রাবিতে ব্যতিক্রমধর্মী নববর্ষের শোভাযাত্রা 

রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নববর্ষ উদযাপনে ‘ব্যতিক্রমীধর্মী প্রতিবাদী’ মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল চারটি সংগঠন। সংগঠনগুলো হলো, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (বাসদ মার্কসবাদী)।
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালেয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বর থেকে বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে এক‌ই স্থানে এসে শেষ হয়।
মঙ্গল শোভাযাত্রায় সংগঠনের নেতারা ‘ফ্যাসিবাদের পতনে শুচি হোক ধরা’, ‘আমার ভাগের ইলিশ কই!’, ‘বৈশাখ আসে-যায়, ফসলের মূল্য নাই’, ‘প্রাণ প্রকৃতির আবাস, রামপাল রূপপুরে বিনাশ’, ‘মৃৎশিল্পের মূল্য নাই, বৈশাখেই শোভা পায়’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
শোভাযাত্রার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (বাসদ মার্কসবাদী) আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, ‘নববর্ষে আমরা সকল জরা ও গ্লানি থেকে মুক্ত হয়ে সব নতুন ভাবে শুরু করার কামনা করি। কিন্তু দেশে একদল লুটেরা ব্যবসায়ী শ্রেণি ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার করে দেশের অর্থনৈতিকে কঠিন অর্থনৈতিক সংকটে নিপতিত করেছে। বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রান্তিক মানুষের দু মুঠো ভাত জোটানোর জো নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের কারণে দেশে অনেকদিন ধরেই নাই নির্ভয়ে কথা বলার সুযোগ। এই ভয়ংকর পরিস্থিতিতে ভয় মুক্ত করে প্রতিবাদের সংস্কৃতি তৈরি করা আমাদের কর্তব্য। এরশাদ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে পহেলা বৈশাখের শোভাযাত্রা ছিল প্রতিবাদের হাতিয়ার। আমরা বিরাজমান ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধেও পহেলা বৈশাখের সেই প্রতিবাদী ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে, সে প্রচেষ্টা থেকেই আমাদের আয়োজন।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রায় সাধারণত বাঘসহ বিভিন্ন প্রাণির মুখোশ ব্যবহার করা হয়। এগুলো আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির অংশ। কিন্তু আমরা দেখছি যে সুন্দরবনে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করে বাঘের আবাসস্থল ধ্বংস করা হচ্ছে। সরকার নববর্ষ পালন করছে ঠিকই পাশাপাশি জীববৈচিত্র‍্য নষ্ট করছে। এটি নববর্ষ পালন করার লক্ষ্য নয়। আমাদের সংস্কৃতির লক্ষ্য হচ্ছে পাখিকে আবাস্থল ফিরিয়ে দেওয়া ও কৃষকের ন্যায্য মূল্য ফিরিয়ে দেওয়া।’ জীববৈচিত্র‍্য রক্ষার উদ্দেশ্যে তাঁরা আলাদাভাবে নববর্ষ পালন করছেন বলে তিনি জানান।