রাজশাহী বিভাগীয় ট্রাক মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভা

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী বিভাগীয় ট্রাক মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত পণ্যপরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের ১৫ দফা দাবি আদায়ে ৭২ ঘন্টার কর্মবিরতি পালনের লক্ষ্যে রাজশাহী বিভাগীয় ট্রাক মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নগরীর কাশিয়াডাঙ্গায় অবস্থিত রাজশাহী ট্রাক মালিক গ্রুপ কার্যালয়ে দুপুরে এই প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বক্তারা জানান, পণ্যপরিবহন মালিক শ্রমিকরা সব সময় নিষ্পেষিত। পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারা মালিক-শ্রমিকরা প্রতিনিয়তই হয়রানির শিকার হচ্ছে। তাদের চাঁদাবাজি সীমা ছাড়িয়েছে। এটা আর মেনে নেয়া হবে না। পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার ১৫ দফা দাবির বাস্তবায়নে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর ভোর ৬ টা থেকে থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর ৬ টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করা হবে। এই কর্মবিরতিকে সামনে রেখে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে সকল পণ্যপরিবহণ শ্রমিকদের মাঠে থাকার আহবান জানান বক্তারা।

ট্রাক মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি শামসুর রহমান খান মানিকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান-ট্রাক-প্রাইমুভার পণ্যপরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুকবুল আহমদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি ওয়াজি উল্লাহ। সঞ্চালনা করেন, রাজশাহী জেলা ট্রাক মালিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাবলুল ইসলাম। এই প্রতিনিধি সভায় রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত জেলাগুলোর মালিক-শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।

দাবিগুলো হলো- মোটরযান শ্রমিকদের উপর আরোপিত ‘অগ্রিম আয়কর’ এর উপর বর্ধিত আয়কর অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। যেসব চালক ভারী যানবাহন চালাচ্ছেন তাদের সকলকে সহজশর্তে সরকারি ফি এর বিনিময়ে ভারী ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন করতে হবে। পণ্যপরিবহণ খাতের সরকার নিবন্ধিত শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর গঠনতন্ত্রসম্মত কল্যাণ তহবিলের চাঁদা সংগ্রহের উপর কোন বিধিনিষেধ আরোপ করা চলবে না। চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার শ্রমিক ইউনিয়ন কর্তৃক চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সমীপে পেশ করা প্রস্তাব ও সুপারিশগুলো অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। সকল শ্রেণির মোটরযানের নিয়োজিত সড়ক পরিবহন শ্রমিকদেরকে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মত রেশনিং সুবিধার আওতায় আনতে হবে।

চট্টগ্রামে অবস্থিত ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মনোনিত প্রতিনিধি এবং সকল ড্রাইভার ও সহযোগীকে চট্টগ্রাম বন্দরে হয়রানিমুক্ত প্রবেশের সুবিধার্থে বাৎসরিক নবায়নযোগ্য বায়োমেট্রিক স্মার্ট কার্ড প্রদান করতে হবে। গাড়ির কাগজপত্র চেকিং এর জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করতে হবে। পণ্যবাহী গাড়ি যত্রতত্র দাঁড় করানো যাবে না। পুলিশের ঘুষ বাণিজ্যসহ সকল প্রকার হয়রানি ও নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। প্রতি পঞ্চাশ কিলোমিটার পর পর পণ্য পরিবহন শ্রমিকদের জন্য দেশের সড়ক-মহাসড়কের নিরাপদ দূরত্বে ও প্রাইম মুভার ট্রেইলার টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে।

সড়ক দুর্ঘটনায় অথবা চোর ডাকাতের হাতে অথবা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা অথবা তাদের হেফাজতে মৃত্যু বরণকারী সড়ক পরিবহন শ্রমিক পরিবারকে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে এককালীন নগদ ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

আহত শ্রমিকের পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা ভাতা প্রদান করতে হবে। সড়ক পরিবহন সংক্রান্ত যাবতীয় সরকারি সংস্থা ও ফোরামে বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান-ট্রাক- প্রাইমমুভার পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ট্যাংকলরি শ্রমিক ফেডারেশন এর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

স/আর