রাণীনগরে কৃষি প্রকল্পের উপকরণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

রাণীনগর প্রতিনিধি :
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় কৃষকদের প্রদান করা কৃষি প্রকল্পের উপকরণ বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা: ফারহানা নাজনীনের বিরুদ্ধে। তিনি রাণীনগর উপজেলায় যোগদানের পর থেকে কৃষি বিভিন্ন প্রকল্পের উপকরণ সঠিকভাবে বিতরণ করছেন না বলে অভিযোগ কৃষকদের। এতে করে চড়ম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। ফলে কৃষি প্রকল্প সঠিকভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারের গৃহিত লক্ষ্য শতভাগ পূরণ হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, কৃষকদের প্রধান ফসল চাষের পাশাপাশি তেল ফসলের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে চলতি আমন মৌসুমে স্বল্প জীবনের তেল ফসল চাষে রাণীনগর উপজেলায় ৪৫টি প্রদর্শনীর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৪৫ জন কৃষক বিনামূল্যে সার, বীজ ও অন্যান্য উপকরণ পাবেন। প্রকল্পের বরাদ্দ অনুসারে একটি প্রদর্শনীর জন্য একজন কৃষক ২৫ কেজি ইউরিয়া, ২০ কেজি ডিএপি, ১৫ কেজি পটাশ ও জিপসাম এবং ১ কেজি দস্তা সার পাবেন। অথচ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার প্রতিটি প্রদর্শনীর বরাদ্দপ্রাপ্ত অধিকাংশ কৃষককে বরাদ্দকৃত সারের অর্ধেক সার দিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

অভিযোগ উঠেছে, প্রকল্পের বরাদ্দ অনুসারে সঠিকভাবে সার ও অন্যান্য উপকরণ বিতরণ করেননি কৃষি কর্মকর্তা। উপজেলায় প্রদর্শনী বরাদ্দপ্রাপ্ত কৃষকদের মাঝে ১০ কেজি ইউরিয়া, ৭ কেজি ডিএপি, ৬ কেজি পটাশ, সাড়ে ৮ কেজি জিপসাম সার দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ অনুসারে উপকরণ না দেওয়ায় এমন বিভাজনে কৃষকরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রদর্শনীর জন্য খাতায় তালিকাভুক্ত অনেক কৃষকের দেওয়া মুঠোফোনে ফোন দিলে নামের সঙ্গে মিল পাওয়া গেলেও তাদের ঠিকানা সঠিক পাওয়া যায়নি। আবার অনেক কৃষক তালিকাভুক্ত হলেও বরাদ্দে নাম নেই, আবার অনেকেই জানেন না যে প্রদর্শনীর জন্য তাকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ, কৃষি কর্মকর্তা নিজের ইচ্ছে মাফিক নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর দিয়ে দায়সারানো তালিকা তৈরি করে প্রকল্পের সারসহ অন্যান্য উপকরণ উত্তোলন করে নানা কর্মকান্ড চালিয়ে আসছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রদর্শনীর বরাদ্দ পাওয়া কয়েকজন কৃষক জানান, তারা তেল ফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনীর জন্য ১০ কেজি ইউরিয়া, ৭ কেজি ডিএপি, ৬ কেজি পটাশ ও সাড়ে ৮ কেজি জিপসাম সার পেয়েছেন। আবার অনেকে কৃষকই জানেন না যে তার নামে প্রদর্শনীর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি প্রণোদনায় আগে কৃষকরা যে পরিমাণ উপকরণ পেয়েছে বর্তমান কৃষি কর্মকর্তা উপজেলায় যোগদানের পর সেই পরিমাণগুলো কমে গেছে বলেও জানান তারা।

এ বিষয়ে বক্তব্য চাইলে রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা: ফারহানা নাজনীন মুঠোফোনে বলেন, কি জানতে চাচ্ছেন অফিসে এসে কথা বলেন। অফিস বন্ধের দিনে ফোন দিবেন না বলে বক্তব্য না দিয়েই তিনি সংযোগটি কেটে দেন।

এ ব্যাপারে নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রকল্পের বরাদ্দ অনুসারে কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণগুলো বিতরণ করতে হবে। অর্ধেক পরিমাণে কৃষি উপকরণ বিতরণ করার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।