রাণীনগরে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে প্রকাশ্যে সরকারি ভিডব্লিউবি’র চাল বেচাকেনা!

রাণীনগর প্রতিনিধি :
নওগাঁর রাণীনগরে ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ সরকারি ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) চল বেচাকেনার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদে অসংখ্য উপকারভোগীদের পাওয়া চাল পরিষদের সামনে প্রকাশ্যে এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রির চিত্র ধরা পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সরকারি এসব চাল প্রকাশ্যে উপকারভোগী ও ব্যবসায়ী বেচা-কেনা করলেও রহস্যজনক কারণে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না।

ফলে দিন দিন ব্যবসায়ী ওই চক্রটি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আর সরকারি চাল বেচা-কেনা করে ওই চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা।

জানা গেছে, উপজেলার খট্টেশ^র রাণীনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) চালপ্রাপ্ত উপকারভোগী রয়েছেন ৩০২ জন দুঃস্থ নারী। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এ কর্মসূচির এপ্রিল মাসের চাল মঙ্গলবার উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, কার্ডের মাধ্যমে ভিডব্লিউবি’র চাল তুলছেন উপকারভোগী অসংখ্য নারীরা। তারা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরকারিভাবে পাওয়া ৩০ কেজি চালের বস্তা নিয়ে চলে যাচ্ছেন। এ সময় পরিষদের মূল গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় সদরের কালাম নামে প্রভাবশালী এক চাল ব্যবসায়ীকে। তিনি উপকারভোগীদের কাছ থেকে এক হাজার ৪০ টাকা বস্তা হিসাবে প্রায় ২০ থেকে ৩০ বস্তা সরকারি চাল কিনছেন বলে একাধিক উপকারভোগীর সাথে কথা বলে জানা গেছে। আর সরকারি চাল কেনা মাত্রই ব্যবসায়ী চক্রের লোকজন দিয়ে চালগুলো নিয়ে যায় তার নির্দিষ্ট জায়গায়।

উপকারভোগী এক নারী সরকারি ৩০ কেজি (এক বস্তা) চাল পেয়ে ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করার সময় তার নাম জানতে চাইলে সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে সেখান থেকে দ্রুত চলে যান। এদিকে সরকারি ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ চাল কেনার বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী কালাম বলেন, অন্য ব্যবসায়ী চাল কিনেছে, তাই আমিও কিনেছি।

রাণীনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দনা শারমিন রুমকি বলেন, ব্যবসায়ীরা চাল কিনছে জানতে পেরে আমি প্রশাসনের লোকজনকে ফোন দেওয়ার আগেই তারা পালিয়ে গেছে। আর পরিষদ থেকে যে সকল উপকারভোগী সরকারি চাল পেয়ে থাকেন তাদের চাল বিক্রি করতে নিষেধ করা আছে।

এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে উপকারভোগীর পাওয়া চাল ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ। ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে সকল উপকারভোগীদের চাল বিক্রি করতে নিষেধ করা হয়েছে। এরপরেও তারা যদি সরকারি চাল বিক্রি করেত থাকেন তাহলে তাদের তালিকা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সদর ইউনিয়ন পরিষদে ভিডব্লিউবি চাল বেচা-কেনার বিষয়ে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।