রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সম্পাদককে স্বপদে বহালের ভুয়া বিজ্ঞপ্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
সমালোচনার প্রেক্ষিতে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বহিস্কৃত এক নেতার স্বপদে ফিরে আসা নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয় রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদকে সংগঠনটির কেন্দ্র থেকে স্বপদে বহাল করা হয়েছে। তবে সমালোচিত এই নেতার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার বিষয়ে কোন প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এদিকে ছাত্রলীগের ওয়েব সাইটেও তার স্বপদে বহালের কোন প্রেস বিজ্ঞপ্তি নেই।

সূত্র মতে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে প্রায় দুই মাস আগে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইমুল হাসান নাঈম কে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। বিষয়টি তদন্তে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সম্প্রতি এই কমিটি তাদের প্রতিবেদন কেন্দ্রে প্রেরণ করেছে। এরই মাঝে গত শনিবার ২৩ জুন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি এসআর সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকিরের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি স্থানীয় দৈনিকের কাছে দেয়া হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক জরুরি সিদ্ধান্তে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইমুল হাসান নাঈম এর বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের পাশাপাশি তাকে স্বপদে পুর্ণবহাল করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানান হয়, তদন্ত কমিটির দেয়া প্রতিবেদন অনুসারে নাইমুল হাসান নাঈম সম্পূর্ণ নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে স্বপদে বহাল করা হয়েছে।

তবে এই প্রেস বিজ্ঞপ্তি সম্পূর্ণ ভুয়া বলে বিষয়টি নিয়ে সংগঠনটির স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নেতা কর্মীরা জানায়, কেন্দ্রীয় নেতাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করার এমন ধৃষ্টতা যেই দেখাক না কেন তাকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া উচিত।


এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি নুর মো: সিয়াম বলেন, আমরা তাকে স্বপদে বহালের জন্য রাজশাহী কলেজে আন্দোলন করেছি। তবে এমন কোন আদেশ হয়েছে কি না তা মহানগর ছাত্রলীগের নেতারাই ভালো বলতে পারবেন।

রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষ সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, নাঈমকে স্বপদে বহাল রাখার জন্য আমি এবং সাধারণ সম্পাদক যৌথভাবে সুপারিশ করেছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে তাকে বহালের আদেশ দিয়ে কোন চিঠি আসেনি। এমন কোন আদেশ আসলে আমরা সবাইকে জানিয়ে দিব।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয় পত্রিকায় এমন সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেখে কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারাও জানিয়েছে এমন কোন চিঠি ইসু করা হয়নাই।

এদিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার সাহাযাদার সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি প্রথমে প্রেস বিজ্ঞপ্তির তারিখ জানতে চান। এসময় তাকে ২৩জনের প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পড়ে শোনা হলে তিনি স্পষ্ট জানান এমন কোন টিঠি বা প্রেস বিজ্ঞপ্তি ঐ দিন প্রকাশ করা হয় নাই।

তবে সমালোচিত নাইমুল হাসান নাঈম বলেন, স্থানীয় তদন্ত কমিটির দেয়া প্রতিবেদন অনুসারে উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে ও রাজনৈতিক ভাবে ঘায়েল করার জন্য আমার নাম ব্যবহার করা হয়েছিল। যা স্থানীয় তদন্ত কমিটি তদন্ত করে জানিয়েছেন ও একই সাথে কেন্দ্রের কাছে আমার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন। তবে এ চিঠির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
স/শ