রাজশাহী বিএনপির নতুন কমিটি নিয়ে হতাশা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

আবারও ওলটপালট হয়ে গেল রাজশাহী মহানগর বিএনপি। বৃহস্পতিবার মহানগর বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্র থেকে ৯ সদস্যের নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ খবর ওইদিন রাতে রাজশাহীতে পৌঁছলে দলীয় নেতাকর্মীদের অনেকেই হতাশা ব্যক্ত করেন। তবে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে রাজি হননি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী মহানগর বিএনপির কমিটিতে অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈসাকে আহ্বায়ক এবং নজরুল হুদাকে সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক করা হয়েছে। যুগ্ম-আহ্বায়ক করা হয়েছে দেলোয়ার হোসেন, ওয়ালিউল হক রানা, আসলাম সরকার, শাফিকুল ইসলাম শাফিক, বজলুর রহমান মন্টু ও জয়নাল আবেদিন শিবলীকে। মামুনুর রশিদকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।

এর মাধ্যমে ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সভাপতি ও শফিকুল হক মিলনকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিলুপ্ত করা হলো।

দলীয় নেতাকর্মীদের অনেকেই নাম প্রকাশ না করে যুগান্তরকে জানান, নতুন আহ্বায়ক কমিটির ফলে রাজশাহীতে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনসহ সরকারবিরোধী নতুন আন্দোলনে ভাটা পড়বে। বিএনপি গঠনের পর রাজশাহীতে এমন দুর্বল ও নিুমানের কমিটি আর আসেনি। এমন ভুলের খেসারত দিতে হবে দলের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদেরই। সংগঠন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তারা জানান, এই আহ্বায়ক কমিটি গঠনের আগে কাউকে কিছু জানানোও হয়নি। আকস্মিকভাবেই দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভির স্বাক্ষরে দলীয় প্যাডে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

এ বিষয়ে বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ এবং পুনর্বাসনবিষয়ক সহ-সম্পাদক শফিকুল হক মিলন শুক্রবার সকালে যুগান্তরকে বলেন, ওয়ার্ড ও থানা কমিটিগুলো পুনর্গঠন করে সম্মেলনের মাধ্যমে মহানগর বিএনপির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্যই নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে শুনেছি। তারা চাইলে বা না চাইলেও আমরা আহ্বায়ক কমিটিকে সাংগঠনিক সব কাজে সহযোগিতা করব। নতুন আহ্বায়ক কমিটি কী করতে পারবেন-সেটা অবশ্য সময়ই বলে দেবে। এখনই এ নিয়ে মন্তব্য করার কিছু নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহী মহানগরের একটি ওয়ার্ড কমিটির এক নেতা বলেন, যাদেরকে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে, দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের বিশেষ যোগাযোগ নেই। ফলে নেতাকর্মীদের ওপর তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণও নেই। তাছাড়া অনেকেই দলের দুঃসময়ে দূরে দূরে থেকেছেন। আন্দোলন সংগ্রামে তাদের অংশগ্রহণও উল্লেখ করার মতো নয়। একজন কেন্দ্রীয় নেতা কারও কোনো মতামত ছাড়াই শুধু তার নিজের লোক বিবেচনায় এমন একটি কমিটি নেতাকর্মীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন।

রাজশাহী জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান মার্কনি বলেন, রাজশাহীতে এতো যোগ্য নেতা থাকতে কেন্দ্রের চোখে তারা কেন পড়েন না, এ প্রশ্নটি এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। বারবার একই ঘটনা ঘটছে। নেতাকর্মীদের পছন্দের ব্যক্তিকেই নেতৃত্ব দেওয়া উচিত। বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। জাতীয়তাবাদী আদর্শের এ দলের রাজশাহীতে লাখো ত্যাগী নেতাকর্মী রয়েছেন।

সংগঠন গোছাতে কী পদক্ষেপ নেবেন, জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইসা যুগান্তরকে বলেন, ওয়ার্ড ও থানা কমিটিগুলোকে পুনর্গঠন করে মহানগর বিএনপিতে একটি শক্তিশালী নেতৃত্ব উপহার দেওয়াই হবে প্রথম লক্ষ্য। রাজশাহীতে দলের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে কাজ করব। এ ছাড়া দলের চেয়ারপারসনের মুক্তি আন্দোলনকে আরও বেগবান করা।

সূত্র: যুগান্তর