রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
নওগাঁর রাণীনগরে প্রায় ১২ বছর ধরে খেজুর গাছের সাথে পায়ে শিকল পরিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে মানসিক ভারসাম্যহীন আসলাম সাকিদার (৩৮) কে। যে বয়সে স্বাভাবিক ভাবে কাজকর্ম করে জীবন জীবিকা নির্বাহের কথা আসলামের অথচ টাকার অভাবে উপযুক্ত চিকিৎসা না হওয়ায় ঠিক সে বয়সে শিকল বন্দি জীবন কাটাতে হচ্ছে তাকে। আসলাম উপজেলার হরিশপুর গ্রামের মুনি সাকিদারের ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, আসলাম সাকিদার প্রায় ১৬-১৭ বছর ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন রোগী। বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করে কোন কাজ না হওয়ায় দিন দিন নানা ধরনের অত্যাচারের মাত্রা বেরে যায় আসলামের। অনেক সময় লোকজনকে মারপিট করতে থাকে। ফলে বড় ধরনের ক্ষতি এড়াতে খেজুর গাছের সাথে আসলামের পায়ে শিকল বন্দি করে রাখে তার পরিবারের লোকজন। দিনের বেলা খেজুর গাছের সাথে শিকল বন্দি হয়ে থাকে ও রাতে বাড়ির বাড়ান্দায় শিকল বন্দি হয়ে থাকে আসলামের জীবন। সেখানেই খাবার দেয়া হয়। এভাবেই চলছে প্রায় একযুগ।
যে বয়সে স্বাভাবিক ভাবে কাজকর্ম করে জীবন জীবিকা নির্বাহের কথা আসলামের অথচ টাকার অভাবে উপযুক্ত চিকিৎসা না হওয়ায় ঠিক সে বয়সে শিকল বন্দি জীবন কাটাতে হচ্ছে তাকে। প্রায় ১২ বছর ধরে খেজুর গাছের সাথে পায়ে শিকল বন্দি করে রেখেছে তার পরিবারের লোকজন। আর্থিক অনটোনের কারণে উপযুক্ত চিকিৎসা করাতে পারেছেনা তার দরিদ্র পরিবার। আসলামকে সুস্থ্য করতে সরকারের সহযোগীতা চেয়েছেন তার পরিবার। স্থানীয়রা বলছেন, অর্থের অভাবে তাকে উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে না পারায় বন্দি জীবন যাপন করতে হচ্ছে আসলামকে। তার চিকিৎসা করলেই সে আবার সাবাভিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে।
আসলামের ভাই মেছের আলী বলেন, তাকে সুস্থ্য করতে পারিবারিক ভাবে আমরা সামর্থ অনুযায়ী বিভিন্ন ডাক্তার-কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা করেছি, কিন্তু তাকে ভালো করতে পারিনি। তাকে উন্নত চিকিৎসা করালে ভাল হয়ে যাবে কিন্তু সে সার্মথ না থাকায় চিকিৎসা করাতে পারছিনা। নিরুপাই হয়ে চোখের সামনেই প্রতিনিয়ত আসলামের করুন জীবন যাপন ও বন্দিদশা দেখতে হচ্ছে। আসলামের চিবকিৎসার জন্য সরকারী সহযোগী চেয়েছেন তারা।
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, শিকল বন্দি আসলামের দ্রুত চিকিৎসা ও শিকল বন্দি থেকে মুক্ত করার ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।