হক চৌধুরী সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি দুঃখজনক এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে এ কাজ করবে আমাদের জানা ছিল না। তারপরেও আমরা বিষয়টি দেখতেছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মঞ্জুরুল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ হলে তিনি বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। আমরা তাদেরকে মেইল ও মেসেজের মাধ্যমে জানিয়েছি। তারপরও এ ধরনের কাজ করবে, মানতে পারছি না। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তাজ উদ্দিন জানান, আমি অফিসিয়াল ফেসবুক আইডি থেকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন বিষয়ে একটি পোস্ট করি। এত প্রচারণার পরেও শিক্ষকরা এমন কাজ করবে, আমি ভাবতেও পারিনি। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক অফিসারদের বিষয়টা অবগত করেন।

ছবির ক্যাপশন: দিনাজপুরের খানসামার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পতাকা বিহীন দেখা যায়।