রাবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ‘লাখ লাখ’ টাকার সিট বাণিজ্যের অভিযোগ

রাবি প্রতিনিধি:

করোনাকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রদের আবাসিক হলে ফাঁকা হওয়া এক হাজারেরও বেশি সিট বিক্রি করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। বুধবার (২৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর।

এছাড়া হলের সিট বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ছাত্রত্ব বাতিলসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। আগামী সাত দিনের মধ্যে তাদের এসব দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা।

তাদের দাবিগুলো হলো- বৈধ প্রক্রিয়ায় আবাসিকতা প্রদানসহ নিরাপদ পরিবেশে হলে অবস্থানের সু-ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। অনলাইনে প্রতিটি হলের সিটের তালিকা হালনাগাদ করতে হবে এবং নিয়ম মেনে হল প্রাধ্যক্ষদের স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। হলের সিট বাণিজ্যের সাথে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সমন্বয়ক আব্দুল মজিদ অন্তর লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে রাবির হলগুলোতে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা প্রকট আকার ধারণ করেছে। একজন শিক্ষার্থীর বৈধভাবে হলে সিট পাওয়ার ন্যায্য অধিকার হলেও প্রশাসন সেটা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী হলগুলোতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সিট বরাদ্দের নিয়ম থাকলেও অধিকাংশ হলেই তা মানা হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবগুলো হলেই শত শত সিট ফাঁকা থাকলেও শুধু শহীদ জিয়াউর রহমান হল এবং শহীদ শামসুজ্জোহা হলে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সিট বরাদ্দ দেওয়া হয়। অথচ বরাদ্দকৃত সিটের ১০-১৫ শতাংশের বেশি সিটে শিক্ষার্থীকে হলে ওঠাতে পারেনি হল প্রশাসন। করোনাকালীন ছাত্রদের ১১টি আবাসিক হলে প্রায় দেড় হাজার সিট ফাঁকা হয়। এক হাজারের অধিক সিটে হল ভেদে সিটপ্রতি ৫-১০ হাজার টাকার বিনিময়ে উঠিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সিটের বিনিময়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ’

আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বৈধ শিক্ষার্থীদের জোর করে হল থেকে বের করে দেওয়া, বৈধ আবাসিক শিক্ষার্থীদেরকে হলে উঠতে বাধা দেওয়া ও জোর করে মিছিলে ডাকাসহ নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চরম লজ্জার বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয়কে সত্যিকার বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের দাবিসমূহের দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।’

সম্মেলনে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ খান, রাবি শাখা নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সভাপতি মেহেদী হাসান মুন্না, সাধারণ সম্পাদক মীর আলহাজ হোসেন, শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলন, শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জি/আর