রাবি’র সংরক্ষিত এলাকায় অবাধে প্রবেশ!

নিজস্ব প্রতিবেদক,রাবি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর কোয়ার্টার এলাকাটি সংরক্ষিত হলেও সেখানে শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা অবাধে প্রবেশ করছে। কোয়ার্টারের প্রবেশমুখের রাস্তায় প্রহরী থাকলেও তাদের নিষেধ মানছে না কেউই। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে, কেউ আবার বেপরোয়া গতিতে বাইক নিয়ে প্রবেশ করছে কোয়ার্টারে। শুধু তাই নয়, অবাধে চলাফেরার কারণে কোয়ার্টার এলাকায় প্রায়ই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। এতে করে কোয়ার্টারে বসবাসকারী শিক্ষকদের অনিরাপত্তা বাড়ছে ও স্বাভাবিক চলাফেরা বিঘ্নিত হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের উত্তর ও পশ্চিম অংশ জুড়ে শিক্ষকদের কোয়ার্টার। কোয়ার্টারে প্রায় ৯০টির মত বাসা রয়েছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। কোয়ার্টারে প্রবেশের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল, শেখ রাসেল স্কুল মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণ ও রোকেয়া হলের পাশ দিয়ে রাস্তা রয়েছে। শেখ রাসেল স্কুলের মাঠ সংলগ্ন রাস্তাটিই প্রধান রাস্তা। রাস্তাটি লম্বায় ৫শ মিটারের চেয়ে কিছু বেশি। রাস্তার দুই মাথায়ই প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা লেখা সাইনবোর্ড থাকলেও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই কারো। শিক্ষার্থীরা নির্বিঘেœ সেখানে প্রবেশ করছে। দায়িত্বে থাকা প্রহরীরা নিষেধ করলেও কর্ণপাত করছে না কেউ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশে-পাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে আসছে। তারা কোয়ার্টারের রাস্তাগুলোতে অবাধে প্রবেশ করছে, জন উপস্থিতি কম থাকায় শিক্ষকদের লাগানো বিভিন্ন গাছ থেকে ফল চুরি করছে এবং সুযোগ পেলেই চুরি-ছিনতাইয়ের মত অপকর্ম ঘটাচ্ছে। চলতি বছরের মে মাসে এক সন্ধ্যায় কোয়ার্টারের ভেতর অবস্থিত একটি বাগানে লিচু পাড়তে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগতদের হাতাহাতি হয়। এতে এক শিক্ষার্থীর দুই হাতই ভেঙে যায়। গুরুতর আহত হয় আরেক শিক্ষার্থী।

এর কয়েকদিন আগে প্রহরীদের অগোচরে বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই ছাত্র-ছাত্রী কোয়ার্টারের একটি ফাঁকা বাসায় ঢুকে পড়ে। পরে প্রহরীরা তাদেরকে আটক করেন। ১২ই জানুয়ারি সন্ধ্যায় কোয়ার্টারের প্রধান রাস্তায় দুই কলেজ ছাত্রীর কাছ থেকে টাকা ও ফোন ছিনতাই করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।


গত সপ্তাহে বিভিন্ন সময়ে সরেজমিনে কোয়ার্টারে দেখা গেছে, নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা খেয়াল খুশিমত কোয়ার্টার এলাকায় প্রবেশ করছে। কেউ আবার বান্ধবী নিয়েও ঘুরছেন। কয়েকজনকে আবার বেপরোয়া গতি ও জোরে হর্ণ বাজিয়ে মোটরসাইকেল চালাতেও দেখা গেছে সেখানে।

এতে করে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন কোয়ার্টারে বসবাসকারী শিক্ষকরা। কোয়ার্টারে বসবাসকারী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, কোয়ার্টার এলাকায় যে যার ইচ্ছামত প্রবেশ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এতটাই ব্যস্ত যে তাদের এদিকে নজর দেওয়ার সময়ই নেই। কোয়ার্টারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দ্রুত কঠোর উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার।

শামীম নামের এক প্রহরী বলেন, কোয়ার্টার অনেক বড়। সে তুলনায় নিরাপত্তাকর্মী কম। জনবল বাড়লে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশি জোরদার হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, কোয়ার্টারে অবাধে চলাফেরার ব্যাপারে আমি শুনেছি। সেখানে প্রহরী নিযুক্ত করা আছে। কোয়ার্টারে সাধারণদের প্রবেশ আটকাতে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হবে।