রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে শ্রমিক ধর্মঘট

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

চট্টগ্রাম ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে মঙ্গলবার শ্রমিকরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। ৯ দফা দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে তারা ভোর ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টা ধর্মঘট করে।

খুলনা : বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের ডাকে খুলনা-যশোর অঞ্চলের ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার, দৌলতপুর, খালিশপুর, ইস্টার্ন, আলিম এবং নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার জেজেআই ও কার্পেটিং মিলের শ্রমিকরা ধর্মঘট পালন করে। ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে শ্রমিক লীগ নেতারা প্রতিটি মিলের সিবিএ ও নন-সিবিএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং সাত দিনের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। শ্রমিক লীগের খুলনা-যশোর অঞ্চলের আহ্বায়ক মো. মুরাদ হোসেন জানান, মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে খুলনাঞ্চলের স্থায়ী-অস্থায়ী ৩৫ হাজার শ্রমিক এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। দাবি মেনে নেয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, দাবি মানা না হলে আরও কর্মসূচি দেব। এছাড়া ১৯ মার্চ আবারও ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট করা হবে এবং ২৪ মার্চ ঢাকায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি।

চট্টগ্রাম : আমিন জুট মিল শ্রমিকরা সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত নগরীর বায়েজিদ বোস্তামীর আতুরার ডিপো এলাকায় মিলের প্রধান ফটকের সামনে সমাবেশ করে। সমাবেশে পাটকল শ্রমিক লীগ নেতারা বলেন, অতিসত্বর ৯ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। বায়েজিদ থানার ওসি (তদন্ত) প্রিটন সরকার যুগান্তরকে বলেন, আমিন জুট মিল শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

ডেমরা : রাষ্ট্রায়ত্ত লতিফ বাওয়ানী ও করিম জুট মিলের শ্রমিকরা ভোর ৬টা থেকে উভয় মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘট পালন করে। বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন-সিবিএ ঐক্য পরিষদ যৌথভাবে এ ধর্মঘটের ডাক দেয়। বিকালে উভয় মিলের অভ্যন্তরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। লতিফ বাওয়ানী জুট মিলের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিবিএর কার্যকরী সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন তোতা প্রমুখ।

করিম জুট মিলের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিবিএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আয়েত আলী, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, সাবেক সিবিএর সভাপতি আবু তাহের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান হাওলাদার, মাছুম বিল্লাহ প্রমুখ। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে শ্রমিকরা সরকারের কাছে মজুরি কমিশন দ্রুত বাস্তবায়ন ও বকেয়া বেতন পরিশোধসহ ৯ দফা দাবি জানান।

শ্রমিক নেতারা বলেন, সাত সপ্তাহ ধরে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি দিচ্ছে না পাটকল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি মজুরি কমিশনসহ শ্রমিকদের ৯ দফা দাবিও কার্যকর করছে না কর্তৃপক্ষ। এ কর্মসূচির পরও তাদের দাবি পূরণে পদক্ষেপ নেয়া না হলে পরে ১৯ ও ২০ মার্চ ফের ধর্মঘট পালন করা হবে। অন্যথায় তার পরবর্তীতে ঢাকায় শ্রমিক নেতাদের বৈঠকে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

শ্রমিকদের দাবির মধ্যে রয়েছে- নিয়মিত সাপ্তাহিক মজুরি ও বেতন প্রদান, সরকার ঘোষিত জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫ বাস্তবায়ন, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ-গ্র্যাচুইটি ও মৃত শ্রমিকদের বীমার বকেয়া প্রদান, টার্মিনেশন ও বরখাস্ত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল, সেটআপ অনুযায়ী শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও স্থায়ী করা, পাট মৌসুমে পাট কেনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিলগুলোকে পর্যায়ক্রমে বিএমআরই করা।