রাজশাহী চিড়িয়াখানায় সঙ্গী পেলো নারী ঘড়িয়ালটি

নিজস্ব প্রতিবেদক:
অবশেষে সঙ্গী পেয়েছে রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় থাকা নারী ঘড়িয়ালের। ফলে অনেক দিন পর তার একাকীত্ব কাটলো।
বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী ঘড়িয়ালের জোড়া তৈরি করে বংশবৃদ্ধির উদ্যোগের অংশ হিসেবে রোববার  দুপুরে রাজশাহী চিড়িয়াখানায় অবমুক্ত করা হয়েছে একটি পুরুষ ঘড়িয়াল। রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় আগে থেকেই ছিল একটি নারী ঘড়িয়াল। এর সঙ্গী হিসেবে সাথে পুরুষটি ছাড়া হলো।
ফলে আগামী বছর নাগাদ বিপন্ন এই প্রাণীটি বংশ বিস্তার করতে পারবে বলে মনে করেন চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. ফরহাদ উদ্দিন।
এছাড়াও আজ চিড়িয়াখানায় আনা হয়েছে চারটি রঙ্গিন ময়ুর। সেগুলো নির্ধারিত খাঁচায় দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে আজ।
রাজশাহী শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. ফরহাদ উদ্দিন জানান, শনিবার ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে একটি পুরুষ ঘড়িয়াল রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ট্রাকে করে বিশেষ ব্যবস্থায় রাজশাহী চিড়িয়াখানায় আনা হয়। এরপর রোববার দুপুরে নারী ঘড়িয়ালটির সাথে অবমুক্ত করা হয়।
ডা. ফারহাদ জানান, ঘড়িয়াল বাংলাদেশে একটি বিপন্ন প্রাণী। দিনে দিনে এদের সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমে গেছে। বর্তমান সময়ে দেশে ঘড়িয়াল দেখা ভার।
রাজশাহী চিড়িয়াখানায় দুইটি স্ত্রী ঘড়িয়াল ছিল। যাদের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছর হবে। সেই সময় পদ্মা নদীতে মাছ মারতে গিয়ে জেলেদের জালে আটকা পড়েছিলো ঘড়িয়ালগুলো। জেলেরা সেগুলো ধরে চিড়িয়াখানায় দিয়েছিলো। অপরদিকে ঢাকা চিড়িয়াখানায় যে কয়টি ঘড়িয়াল আছে সবগুলোই পুরুষ। সে কারণে প্রজনন করানো সম্ভব হচ্ছিলো না।
তাই দুই চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ অতি সম্প্রতি বিপন্ন প্রাণীটির প্রজনন বৃদ্ধি করতে এমন উদ্যোগ নিয়েছিল। এতে বংশ বিস্তার করতে পারবে প্রাণীটি। এজন্যই ঢাকা থেকে রাজশাহীতে একটি পুরুষ ও রাজশাহী থেকে ঢাকায় একটি নারি ঘড়িয়াল স্থানান্তর করা হয়েছে। রাজশাহীর নারী ঘড়িয়ালটি ঢাকা চিড়িয়াখানায় দেওয়া হয় ১১ আগস্ট।
ডা. ফারহাদ বলেন, সাধারণত ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ঘড়িয়ালদের প্রজনন মৌসুম। একবারে প্রজননে ৩৫ থেকে ৪০টি পর্যন্ত ডিম পাড়ে তারা। সাধারণত মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে তারা ডিম পাড়ে। ডিম পড়ার পরে তারা গর্ত খুড়ে ডিম ঢেকে রাখে।
সেই ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হতে সময় নেয় ৭০ থেকে ৯০ দিন। রাজশাহী চিড়িয়াখানার যে পুকুরে ঘড়িয়াল থাকে সেখানে ডিম পাড়ার পরে গর্ত করে রাখার মতো তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। আপাতত পুকুরে কিছুটা বালি ফেলা হয়েছে। তবে বর্ষা শেষ হয়ে গেলে পদ্মা নদী থেকে মোট বালি পুকুরটির একাংশে ফেলা হবে। যেখানে ঘড়িয়াল ডিম পাড়তে পারবে।
ডা. ফরহাদ আরো জানান, ঘড়িয়াল বিনিময়ের পাশাপাশি ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে ৪টি রঙিন ময়ূরও নিয়ে আসা হয়েছে। এদের দুইটি পুরুষ ও দুইটি নারী। ময়ূরগুলোর এখানে প্রজনন করে বংশ বিস্তার করানো হবে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাজশাহী শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চিড়িয়াখানা ও কেন্দ্রীয় উদ্যানের একটি মেয়ে ঘোড়িয়ালকে ঢাকা চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়। প্রায় ২০ বছর বয়স্ক এই ঘোড়িয়ালটিকে ঢাকা চিড়িয়াখানায় দেওয়া হবে। আর ঢাকা চিড়িয়াখানার একটি পুরুষ ঘোড়িয়াল রাজশাহী চিড়িয়া খানায় আজ রোববার অনা হয়। রাজশাহী চিড়িয়াখানার দুটি ঘোড়িয়ালই মেয়ে ছিল তাই এই অদল-বদল করা হয় বলে সিল্কসিটি নিউজকে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
স/অ
https://silkcitynews.com/127780