রাজশাহী অঞ্চলে খুরমা খেজুরের চাষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:

নাচোলে চাষ হচ্ছে ১১ জাতের সুস্বাদু ফল খেজুর। উপজেলার ভেরেন্ডি এলাকার বৃদ্ধ মোকশেদ আলী ও তার ছেলে ওবাইদুল ইসলাম রুবেল এমন উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের বাবা-ছেলের কখনই সৌদি আরব যাওয়ার সুযোগ হয়নি। লোক মুখে আর টেলিভিশনে সৌদিয়ান খেজুর চাষের কথা শুনে ইচ্ছে জাগে বাংলাদেশে সৌদি খেজুর চাষ করবেন। দু’বছর পুর্বে বপনের পর তাদের সাধনা বাস্তবায়িত হয়। তারা ৯০ শতাংশ জমিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে গড়ে তোলেন সৌদিয়ান খেজুর বাগান। তাদের বাগানে মরিয়ম, আজোয়া, ক্ষীর, সুলতান, খালাসসহ এগারো জাতের খেজুর রয়েছে। প্রায় দু’বছওে চাষাবাদ করে খেজুরও পেয়েছেন তিনি বাগান থেকে। সৌদিয়ার সব চেয়ে দামী খেজুর আজোয়া।

মোকশেদ আলী আফগানস্থান প্রবাসী প্রকৌশলী এক আত্মীয়’র সাথে যোগাযোগ করেন। তিনি সৌদি আরব থেকে নাচোলে খেজুরের বীজ পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। মোকসেদ আলী ও তার একমাত্র ছেলে ওবাইদুল ইসলাম রুবেলকে নিয়ে গড়ে তোলেন সৌদিয়ান খেজুর বাগান ও নার্সারী।

সৌদিয়ান খেজুরের গাছের বাগান করার সময় প্রথম দফায় মোকশেদ আলী ৮০০ বিভিন্ন উন্নত জাতের খেজুর বীজ নিয়ে আসেন। একেকটি বীজের জন্য খরচ পড়ে প্রায় ২৮৮ টাকা। সেগুলো চারা করে তার মধ্যে ৪২৭টি খেজুর গাছ তিনি ১৮ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে রোপণ করেন নাচোল ভেরেন্ডি এলাকায় তার বাড়ির পাশে। বাকিগুলো চারা হিসেবে বিক্রি করেন। তার একেকটি চারার দাম ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। দ্বিতীয় দফায়ও আরো ৮০০ খেজুর বীজ নিয়ে আসা হয়। যেগুলো চারা করে বিক্রি করছেন। এ পর্যন্ত মোকশেদ আলী ও তার ছেলে রুবেল ৭০০ খেজুরের চারা বিক্রি করেছেন। তবে বীজ ক্রয়, চারা তৈরি, রোপণ এবং এ পর্যন্ত পরিচর্যা বাবদ ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে তাদের বাবা ও ছেলেকে।

রুবেল জানান, একটি গাছ ৫০ থেকে ১৫০ বছর পর্যন্ত খেজুর ফলন হয়। প্রতি মৌসুমে একটি পরিপূর্ণ খেজুর গাছ ২৫০ থেকে ৩০০ কেজি পযর্ন্ত ফল দেয়।

সৌদিয়ান খেজুর চাষী মোকশেদ আলী জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলাসহ সিলেট, নেত্রকোনা, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, শরীয়তপুর, নওগাঁ ও রাজশাহীতেও তার চারা বিক্রি হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার এক চাষী ৬২০টি চারার নেয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। আগামীতে আরও আড়াই বিঘা জমিতে খেজুর বাগান করার ইচ্ছে রয়েছে তার।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারের জার্মপন্টাজম কর্মকর্তা (কৃষি কর্মকর্তা) জহুরুল ইসলাম জানান, বরেন্দ্র ভূমিতে খেজুর চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। মরুভুমির খেজুর গাছে পানি কম প্রয়োজন হয়। তাছাড়া বরেন্দ্রর আবহাওয়া খেজুর চাষের উপযোগী। তিনি জানান, হর্টিকালচার সেন্টারেও ২৫/৩০টি খেজুর গাছ রোপন হয়েছে। তবে তাদের চারা টিস্যু কালচারের। আগামী বছরই খেজুর উৎপাদন হবে আশাবাদি তিনি।